কুয়াকাটায় ঐতিহ্যবাহী জলকেলিতে মাতলো রাখাইন কিশোর কিশোরীরা
মাঠের মধ্যে সাজানো নৌকায় রাখা হয়েছে পানি। আর এ পানি একে অপরের গায়ে ছিটিয়ে দিচ্ছে রাখাইন কিশোর কিশোরীরা। এসময় রাখাইন সংগীতের সঙ্গে পরিবেশন করা হয় রাখাইন নৃত্য।
পটুয়াখালীর কুয়াকাটায় এভাবেই উদযাপিত হচ্ছে রাখাইন সম্প্রদায়ের শত বছরের ঐতিহ্যবাহী সাংগ্রাই জলকেলি উৎসব।
শনিবার দুপুর আড়াইটায় শ্রী মঙ্গল বৌদ্ধ বিহার সংলগ্ন রাখাইন মার্কেটে অনুষ্ঠিত হয় এ উৎসব।
পুরোনো বছরের সব দু:খ-গøানি ভুলে নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে সাংগ্রাই বা নবর্ষের এ উৎসবের আয়োজন করে ‘অং হেলফ এন্ড এডুকেশন ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন’।
আর এ উৎসব দেখতে ভীড় জমায় ধর্ম বর্ন নির্বিশেষে সকল শ্রেনী পেশার মানুষ। তাই এ উৎসব পরিনত হয়েছে সার্বজনীন উৎসবে।
করোনার দীর্ঘ দুই বছর পর এ উৎসবে অংশগ্রহন করতে পেরে রাখাইন পরিবারগুলোর মাঝে বিরাজ করছে উৎসবের আমেজ। এ উৎসবে যে কোন ধরণের অপ্রতিকর ঘটনা এড়াতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে ছিলো কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
এর আগে বেলা এগারোটায় শ্রীমঙ্গল বৌদ্ধ বিহারে বুদ্ধ স্নানের মধ্য দিয়ে শুরু হয় এ উৎসবের আনুষ্ঠানিকতা।
বেলা সাড়ে বারোটায় এ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত হন পটুয়াখালী জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামাল হোসেন।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শহিদুল্লাহ, কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু হাসনাত মোহাম্মদ শহিদুল হক, কুয়াকাটা পৌর মেয়র আনোয়ার হাওলাদার ও কুয়াকাটা প্রেসক্লাবের সভাপতি নাসির উদ্দিন বিপ্লব।
অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন কেন্দ্রীয় কৃষকলীগের ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক ও ‘অং হেলফ এন্ড এডুকেশন ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশনের’ প্রেসিডেন্ড নিউ নিউ খেইন।
কুয়াকাটার রাখাইন পাড়ার বাসিন্দা মংখেলা জানান, পটুয়াখালী এবং বরগুনার রাখাইন ক্ষুদ্র জনগোষ্ঠী এ অনুষ্ঠানে অংশগ্রহন করেছে। ১৩৮৪ সালকে বরন করতেই আমরা আসলে এই সাংগ্রাইয়ের আয়োজন করেছি। আমরা খুবই আনন্দিত। কারণ গত দুই বছর আমরা এ অনুষ্ঠান করতে পারিনি। রাখাইন নর-নারীরা এ উৎসবে আজ মেতে উঠেছে।
অপর বাসিন্দা উবাচু জানান, সাংগ্রাই উৎসবে অংশগ্রহন করতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করেছি। পুরনো বছরকে বিদায় এবং নতুন বছরকে স্বাগত জানাতেই আমরা এ অনুষ্ঠানে মিলিত হয়েছি। এ সংগ্রাইয়ের শেষ পর্ব হচ্ছে মৈত্রীয় জলবর্ষন বা জলকেলি। মূলত এ জলকেলি অনুষ্ঠান ছিলো সবার আকর্ষনের কেন্দ্রবিন্দু।
কেন্দ্রীয় কৃষকলীগের ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক ও অং হেলফ এন্ড এডুকেশন ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশনের প্রেসিডেন্ড নিউ নিউ খেইন জানান, করোনার কারণে বিগত দুই বছর আমরা এ উৎসব করতে পারিনি। বিগত বছরের দু:খ দুর্দশা ভুলে নতুন করে পথ চলার জন্যই আমাদের এ আয়োজন।
মহিপুর থানার ওসি আবুল খায়ের জানান, এ উৎসব সফলভাবে সম্পন্ন করতে আমরা থানা পুলিশ সর্বোচ্চ নিরাপত্তা দেয়ার চেষ্টা করেছি।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন