কে নেবে সাংবাদিক নদীর মেয়ে আর মায়ের দায়িত্ব?
সাংবাদিক সুবর্ণা নদীর অকাল মৃত্যু তার একমাত্র মেয়ে জান্নাতকে (৭) অসহায় করেছে। বিধবা মা মর্জিনা বেগমসহ (৬০) একটি পরিবারকে অথৈ সাগরে ভাসিয়ে দিয়ে গেছেন তিনি। এখন ওদের দেখভাল করার কেউ নেই।
নদী হত্যার পর গত ৪ দিন ধরে নদীর মেয়ে ও বিধবা মায়ের এ মানবিক বিষয়টি সবার আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়। কিন্তু দুঃখজনক, এখন পর্যন্ত কেউই তাদের দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে এগিয়ে আসেননি।
নিহত সুবর্ণা আক্তার নদী পাবনা জেলার আটঘরিয়া উপজেলার একদন্ত গ্রামের মৃত আয়ুব আলীর মেয়ে। নদী মায়ের পেটে থাকতেই মারা যান তার বাবা। বাবা একখণ্ড বাড়ির জমি ছাড়া সহায়-সম্বল কিছুই রেখে যাননি। এরপর বড় মেয়ে চাম্পাকে নিয়ে মা মর্জিনা বেগম শহরে চলে আসেন কাজের সন্ধানে।
শহরে এসেই জন্ম হয় নদীর। পিতৃহীন মেয়েটি ধীরে ধীরে বড় হতে থাকে। বিধবা মা শহরে অনেক কষ্ট করে দুই মেয়েকে লালন-পালনসহ তাদের উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে লেখাপড়া করান। পরে নদী নিজের চেষ্টায় বিএ পাস করেন। তারপর মাকে একটু সুখের স্পর্শ দিতে নিজে হাল ধরেন পরিবারের।
নদীর ভাড়া বাসায় গিয়ে দেখা যায়, পুরো বাড়ি শোকে মোড়ানো। মা মর্জিনা বেগম বাকরুদ্ধ। মাঝে-মধ্যে মেয়ে নদীর ছবি বের করে দেখেন আর বিলাপ করেন। মেয়ে জান্নাত খালাতো ভাই আলিফের সঙ্গে কখনও মোবাইল ফোনে গেম খেলছে আবার কখনও মায়ের জন্য কাঁদছে।
বড় বোন চাম্পা বলেন, আমি একটি বেসরকারি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে সাড়ে ৩ হাজার টাকা বেতনে কাজ করি। নিজের চলে না বলে নদী আমার ছেলেটাকে মানুষ করার জন্য নিয়ে আসে। নদীর মৃত্যুতে বিধবা মা, ওর এতিম মেয়েকে দেখার আর কেউ থাকল না। তিনি জানান, গত ৪ দিনে কেউই তাদের সাহায্যে এগিয়ে আসেনি। এখন তারা কোথায় যাবে, কি করবে কিছুই ভেবে কূল পাচ্ছেন না।
মঙ্গলবার রাত আনুমানিক সাড়ে ৮টার দিকে নিজের বাসার গেটের কাছে ওতপেতে থাকা ৪-৫ জনের একদল দুর্বৃত্তের এলোপাতাড়ি ছ–রিকাঘাতে নদী নিহত হন।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন