কোন অ্যাকাউন্ট থেকে জিয়া ট্রাস্টের টাকা ক্যাশ করা হয়?

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় এখন গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন: কোন অ্যাকাউন্ট থেকে ট্রাস্টের টাকা ক্যাশ করা হয়েছিল? আদালত বারবার এ প্রশ্ন রাখলেও সর্বশেষ শুনানিতে বেগম খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা কোন উত্তর দেননি। এরকম অবস্থাতেই ১০ এবং ১১ জানুয়ারি তাদের আরো যুক্ত উপস্থাপনের কথা।

মামলায় সর্বশেষ শুনানি হয় গত বৃহস্পতিবার।

ওইদিন যুক্তি উপস্থাপনের এক পর্যায়ে বেগম জিয়ার আইনজীবী এবং সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল এ জে মোহাম্মদ আলী জানান, কুয়েতের আমির জিয়াউর রহমানের নামে ট্রাস্ট করার জন্য ১২ লাখ ৫৫ হাজার ডলার দিয়েছিলেন। পঞ্চম বিশেষ জজ আদালতের বিচারক আখতারুজ্জামান তখন প্রশ্ন রাখেন: যদি টাকা দিয়ে থাকেন, তাহলে তা কোন অ্যাকাউন্টে ক্যাশ করা হয়েছে?

মোহাম্মদ আলী ওই প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে ভিন্ন প্রসঙ্গে কথা বলতে শুরু করলে তাকে থামিয়ে বিচারক বলেন: চার্জের উপর তো অনেক হয়ে গেছে। আবার আজ কেন? কোন অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা ক্যাশ করা হয়েছে আপনি সে বিষয়ে বলেন।

মোহাম্মদ আলী জবাব না দিলে খালেদার আরেক আইনজীবী আব্দুর রেজাক খান উঠে দাঁড়িয়ে বলেন, সোনালী ব্যাংকে অ্যাকাউন্ট খোলা হয়েছে। রেমিট্যান্সটা কোথা থেকে এসেছে তা তারা (প্রসিকিউশন) কৈফিয়ত দিতে পারেনি। ব্যাংকের দুইজন অফিসার এসেছিল (সাক্ষী নাম্বার ১২ ও ১৩)। সোনালী ব্যাংকের একজন লোকেরও দৃষ্টি আর্কষণ করা হয়নি যে, প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের যে ডকুমেন্টগুলো আছে সেগুলো সোনালী বাংকের কিনা। এভিডেন্সের জেরা থেকে বলছি।

‘তাহলে একটু বলুন, জেরা পরে বলুন, আপনাকে সময় দিচ্ছি, ৫৪১৬ অ্যাকাউন্ট নম্বরটা যদি না হয়ে থাকে, তাহলে আপনি বলেন, আপনারা দাবি করছেন যে ১২ লাখ ৫৫ হাজার ডলার এসেছে, এই ডিডিটা আপনারা কোন অ্যাকাউন্টে ক্যাশ করেছেন?’ বলে জানতে চান বিচারক আখতারুজ্জামান।

জবাবে রেজাক খান ‘ইউ গো বাই এভিডেন্স,’ বলে মন্তব্য করলে বিচারক বলেন: আমি এভিডেন্সের ভেতরে আছি। যখন ১২ নম্বর সাক্ষীকে আপনি রেফার করবেন, সিনিয়র, জাজমেন্ট তো আমাকে দিতে হবে, ক্ল্যারিফিকেশন আমার লাগবেই। ধরে নিলাম এটা প্রাইভেট ফান্ড। আপনারা তো বলেছেন কুয়েতের আমির ওই টাকা দিয়েছে। ওই ডিডিটা কোন অ্যাকাউন্টে ক্যাশ করেছেন?

রেজাক খান এবারও অন্য প্রসঙ্গে চলে গেলে বিচারক আখতারুজ্জামান বলেন: আমি জানতে চাইছি, কোন অ্যাকাউন্টে এই টাকা ক্যাশ করেছেন? একটা অ্যাকাউন্ট এখানে আসছে। সেটা কোনটা?”

প্রসিকিউশনের পক্ষ থেকে দেয়নি বলে রেজাক খান জানালে বিচারক বলেন: ধরেন প্রসিকিউশন পক্ষ ফেল করেছে, তারা প্রমাণ করতে ব্যর্থ হয়েছে। তাহলে আপনি কিন্তু স্ট্যান্ড নিয়েছেন যে টাকা দেওয়া হয়েছে অরফানেজ ট্রাস্টে, সে টাকাটা কোথায় ক্যাশ করেছেন?

আব্দুর রেজাক খান তখন ‘নট গিল্টি, নট গিল্টি, নট গিল্টি’ মন্তব্য করে ওই অ্যাকাউন্টের বিষয়ে কথা না বলে ভিন্ন প্রসঙ্গে চলে যান।

এভাবে বিচারকের প্রশ্নের উত্তর না মেলার মধ্যেই আগামী ১০ ও ১১ জানুয়ারি বেগম খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা আবার যুক্তি উপস্থাপন করবেন।