কুড়িগ্রামে গ্রামীণ বাজারে ধানের চারার জমজমাট বাজার

কুড়িগ্রামের উলিপুরে গ্রামীণ বাজার গুলোতে বোরো ধানের চারার বাজার জমজমাট। বোরো চাষের মৌসুম চলে আসায় গ্রামীণ বাজার গুলোতে বিভিন্ন এলাকা থেকে মানুষ চারা কিনতে ভিড় করেছে। তীব্র শীত থাকায় বোরো ধানের কিছু কিছু বীজতলা নষ্ট হওয়ায় বাজারে চারার চাহিদা অনেক বেশি।

কৃষি অফিস সুত্রে জানা যায়, এবারে বোরো ধানের বীজতলা তৈরির লক্ষমাত্রা প্রায় ১২ শত ৯৫ হেক্টর। তারা জানান, বিরি ধান-৮৮, বিরি ধান-৮৯, বিরি ধান-৯২ এবং বিরি ধান (বঙ্গবন্ধু)-১০০ এ সকল উন্নত জাতের বোরো ধানের বীজতলা তৈরির জন্য প্রান্তিক চাষীদের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।

সরেজমিন উপজেলার গ্রামীণ বাজার গুলোতে গিয়ে দেখা যায়, বোরো ধানের চারা বেচা-কেনা করতে ব্যাস্ত সময় পার করছেন বোরো চাষিরা। বেচা-কেনার দৃশ্য দেখে মনে হয় বোরো চাষিদের এক মিলন মেলা। কেউ দরদাম করছেন কেউ ক্রয় করছেন। বোরো চাষিরা বলেন এবারে তীব্র শীতের দাপট থাকায় কিছু কিছু বীজতলা নষ্ট হওয়ায় চারার সংকট দেখা দিয়েছে। গ্রামীণ বাজার গুলোতে প্রতিদিন দুপুর থেকেই হাট শুর“ হয়। কৃষকরা তাদের নিজেদের তৈরী বীজতলা থেকে মৌসুমী ধানের চারার আটি বেঁধে হাটে নিয়ে আসেন। প্রতি আটি প্রকারভেদে ৭ টাকা থেকে ৮ দরে টাকা। আবার পোন হিসাবে (৮০ টি আটি) ৫’শ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করছেন। গ্রামীণ বাজার গুলোতে চাহিদা অনুযায়ী চারা পেয়ে বেশ খুশি ক্রেতারা।

উপজেলার কালপনি বজরা এলাকা থেকে চারা কিনতে আসা কৃষক আব্দুল জলিল বলেন, তীব্র শীতের কারণে এলাকায় ধানের চারার বীজতলার কিছু চারা নষ্ট হয়েছে। অল্পকিছু চারা কিনতে এই হাটে এসেছি। চাহিদা অনুযায়ী ধানের চারা কিনতে পারছি। তিনি আরো বলেন, আমি আমার দুই কানি খেতের জন্য চারা কিনতে আসছি। হাটে চারার দাম আমাদের হাতের নাগালেই আছে। আশা করছি চারা নিয়ে জমিতে রোপন করলে ভালো ফল হবে।

উপজেলার থেতরাই ইউনিয়নের হোকডাঙ্গা গ্রামের শাহাবুল আলম নামে আরেক কৃষক বলেন, আমার ৪২ শতাংশ জমির জন্য চারা কিনতে এসেছি। প্রায় ৩ পোন চারা ১৫’শ টাকা দিয়ে ক্রয় করলাম। আশা করি এ চারা দিয়ে ভালোভাবে জমিতে চারা রোপন করতে পারব। এ বছর চাহিদা মোতাবেক চারা কিনতে পেরে অনেক খুশি।

চারা বিক্রেতা মফিজল হক বলেন, আমি প্রায় ২ একর জমিতে বোরো ধানের চারা লাগিয়েছি।বীজতলায় অতিরিক্ত চারা থাকায় তা বাজারে নিয়ে এসেছি। চারার অনেক চাহিদা থাকায় ভালো দামে বিক্রি করতে পেরেছি। তিনি আরও বলেন আমি ৫ পোন চারা বাজারে এনে প্রায় ২৫’শ টাকা বিক্রি করতে পেরে অনেক খুশি।

উপজেলার বজরা বাজারের হাট ইজারাদার ওসমান আলী বলেন, বিভিন্ন জাতের ধানের চারার পাশাপাশি, খাসা, কালিজিরা ধানের চারা বিক্রি হচ্ছে বেশি। এখানে বেশ কয়েকদিন থেকে চারার বাজার জমজমাট ভাবে চলছে। বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রতিদিন অনেক লোক চারা ক্রয় করতে এখানে আসেন। সুলভ মূল্যে চারা কেনা-বেচা হয়ে থাকে। চারা কেনা-বেচা আর ১৫ থেকে ২০ দিন চলবে বলে জানান তিনি।