কুমিল্লায় গর্ভবতীর পেটে গজ রেখেই সেলাই, বের করা হলো ৫ মাস পর!
কুমিল্লার দেবিদ্বারে একটি বেসরকারি হাসপাতালে সিজারিয়ান অপারেশনের পাঁচ মাস পর এক নারীর পেট থেকে বের করা হলো রক্ত মোছার গজ (মপ)।
উপজেলার বড় আলমপুরে আল ইসলাম হাসপাতাল এন্ড ডায়াগনষ্টিক সেন্টারে অস্ত্রোপচারের পরে এই গজ বের না করেই পেট সেলাই করে দেওয়া হয় রোগীর।
দীর্ঘ সময়ে গজটি ওই নারীর পেটের নাড়ি ছিদ্র করে ঢুকে যায় এবং তাতে পচন ধরে তাঁর জীবন সংকটাপন্ন হয়ে পড়ে। পরে গত মঙ্গলবার (৬ এপ্রিল) সন্ধ্যায় কুমিল্লা ময়নামতি ক্যান্টমেন্ট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে ডা. কর্নেল আবু দাউদ মো. শরীফুল ইসলাম নেতৃত্বে একদল চিকিৎসক অপারেশন করে আস্ত গজ (ব্যান্ডেজ) বের করেন। এ ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তোলপাড় চলছে।
ময়নামতি ক্যান্টমেন্ট জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. কর্নেল আবু দাউদ মো. শরীফুল ইসলাম বলেন, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় অপারেশনের মাধ্যমে পেট থেকে রক্তাক্ত গজ বের করা হয়। বর্তমানে রোগী সংকটাপন্ন রয়েছে। ৪/৫দিন গেলে অবস্থা বুঝা যাবে।
জানা গেছে, ভুক্তভোগী ওই প্রসূতির নাম মোসা. শারমিন আক্তার (২৫)। তিনি মুরাদনগর উপজেলার মোগসাইর গ্রামের মো. রাসেল মিয়ার স্ত্রী। শারমিনের আগেও একটি তিন বছরের মেয়ে সন্তান রয়েছে যা সিজারে প্রসব করেছেন। দ্বিতীয় সন্তান প্রসবের সময় সিজার করা হয় তার পেটে।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত গাইনি চিকিৎসক ডা. রোজিনার সাথে মোবাইল ফোনে সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
ভুক্তভোগী শারমিনের বড় ভাই রহুল আমিন জানান, পাঁচ মাস আগে প্রসব যন্ত্রণা নিয়ে দেবিদ্বারের আল ইসলাম হাসপাতালে এন্ড ডায়গনিষ্টক সেন্টারে ভর্তি করা হয়। সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক রোজিনা আক্তার তাকে দেখে জরুরী সিজার করতে পরামর্শ দেন। ডাক্তারের কথা শুনে সিজারে রাজী হলে ওইদিনই ও ডাক্তার রোজিনা আক্তার ও ডা. শামীমা আক্তার লিন্টা সিজার করেন। এতে একটি ছেলে সন্তান হয় শারমিনেন। এর দুইদিন পর থেকে শারমিনের পেটে ব্যাথা হতে থাকে। ৭দিন পর হাসপাতালে থেকে বাড়ি ফেরার পর অপারেশনের ক্ষত থেকে পুঁজ বের হতে থাকে। পরে তাকে কুমিল্লাসহ ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা এন্টিবায়টিক খেতে দেন।
এ বিষয়ে আল ইসলাম হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নিয়াজ মোহাম্মদ হোসেন (এনাম) বলেন, ঘটনাটি পাঁচ মাস আগের। এরপর রোগীর স্বজনরা আমাদের সাথে আর যোগাযোগ করেনি। পরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জানতে পারি, এ ব্যাপারে আমরা অনুতপ্ত।
পেটে গজ রেখেই সেলাই বিষয়ে, কুমিল্লা সিভিল সার্জন ডা. মীর মোবারক হোসাইন বলেন, সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক ও কোন হাসপাতালে ঘটনাটি ঘটেছে তা উল্লেখ করে স্বজনদের একটি লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত করে দায়ীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
তথ্যসূত্র: ইত্তেফাক
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন