কোটা পুনর্বহালের প্রতিবাদে নোবিপ্রবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল
হাইকোর্ট কর্তৃক প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণীর সরকারি চাকরিতে কোটা পুনর্বহাল আদেশের বিরুদ্ধে মানববন্ধন করেছেন নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
রবিবার (৯ জুন) বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে এই মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়।
এইসময় শিক্ষার্থীরা ‘কোটাধারী মেধাবীরা তোমাদেরই তো দেশ। যুদ্ধ করেনি আমার দাদা,চলে যাই বিদেশ’, ‘কোটা পদ্ধতির পুণর্বহাল মানি না, মানবো না’, ‘বঙ্গবন্ধুর বাংলায় বৈষম্যের ঠাই নাই।’ ইত্যাদি স্লোগান যুক্ত প্ল্যাকার্ড নিয়ে উপস্থিত ছিলেন।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের মধ্যে মুক্তিযোদ্ধার সন্তান আহসান আলম শুভ বলেন, আমি একজন মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তান,তবুও আমি চাই এই দেশ থেকে কোটা পদ্ধতি বাতিল করা উচিত। মেধার সুবিচার করা উচিত৷ যারা মেধাবী তারা কোটার কারণে ভালো জায়গায় জব পায় না। এই বৈষম্য নিরশনে কোটা পদ্ধতি বাতিল করা হোক৷
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী জাহিদ হাসান বলেন,যারা মুক্তিযুদ্ধ করেছে আমরা তাদের সম্মান করি। আমরা চাচ্ছি মুক্তিযুদ্ধাদের যত সুযোগ সুবিধা দেওয়ার প্রয়োজন তাদের তা দেওয়া হোক। কিন্তু উনার ছেলে,নাতি কেন সুযোগ সুবিধা ভোগ করবে?
এটা মুক্তিযোদ্ধাদের একার অর্জন। ১৯৭১ সালে যে বৈষম্যের জন্যে আমরা স্বাধীনতা যুদ্ধ করেছি,তা এখন আবার চলে আসছে৷ আমি চাই কোটা পদ্ধতির সংস্কার হোক।
আরেক শিক্ষার্থী হাসিবুল হোসেন বলেন, ২০১৮ সালে আমাদের অনেক ভাইয়েরা কোটা নিয়ে আন্দোলনে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমরা আবেদন জানাই যেনো কোটা পদ্ধতির সংস্কার করা হোক।
বক্তব্য শেষে বিক্ষোভ মিছিল গোলচত্তর প্রদক্ষিণ করে। এইসময় তারা ‘বঙ্গবন্ধুর বাংলায় বৈষম্যের ঠাই নাই’, ‘একাত্তোরের হাতিয়ার গর্জে উঠো আরেকবার’ বলে স্লোগান দেন।
প্রসঙ্গত, ২০১৮ সাল পর্যন্ত দেশে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটাসহ ৫৬ শতাংশ কোটা প্রচলিত ছিল। সে বছর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কোটা সংস্কারের দাবিতে বড় আন্দোলন হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে নবম থেকে ১৩তম গ্রেড পর্যন্ত সরকারি চাকরিতে কোটা পুরোপুরি বাতিল করে সরকার।
২০১৮ সালের ৪ অক্টোবর জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সরকারি দপ্তর, স্বায়ত্তশাসিত বা আধা স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান এবং বিভিন্ন করপোরেশনে চাকরিতে সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে সরকারের বিদ্যমান কোটাপদ্ধতি সংশোধন করে পরিপত্র জারি করে। ওই পরিপত্রে নবম গ্রেড (পূর্বতন প্রথম শ্রেণি) এবং দশম-১৩তম গ্রেডের (পূর্বতন দ্বিতীয় শ্রেণি) পদে সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে মেধার ভিত্তিতে এবং নবম গ্রেড (পূর্বতন প্রথম শ্রেণি) ও দশম-১৩তম গ্রেডের (পূর্বতন দ্বিতীয় শ্রেণি) পদে সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে বিদ্যমান কোটাপদ্ধতি বাতিল করার কথা জানানো হয়।
সরকারি চাকরিতে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণীর মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিল করে ২০১৮ সালের ৪ অক্টোবর জারি করা পরিপত্র সম্প্রতি অবৈধ ঘোষণা করেছেন হাইকোর্ট। এ বিষয়ে জারি করা রুল যথাযথ ঘোষণা করে বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের ও বিচারপতি খিজির হায়াতের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন