কে এই কলকাতার মুসলিম মেয়র ফিরহাদ হাকিম?
১৯৪৭ সালে ভারত ও পাকিস্তান রাষ্ট্রের জন্মের আগে ৫ জন মুসলিম কলকাতা নেতা কলকাতার মেয়র হিসেবে দায়িত্বপালন করেছেন। পরবর্তী ৭১ বছরে কলকাতায় আর কোনো মুসলিম মেয়র হতে পারেনি।
সাত দশকের এই রেকর্ড ভেঙে বৃহস্পতিবার কলকাতার মেয়র হিসেবে মনোনীত হয়েছেন ফিরহাদ হাকিম। ১৯৪৭ সালের আগে যে মুসিলম নেতারা মেয়র ছিলেন তাদের মধ্যে ছিলেন শেরেবাংলা এ কে ফজলুল হক। ফলে ফিরহান হাকিমকে শেরেবাংলার উত্তরসূরি হিসেবে দেখছেন তার ভক্তরা।
কলকাতার মেয়র পদ থেকে শোভন চ্যাটার্জি পদত্যাগের পর ওই পদে বৃহস্পতিবার ফিরহান হাকিমের নাম ঘোষণা করেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। ফিরহান হাকিম এর আগে থেকই রাজ্যের নগরোন্নয়ন এবং পৌর দফতরের মন্ত্রী ছিলেন, যে অভিজ্ঞতার কারণে তাকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে।
নতুন মেয়র ফিরহাদ হাকিম দক্ষিণ কলকাতার চেতলা এলাকার মানুষ। তিনি দীর্ঘদিন কংগ্রেস রাজনীতির সঙ্গে রয়েছেন। ইতিপূর্বে তিনি কলকাতা কর্পোরেশনের ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও বিধানসভায় নির্বাচনে জিতে মন্ত্রী হয়েছেন।
ফিরহাদ হাকিম জানিয়েছিলেন, তার দাদা বিহারের গয়া জেলা থেকে কলকাতায় এসে ব্যবসা শুরু করেন। আর বাবা কলকাতা পোর্ট ট্রাস্টের আইন কর্মকর্তা ছিলেন। মা কলকাতার একটি স্কুলের সহকারী প্রধান শিক্ষিকা ছিলেন।
তবে ফিরহান হাকিমের মা হিন্দু মুখার্জি পরিবারের সন্তান ছিলেন বলে জানিয়েছেন তার বন্ধু ঋষিকেশ মুখার্জি।
ঋষিকেশ মুখার্জি বলেন, ববি (ফিরহান হাকিমের ডাক নাম) ধর্মে মুসলমান ঠিকই, নিয়মিত নামাজও পড়ে, গত বছর হজ করে এসেছে, কিন্তু ওর মধ্যে হিন্দু-মুসলিম প্রসঙ্গটা একেবারেই নেই। ওর মা ছিলেন পূর্ব বঙ্গীয় হিন্দু পরিবারের মানুষ, বোনের বিয়ে দিয়েছে হিন্দু পরিবারে।
তিনি আরো জানান, ছোট থেকে আমরা কয়েকজন বন্ধু প্রতি শনিবারে নিয়ম করে কালীঘাটের কালীমন্দিরে যেতাম দর্শন করতে, সেখানে ববিও থাকত। আবার ঈদের দিনে আমরা সব বন্ধু ওদের বাড়িতে বিছানায় বসে একসঙ্গে আড্ডা মারতাম। আর এটা তো নতুন করে বলার কিছু নেই যে চেতলা অগ্রণী ক্লাবে যে দুর্গাপুজো এখন বিখ্যাত, তার শুরুটাই ববি আর আমরা কয়েকজন বন্ধু করেছিলাম।
ঋষিকেশ বলেন, যখন আড্ডা মারি আমরা, তখন মন্ত্রী বলে মনেই হয় না ওকে। আর পাড়ার ক্লাব অন্তঃপ্রাণ। কিছুক্ষণের জন্য হলেও ক্লাবে আসবেই ও। তবে যখন সামনে পুলিশের গাড়ি নিয়ে ওর কনভয় বের হয়, তখনই একমাত্র ওকে মন্ত্রী বলে মনে হয়।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন