কুড়িগ্রামের রৌমারীতে পানিবন্দি ৪০ হাজার মানুষ, ২২৩ হেক্টর জমির ফসল পানির তলে
![](https://ournewsbd.net/wp-content/uploads/2022/06/Kurigram-Flood-photo-1-14.06.2022-900x450.jpg)
![](https://ournewsbd.net/wp-content/uploads/2025/02/475351977_1256003665483861_2959209934144112011_n.jpg)
গত দুই সপ্তাহের টানা বর্ষন ও উজানের পাহাড়ী ঢল অব্যাহত থাকায় কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলার বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। বসতবাড়ীর চারিদিকে পানি উঠায় ব্যাহত হয়ে পড়েছে স্বাভাবিক জীবন-যাত্রা। অনেক পরিবারে খাদ্য সংকট দেখা দিলেও তালিকা তৈরী না হওয়ায় ত্রান তৎপরতা শুরু করতে পারেনি উপজেলা প্রশাসন।
অন্যদিকে কুড়িগ্রামের উপর দিয়ে প্রবাহিত তিস্তা, ধরলা, ব্রহ্মপুত্র, দুকুমারসহ অন্যান্য নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
গত পাঁচ দিন ধরে রৌমারী উপজেলার সীমান্ত ঘেষা নদী জিঞ্জিরাম, ধরনী ও কালজানির পানি বৃদ্ধি পেয়ে এ বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। ফলে পানি বন্দী জীবন যাপন করছে রৌমারী উপজেলার চার ইউনিয়নের প্রায় ৪০ হাজার মানুষ। উজানের পাহাড়ী ঢলের লালচে কাদা পানিতে জমির ফসল নিয়ে দুঃচিন্তায় পড়েছেন কৃষকরা। চারন ভূমি তলিয়ে থাকায় গবাদি পশুর খাদ্য সংকট নিয়ে বিপাকে পড়েছেন বন্যা কবলিতরা।
কৃষি বিভাগের তথ্যমতে রৌমারী উপজেলায় প্রায় ২শ ২৩ হেক্টর জমির বিভিন্ন ফসল পানিতে তলিয়ে গেছে। কাদামাখা পানিতে তলিয়ে থাকা উঠতি আউশ ধান, পাট, মরিচ, কাউন ও তিলসহ বিভিন্ন সবজি জাতীয় ফসল সম্পুর্ন রুপে ক্ষতির আশংকা করছেন কৃষক।
রৌমারী উপজেলার শৌলমারী ইউনিয়নের কৃষক সেফাত উল্ল্যা জানান, আমার কাউন ক্ষেত, সবজি ক্ষেত ৫ দিন ধরে পানিতে তলিয়ে আছে। সব ফসল নষ্ট হয়ে যাবে।
সদর ইউনিয়নের বাওয়াইর গ্রামের ছপিয়াল হক জানান, চারদিকে বন্যার পানি থাকায় কর্মহীন হয়ে পড়েছেন তারা। পরিবার পরিজন নিয়ে অতি কষ্টে দিন যাপন করছেন।
যাদুরচর ইউনিয়নের পুরাতন যাদুরচর গ্রামের আমজাদ হোসেন বলেন,হাতে কোন কাজ নেই,কোথাও বের হতে পারছেন না, পানি বন্দি অবস্থায় থাকলেও এখনও কোন সহায়তা পাননি তিনি।
যাদুরচর ইউপি চেয়ারম্যান সরবেশ আলী বলেন,অসহায় পানিবন্দি মানুষের তালিকা দেয়া হয়েছে কিন্তু সরকারি ভাবে এখনো কোন বরাদ্দ পাই নাই। বরাদ্দ পেলে তা বন্যা কবলিতদের মাঝে বিতরণ করা হবে।
অন্যদিকে উপজেলার ২২ কিলো পাকা ও ৩৫ কিলোমিটার কাচা সড়ক পানিতে তলিয়ে থাকায় ভেঙ্গে পড়েছে যোগাযোগ ব্যবস্থা। এ অবস্থায় নৌকা ও কলা গাছের ভেলায় যাতায়াত করছেন বন্যা কবলিতরা।
রৌমারী উপজেলা প্রকৌশলী জোবায়েত হোসেন জানান, বন্যার পানি নামার সাথে সাথে ক্ষতিগ্রস্থ রাস্তা দ্রæত মেরামত করা হবে।
বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে রৌমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশরাফুল আলম রাসেল জানান, তিনি বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখেছেন,কিছুু এলাকায় পানি কমলেও উপজেলার বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। ক্ষতিগ্রস্থদের তালিকা তৈরির কাজ শেষ হলেই ত্রাণ সহায়তা দেয়া হবে।
এদিকে বন্যা পরিস্থিতিতে রৌমারীতে শিক্ষা ব্যবস্থা সম্পূর্ণরুপে ব্যাহত হচ্ছে। ৪ ইউনিয়নে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বন্যার পানি প্রবেশ করায় ২১ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে।
![](https://ournewsbd.net/wp-content/uploads/2024/12/469719549_122234398946008134_2936380767280646127_n.jpg)
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন