ক্ষতিগ্রস্ত কৃষককে ৫ হাজার টাকা করে ক্ষতিপূরণের সুপারিশ সিপিডির
ধানের ন্যায্য দাম না পাওয়া ১ কোটি ৮০ লাখ কার্ডধারী প্রত্যেক কৃষককে আসন্ন বাজেটে ৫ হাজার টাকা করে ভর্তুকি দেওয়ার সুপারিশ করেছেন, সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)‘র সম্মানীয় ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য।
মঙ্গলবার (১১ জুন) রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে ‘জাতীয় অর্থনীতির পর্যালোচনা ও আসন্ন বাজেট প্রসঙ্গ’ শীর্ষক এক অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে তিনি সুপারিশ করেন। অনুষ্ঠানে মূল প্রতিবেদন তুলে ধরেন সিপিডির সিনিয়র গবেষক তৌফিকুল ইসলাম খান। উপস্থিত ছিলেন, সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন, ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী পরিচালক ড. খোন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম।
(সিপিডি)‘র সম্মানীয় ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকদের ভর্তুকি দেওয়া ব্যবস্থা করা হলে ৯ হাজার ১০০ কোটি লাগবে। অথচ রপ্তানিখাতে ঢালাওভাবে ৫ শতাংশ প্রণোদনা দাবি করা হচ্ছে এতে লাগবে প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকা। ফলে, কৃষকদের সাড়ে ৯ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি বেশি না।
তিনি বলেন, সাম্প্রতিককালে কৃষকদের প্রতি যে অন্যায় আচরণ করেছে ইতিপূর্বে এই রকম আচরণ করা হয়নি। গ্রামীণ অর্থনীতি ভিত্তি এখন শহরে চলে আসছে। আর সেটা শহর থেকে বিদেশে চলে গেছে। এটা অব্যাহত থাকলে বাংলাদেশের কৃষকের পক্ষে আগামী দিনে টিকে থাকা সম্ভব হবে না। সরকার সময়মত ধান, চাল সংগ্রহ করেনি। আমদানি শুল্ক অনেক দেরি করে আরোপ করেছে। ফলে, অর্থনীতির এই ধরনের অব্যবস্থাপনার চিত্র অন্য কোনো খাতে করা হয়নি।
তিনি বলেন, গত জানুয়ারি মাসে অর্থমন্ত্রী বলেছেন খেলাপি ঋণ এক টাকাও বাড়বে না। অথচ তিন মাসে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ১৭ হাজার কোটি টাকা। এক টাকা বাড়বে না বলার পর ১৭ হাজার কোটি টাকার বেড়েছে।
তিনি বলেন, ব্যাংকের সুদের হার নিয়ে নাড়াচাড়া করে ব্যাংকিং খাতের সমস্যার সমাধান হবে না। এটা কাঠামোগতভাবে সুশাসন যদি আনা না যায় এবং যারা ব্যাংকের টাকা তসরুপ করেছে তাদের বিচারের আওতায় আনা না গেলে ব্যাংকিং খাতের মানুষের প্রতি আস্থার সংকট সৃষ্টি হবে। এটা কোনো দেশ ও জাতির জন্য ভালো হবে না।
সুদের হারকে নাড়াচাড়া করে যে কিছু করা যাবে না তার প্রমাণ হলো সুদের হার কমে গেলেও ব্যক্তি খাতের ঋণ প্রবাহ বাড়ছে না। এর ফলে ব্যাংকিং খাতে তারল্য সংকট সৃষ্টি হয়েছে। তারল্য চলে গেছে, ব্যাংকে কেউ টাকা রাখছে না, যারা ব্যাংক থেকে ঋণ নিচ্ছে তারাও টাকা দিচ্ছে না। এই তারল্য সংকটের সমাধান সুদের হার নিয়ন্ত্রণ করে হুকুমের অর্থনীতির মধ্যে ফেলে দিলে কোনোভাবেই সুখকর হবে না।
তিনি বলেন, কর আরোহন করতে না পারার কারণে উন্নয়ন পরিকল্পনা বাস্তবায়ন বাধাগ্রস্ত হবে। রেমিট্যান্স ও রফতানি আয় ভালো হলেও উচ্চ আমদানির কারণে লেনদেনের ঘাটতি বাড়ছে।এতে করে দেশের বৈদেশিক মজুদ দ্রুত নেমে আসছে। এটা কিছুদিন আগে ৮ মাসের আমদানি ব্যয় মেটানোর সক্ষমতায় থাকলেও এখন পাঁচ মাসে নেমে এসেছে।
এই অবস্থায় বাংলাদেশের টাকার মান অবনমন করার প্রয়োজন দেখা দিয়েছে। এরইমধ্যে ভারত ও চীন তা করেছে। আমাদের টাকার ৩ শতাংশ অবনমন করা উচিত। কারণ বর্তমানে মূলস্ফীতির হার ৫ থেকে ৬ শতাংশের মধ্যে রয়েছে। এই অবস্থায় টাকার অবনমন করা হলে মানুষের পক্ষ সহ্য করা সহজ হবে।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন