কেন বিমান মন্ত্রণালয় থেকে সরানো হলো মেননকে
বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেননকে বুধবার সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। মেনন বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি। বুধবার দুপুরে মেননকে বিমান মন্ত্রণালয় থেকে সরিয়ে দেয়ার কথা ছড়িয়ে পড়লে সিভিল এভিয়েশন ও বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের প্রধান কার্যালয় বলাকায় সবার মুখে মুখে ছিল বিষয়টি।
অনেকেই মন্ত্রীর সফলতা ও ব্যর্থতা নিয়ে করছিলেন চুলচেরা বিশ্লেষণ। অনেকেই মনে করছেন কার্গো রফতানিতে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারসহ ভিভিঅাইপি ফ্লাইটে নাট-বল্টু ঢিলা, এবং ফ্লাইটে নিরাপত্তা দিতে না পারার কারণে তাকে বিমানমন্ত্রীর চেয়ার হারাতে হয়েছে। আবার প্রধানমন্ত্রীর ফ্লাইটে দায়িত্বে অবহেলা এবং গাফিলতির ঘটনায় তদন্তে কাউকে দোষী সাব্যস্ত না করতে পারাও একটি বড় কারণ বলে মনে করছেন কেউ কেউ।
তবে এসব বিষয়ে রাশেদ খান মেনন বলেন, আমি বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী থাকাকালে কোনোরকম দুর্নীতি ও অনিয়মকে প্রশ্রয় দেইনি। সরকার যেখানে চাইবে সেখানেই আমাদের কাজ করতে হবে।
বিমান সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের এপ্রিলে আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার (আইএইএ) সম্মেলনে যোগ দিতে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে অস্ট্রিয়ার ভিয়েনা গিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ভিভিআইপি ওই ফ্লাইটে পূর্বনির্ধারিত মেন্যু অনুযায়ী খাবার সরবরাহ করা হয় বিমান ফ্লাইট ক্যাটারিং সেন্টার (বিএফসিসি) থেকে। সরকারের সব সংস্থার উপস্থিতিতে খাবার তৈরি করে বিএফসিসির একটি কক্ষে সিলগালা করে রাখা হয়। ফ্লাইটের দিন সকালে ফ্লাইটে খাবার ওঠানোর সময় সিকিউরিটি ট্যাগ ছাড়া দুটি স্যুপের ফ্লাস্ক দেখতে পায় স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্স (এসএসএফ)। সঙ্গে সঙ্গে তারা ফ্লাস্ক দুটি বিএফসিসিতে ফেরত পাঠান।
দুই ফ্লাস্কের একটিতে চিকেন একং একটিতে ভেজিটেবল স্যুপ ছিল। ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর তোলপাড় শুরু হয় বিমানে।
অনেকেই বলেছেন, প্রধানমন্ত্রীর জন্য পরীক্ষা করা খাবারের সঙ্গে কীভাবে নিরাপত্তা পরীক্ষা ছাড়া দুটি ফ্লাস্ক ভিভিআইপি ফ্লাইটে পাঠনো হলো সে ব্যাপারে লোক দেখানো তদন্ত কমিটি করা হলেও সন্তোষজনক কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।
২০১৬ সালের নভেম্বরে প্রধানমন্ত্রীকে বহনকারী বুদাপেস্টগামী ফ্লাইটে যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে জরুরি অবতরণের ঘটনায় দেশ-বিদেশে তোলপাড় উঠেছিল। সেবারও ঘটেছে খাবার নিয়ে গাফিলতির ঘটনা।
ওই ঘটনায় ফ্লাইট ক্যাটারিং সেন্টারের সহকারী ব্যবস্থাপককে সাময়িক বরখাস্ত করলেও মন্ত্রণালয়ের তদন্তে নির্দোষ উল্লেখ হওয়ায় কোনো শাস্তি দেয়া যায়নি। সর্বশেষ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ফ্লাইটে নিরাপত্তা না দিতে পারা ও দায়িত্বে অবহেলার কারণে জেলে থাকা ১৯ জন প্রকৌশলীকে আদালত বেকসুর খালাস দিয়েছেন মন্ত্রণালয়েরই তদন্ত রিপোর্টের সূত্র ধরে।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন