ক্ষমতার অপব্যবহারের জবাব একদিন দিতে হবে: গয়েশ্বর
সরকারকে উদ্দেশ্যে করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র বলেছেন, ক্ষমা পাওয়ার সময় পাবেন না। ক্ষমতার যত অপব্যবহার করেন, এর জবাব একদিন দিতে হবে। জবাব দিতে পারবেন কী?।
শুক্রবার (১০ মে) নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সামনে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি অয়োজিত সমাবেশ ও মিছিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
বিএনপি চেয়ারপারন খালেদা জিয়ার সুচিকিৎসা-নিঃশর্ত মুক্তি, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সব মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার এবং সব রাজবন্দীর নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে এ সমাবেশ ও মিছিল হয়।
সরকারের জনসমর্থন শূন্যের কোঠায় দাবি করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর বলেন, ‘প্রথম ধাপের উপজেলা নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি ৭ জানুয়ারির নির্বাচন থেকেও কম। তারা (সরকার) বলে, ভোট সুষ্ঠু হয়েছে। তবে যে যতটুকু পেয়েছে, সিল মেরেছে।’
এসময় গয়েশ্বর বলেন, খালেদা জিয়াসহ সবার মুক্তি চাই। শুধু তাই নয়, গণতন্ত্রের পুনরুদ্ধারের আন্দোলনে যারা কারাগারে আছেন সবার মুক্তি চাই।
ওবায়দুল কাদেরের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘ভারতই আপনাদের বাঁচিয়েছে, বেঁচে রেখেছে। ফেলানির মরদেহ যেমন কাঁটাতারে ঝুলছিল, তেমনি বাংলাদেশের স্বাধীনতা, কাঁটাতারের বেড়ায় ঝুলছে। এটা হতে দেওয়া যায় না।’
বিএনপির কর্মীরা ক্লান্ত, কিন্তু হতাশ নয় জানিয়ে তিনি বলেন, যে অত্যাচার করা হয়েছে তারপরও বুক ফুলিয়ে দাঁড়িয়ে আছে স্বাধীনতা রক্ষায়। সেটা দমনোর ক্ষমতা কারো নয়। পার্শ্ববর্তী দেশেরও নেই।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আব্দুস সালামের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনুর সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য দেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিব, যুগ্ম মহাসচিব এমরান সালেহ প্রিন্স, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু, তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল, বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেন, ছাত্রদল নেতা তৌহিদুর রহমান আউয়ালসহ অনেকে।
সমাবেশ শেষে মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। মিছিলটি বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সামনে থেকে শুরু হয়ে নাইটিঙ্গেল মোড় ঘুরে, ফকিরাপুল মোড় ঘুরে পার্টি অফিসের সামনে এসে শেষ হয়।
জনগণ কখনো এই দুঃশাসন মানবে না: রিজভী
দেশের জনগণ কখনো বর্তমান সরকারের দুঃশাসন মানবে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী।
উপজেলা নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘ডামি নির্বাচনে জনগণ অংশ নেয়নি তারপরও প্রধান নির্বাচন কমিশনার নিশ্চুপ। তিনি প্রথমে বললেন ৩৫ থেকে ৩৬ শতাংশ ভোট পড়েছে। পরে বললেন ধান কাটার জন্য ভোট কম পড়েছে। আমাদের প্রধান নির্বাচন কমিশনার উনি মাঝে মধ্য একটু সত্য কথা বলার চেষ্টা করেন। যে ধরনের জালিয়াতি শেখ হাসিনা শুরু করেছেন, জনগণ কখনো এ দুঃশাসন মেনে নেবে না। এর বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিরোধ করতে হবে।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির উদ্যোগে শুক্রবার (১০ মে) বিকেলে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ সব নেতাকর্মীদের মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে আয়োজিত সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
‘এদেশের মানুষকে স্বচ্ছল করার জন্য আমি কাজ করে যাচ্ছি’ প্রধানমন্ত্রীর এমন বক্তব্যের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘কিছুক্ষণ আগে প্রধানমন্ত্রীর একটি বক্তব্য শুনলাম। উনি বলেছেন, এদেশের মানুষকে স্বচ্ছল করার জন্য আমি কাজ করে যাচ্ছি। আমার কথা হলো প্রধানমন্ত্রী যে কথাটি বলেছেন তার সঙ্গে তো বাস্তবের কোনো মিল দেখছি না। প্রধানমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ ব্যক্তি এখন বৈশ্বিক ধনীদের তালিকায়। ফক্স নিউজের এক প্রতিবেদনে তার নাম উঠে এসেছে।
রিজভী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী আপনি কাদের স্বচ্ছল করার কথা বলছেন? ভারতের আদানি গ্রুপের বাংলাদেশে বিদ্যুৎ বিক্রি করে দশ হাজার কোটি টাকা লাভ করেছে। আর আমাদের দেশের এ গরিব মানুষেরা বিদ্যুতের দাম দিচ্ছে দুইটি ফ্যান চললে তাকে দশ হাজার টাকা পর্যন্ত বিল দিতে হচ্ছে। যদি একজন মানুষের বাসায় একটি এসি থাকে তাহলে তার বিদ্যুৎ বিল আসে ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত। এ টাকা নিয়ে যাচ্ছে ভারতের আদানি গ্রুপ। তাহলে আপনি স্বচ্ছল করছেন তো ভারতের ব্যবসায়ীদের আপনার ঘনিষ্ঠ লোকদের।
বাংলাদেশের মানুষকে আপনি স্বচ্ছল করছেন কোথায় প্রধানমন্ত্রীর কাছে এমন প্রশ্ন রেখে বিএনপির এ নেতা বলেন, ‘আমরা দেখতে পাচ্ছি ক্যাসিনো খুলছে আপনার যুবলীগের নেতারা, ঢাকা শহরে ৪৫ থেকে ৫০ টি ক্যাসিনো খোলা হয়েছে আবার আজকে দেখছি অনলাইন জুয়াতেই হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার হয়ে যাচ্ছে বিদেশে এরাও ক্ষমতাসীনদের ঘনিষ্ঠ। এটা পৃথিবীর বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা যারা ফিনান্সিয়াল ইনভেস্টিগেশন করেন তাদের বক্তব্য।আপনিতো স্বচ্ছল করছেন জুয়াড়িদের। ছাত্রলীগ, যুবলীগকে। আপনার জেলার এক ছাত্রলীগ নেতা ২ হাজার কোটি টাকা পাচার করে। এ হচ্ছে আপনার স্বচ্ছলতার নিদর্শন।
ডলারের দাম বাড়ানোর সমালোচনা করে রিজভী বলেন, ‘একদিনে ডলারের দাম ৭ টাকা বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এক ডলারের দাম এখন ১১৭ টাকা। কয়েকদিন আগেই ছিল ১১০ টাকা। আমাদের শুধু শিল্পের যন্ত্রপাতি নয়, আদা, রসুন, পেঁয়াজ আমদানি করতে হয়- এসব আমদানিতে ডলার লাগে। আপনি গরিব মানুষকে আরও গরিব করছেন তাদের পদদলিত করছেন।
উপজেলা নির্বাচনের প্রসঙ্গ টেনে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব বলেন, ‘দেশে আরেকটি ডামি নির্বাচন হচ্ছে এ নির্বাচন নিয়ে আমাদের কথা বলার নেই। জালিয়াতির নির্বাচন বর্জন করায় এ সমাবেশ থেকে কোটি কোটি মানুষকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সালামের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক রফিকুল আলম মজনুর সঞ্চালনায় সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়।
এ সময় বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবুল খায়ের ভূইয়া, হাবিবুর রহমান হাবিব, যুগ্ম-মহাসচিব সৈয়দ মুয়াজ্জেম হোসেন আলাল, খায়রুল কবির খোকন, সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, আব্দুস সালাম আজাদ, তথ্য বিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক সায়েদুল আলম বাবুল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন