কুড়িগ্রামে জেলা প্রশাসক ভবনের পরিত্যক্ত ছাদে গড়ে উঠেছে দৃষ্টি নন্দন ছাদবাগান
কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসকের কার্যলয়ের দুটি ভবনের বিশালাকারের (প্রায় ৪০ হাজার স্কয়ার ফিট) ছাদটি বরাবরই পরিত্যক্ত অবস্থায় ছিল। গত এক বছর আগে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রেজাউল করিম উদ্যোগ নেন পরিত্যক্ত ছাদকে বৃক্ষ শোভিত সবুজময় ছাদে পরিণত করার জন্য। তার প্রচেষ্টায় ইতোমধ্যে ছাদে লাগানো গাছে ফুল ও ফল ধরেছে। গাছে গাছে ঝুলছে আম,কমলা,মাল্টা,পেয়ারা জাতীয় ফল কাঁঠাল। আর এসব ফল দিয়ে আপ্যায়ন করা হচ্ছে অফিসে আগত অতিথিদের।
সরকারি ভবনের বিশাল পরিত্যক্ত ছাদ কাজে লাগিয়ে হতে পারে বিকল্প কৃষি। অপার সম্ভাবনার দুয়ার খুলে যেতে পারে এ ছাদ কৃষির মধ্য দিয়ে। পরিবেশ রক্ষায় রাখতে পারে অনন্য ভূমিকা।
এর দৃষ্টান্তমূলক উদাহরণ তৈরি করেছেন কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রেজাউল করিম। গত দুবছর আগে তিনি কুড়িগ্রামে জেলা প্রশাসক হিসেবে দ্বায়িত্ব নিয়েছেন। করোনা কালিন সময়ে তিনি অফিসের বিশাল ছাদে ফল, ফুল এবং বিলুপ্ত ও বিরল প্রজাতির গাছ লাগিয়েছেন। ছাদের ওপর আম, কমলা, মাল্টা, ড্রাগনসহ প্রায় ১০০ প্রজাতির ৬৫০ গাছ। কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের ছাদে গড়ে উঠেছে দৃষ্টিনন্দন ছাদবাগান।
প্রায় ৪০ হাজার স্কয়ার ফুটের বিশাল এই ছাদবাগান অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে উঠেছে সবার। সৃজনশীল এ ধারণা থেকে অন্যান্য সরকারি দপ্তরের ছাদে ‘ছাদকৃষি’ ছড়িয়ে দিতে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন বৃক্ষ প্রেমিকরা।
এই ব্যতিক্রমী ছাদবাগান দেখতে ছুটে আসছেন অনেকেই। ছাদকৃষির প্রেরণা নিয়ে ফিরে যাচ্ছেন ঘরে। সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে পরিত্যক্ত সব ছাদকে কাজে লাগাতে পারলে ছাদকৃষিতে বিপ্লব ঘটানো সম্ভব বলে মনে করেন কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ ও কৃষি গবেষক প্রফেসর মির্জা নাসির উদ্দিন।
তিনি বলেন, আমাদের ফল ও ফুলের চাহিদা মেটাতে অসামান্য অবদান রাখার পাশাপাশি পরিবেশ সুরক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে এই ছাদকৃষি। এ জন্য সচেতনতা বৃদ্ধির ওপর গুরুত্ব দেন তিনি।
এ বিষয়ে কথা হলে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রেজাউল করিম জানান, কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসকের কার্যালয়টি অনেক বড় আয়তনের। বিশাল ছাদে শখের বসে ছাদকৃষি শুরু করি। বিভিন্ন স্থান থেকে নানা জাতের ফল ও ফুলসহ বিভিন্ন গাছের চারা সংগ্রহ করে লাগানো হচ্ছে। কর্মকর্তা-কর্মচারী সবার আগ্রহের কারণে আস্তে আস্তে বড় হচ্ছে এই বাগান।
ছাদ কৃষি একদিকে যেমন আমাদের ফুল ও ফলের চাহিদা মেটাবে তেমনি অবসর সময়ে এ বাগানে সুন্দর সময় কাটানো যায়। মন প্রফুল্ল হয়। এ রকম একটি ছাদকে কাজে লাগিয়ে কৃষিতে অনন্য ভূমিকা এবং পরিবেশ রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নেওয়া সম্ভব। এটি পরিবেশ সুরক্ষার আন্দোলন হিসেবে ছড়িয়ে দেওয়ায় আমার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন