কেন কোটা সংস্কার আন্দোলন, দাবিগুলো কী?
চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবি তুলে রাজপথে তুমুল আন্দোলন গড়ে তুলেছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। তাদের সেই যৌক্তিক দাবিগুলো কী, সে বিষয়ে স্পষ্ট ধারণা নেই অনেকের। কোটা সংস্কারে মূলত ৫ দাবিতে রাজপথে নেমেছেন আন্দোলনকারীরা।
এ দাবিগুলো হলো-
১. কোটা ব্যবস্থা সংস্কার করে ৫৬ শতাংশ থেকে ১০ শতাংশে নামিয়ে আনা
২. কোটায় কোনো ধরনের বিশেষ নিয়োগ না দেয়া
৩. চাকরির নিয়োগ পরীক্ষায় কোটা সুবিধা একাধিকবার ব্যবহারের সুযোগ না দেয়া
৪. সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে সবার জন্য অভিন্ন কাট মার্কস ও বয়সসীমা নির্ধারণ করা
৫. কোটায় যোগ্যপ্রার্থী পাওয়া না গেলে শূন্য পদগুলোতে মেধায় নিয়োগ প্রদান করা
দেশে প্রচলিত বিদ্যমান কোটা ব্যবস্থায় প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির চাকরিতে মোট জনসংখ্যার এক দশমিক ২ শতাংশ ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর জন্য শতকরা ৫ ভাগ, এক দশমিক ৪০ শতাংশ প্রতিবন্ধীদের জন্য এক ভাগ, দশমিক ১৩ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা এবং তাদের পোষ্যদের জন্য শতকরা ৩০ ভাগ অর্থাৎ মাত্র ২ দশমিক ৬৩ শতাংশ নাগরিকের জন্য রয়েছে ৩৬ শতাংশ কোটা।
এ ছাড়া জেলা কোটা ১০ শতাংশ এবং নারী কোটা ১০ শতাংশ। সব মিলিয়ে মোট কোটা ৫৬ শতাংশ। দেশের লাখ লাখ সাধারণ চাকরি প্রত্যাশীদের জন্য রয়েছে মাত্র ৪৪ শতাংশ।
আরও জানা যায়, তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির পদগুলোতে কোটা বৈষম্য আরও ভয়াবহ।
তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির চাকরিতে শতকরা ৭০ শতাংশ কোটা। মুক্তিযোদ্ধা কোটায় ৩০ শতাংশ, নারী কোটায় ১৫ শতাংশ, উপজাতি ৫ শতাংশ, আনসার ও ভিডিপিতে ১০ শতাংশ ও প্রতিবন্ধী কোটায় ১০ শতাংশ।
এ ছাড়া প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগে ৯৬ শতাংশ, রেলওয়েতে ৮২ শতাংশ কোটায় নিয়োগ দেয়া হয়। রেলওয়েতে ৪০ শতাংশ পোষ্য কোটার নজিরবিহীন বৈষম্য রয়েছে।
অবশিষ্ট ৬০ শতাংশের মধ্যে নারী ১০ শতাংশ, মুক্তিযোদ্ধা ৩০ শতাংশ, প্রতিবন্ধী ১০ শতাংশ, উপজাতি ১০ শতাংশ এবং আনসার ভিডিপি ১০ শতাংশ কোটা নির্ধারিত।
এ ছাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিয়োগে ৬০ শতাংশ নারী, ২০ শতাংশ পুরুষ এবং ২০ শতাংশ পোষ্য কোটা। এই আনুপাতিক হারের ভিত্তিতে বাংলাদেশ কোটা বিধির অন্যান্য কোটা যেমন মুক্তিযোদ্ধা ৩০ শতাংশ, উপজাতি ৫ শতাংশ, আনসার ভিডিপি ১০ শতাংশ ও প্রতিবন্ধী ১০ শতাংশকে নারী ও পুরুষভেদে বণ্টন করা হয়।
বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার আন্দোলন পরিষদের ব্যানারে সাধারণ শিক্ষার্থীরা এ আন্দোলনটি বেগবান করছেন।
আন্দোলনকারীরা জানায়, বিভিন্ন সরকারি নিয়োগে কোটায় সংরক্ষিত পদসমূহ পূরণ করা সম্ভব হচ্ছে না। এর ফলে অনির্দিষ্ট সময়ের জন্য সে পদগুলো শূন্য থেকে যাচ্ছে।
বর্তমানে চাকরিতে প্রবেশের ক্ষেত্রে সাধারণ ছাত্র ছাত্রীদের বয়সসীমা ৩০ বছর হলেও নির্দিষ্ট কিছু কোটাধারী প্রার্থীদের জন্য ৩২ বছর। যার ফলে সাধারণ চাকরি প্রত্যাশীরা অসম প্রতিযোগিতার সম্মুখীন হচ্ছেন।
এ ছাড়া কোটা প্রার্থীরা কোটার সুবিধা ভোগ করে বার বার চাকরি বদল করে শূন্য পদের সৃষ্টি করছে। এর ফলে বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন সাধারণ চাকরি প্রার্থীরা।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন