কুমিল্লায় বাঙ্গির বাম্পার ফলন, ভালো দামে খুশি চাষীরা

কুমিল্লার দাউদকান্দি ও মেঘনার চরাঞ্চলে চলতি মৌসুমে বাঙ্গির বাম্পার ফলন হয়েছে। মার্চের শুরু থেকেই মাঠের পাঁকা বাঙ্গি সংগ্রহে চাষিরা ব্যস্ত সময় পার করছেন এখানকার চাষীরা।

স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে কুমিল্লার বাঙ্গি যাচ্ছে দেশের অন্যান্য জেলায়। আকারে বড় ও সুস্বাদু হওয়ায় দেশজুড়ে কুমিল্লায় উৎপাদিত বাঙ্গির চাহিদা সবচেয়ে বেশি। এরসাথে ভালো দাম পাওয়ায় হাঁসি ফুঁটেছে এখানকার বাঙ্গি চাষীদের মুখে।

রোববার সরেজমিনে জেলার দাউদকান্দি ও মেঘনার চরাঞ্চলে ঘুরে দেখা যায়, মাঠজুড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে সবুজ ও হলুদ রঙের বাঙ্গি। কৃষকরা মাঠে পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন। কেউবা মাঠ থেকে পাঁকা বাঙ্গি সংগ্রহ করে হাটে নেয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

দাউদকান্দির ভেলানগর এলাকায় কৃষক নাসির হোসেন জানান, তিনি ৩০ শতাংশ জমিতে এ বছর বাঙ্গি চাষ করেছেন। খরচ হয়েছে ৩৫ হাজার টাকা। এখন পর্যন্ত এক লক্ষ বিশ হাজার টাকার বাঙ্গি বিক্রি করেছেন। জমিতে আরো অন্তত ৫০ হাজার টাকার বাঙ্গি আছে।

একই এলাকার রফিক ৩০ শতক , জসিম ৩০ শতক ও খলিল মোল্লা ৪৫ শতক জমিতে বাঙ্গি করেছেন। তাদের সবার জমিতেই এ বছর বাঙ্গির বাম্পার ফলন হয়েছে।

কৃষি ও পরিবেশ সংগঠক মতিন সৈকত জানান, প্রতি বছরই দাউদকান্দি ও মেঘনা উপজেলার কৃষকরা বৈচিত্র্যময় কৃষি পণ্য উৎপাদন করেন। গত কয়েক বছর ধরে এই উপজেলাগুলোতে বাঙ্গি চাষ করে কৃষকরা লাভবান হচ্ছেন। দাউদকান্দি ও মেঘনার বাঙ্গি আকারে বড় ও খেতে সুস্বাদু বলেও জানান তিনি।

এদিকে দাউদকান্দিতে বাঙ্গির ভালো ফলন হলেও যোগাযোগ ব্যবস্থার অনুন্নতের কারণে অন্যান্য জেলা সদরে পাঠানো সম্ভব হয়না বলে অভিযোগ করেন দাউদকান্দি উত্তর ইলিয়টগঞ্জ ইউনিয়নের ইউপি সদস্য মনির হোসেন।

তিনি বলেন, ওই ইউনিয়নের অধিকাংশ সড়ক ভাঙা-চোরা। বেশ কয়েকটি কালর্ভাটও ভাঙা রয়েছে। যে কারণে বড় কোনো ট্রাক প্রবেশ করতে পারে না। তাই স্থানীয় বাজারেই বাঙ্গি বিক্রি করতে হয় চাষীদের। যদি সড়ক সংস্কার ও কালভার্টগুলো পুনঃসংস্কার করা যেতো, তাহলে অন্যান্য জেলা সদরের পাইকাররা অনায়াসে আমাদের এলাকায় এসে বাঙ্গি কিনে নিয়ে যেতে পারতো।

কুমিল্লা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, এ বছর জেলার দেড়’শ হেক্টর জমিতে বাঙ্গির আবাদ হয়েছে। যার মধ্যে মেঘনা, দাউদকান্দি, চান্দিনা, দেবিদ্বার ও মুরাদনগর উপজেলাতেই বেশি চাষ হয়েছে।

কুমিল্লা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. মিজানুর রহমান জানান, এ বছর কুমিল্লার বাঙ্গির ভালো ফলন হয়েছে। বিঘা প্রতি কৃষকরা ৩০ হাজার টাকা বিনিয়োগ করে এক থেকে দেড় লাখ টাকা পর্যন্ত মুনাফা করেছে। কৃষকদেরকে সার বীজ ও পরামর্শ প্রদানের জন্য মাঠে সার্বক্ষণিক তদারকি করছেন উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তারা।

ছবিতে..