আটক-২, পলাতক-১

খাগড়াছড়িতে অপহরণের চাঞ্চল্যকর ঘটনা, সেনা অভিযানে চতুর্থ শ্রেণির অপহৃত শিক্ষার্থী উদ্ধার

খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলাতে এক অপহরণের চাঞ্চল্যকর ঘটনায় সেনা অভিযানে চতুর্থ শ্রেণির অপহৃত শিক্ষার্থী উদ্ধার করেছে। অপহরণের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ২জনকে আটক, একজন পলাতক রয়েছে।

সেনাবাহিনীর দ্রæুত পদক্ষেপে জীবন বাঁচলো ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজের চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী আল রাফি(১১)-এর। খাগড়াছড়ি সদর জোন কর্তৃক ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজ খাগড়াছড়ি এর অপহরণকৃত এক শিক্ষার্থীকে উদ্ধার করেছে সেনাবাহিনী।

রোববার (৩১শে আগষ্ট) সকাল সাড়ে ১১টার দিকে খাগড়াছড়ি ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজ এর চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্র আল রাফি(১১)কে খাগড়াছড়ি সদরের চেঙ্গী স্কয়ার হতে অপহরণ করে একদল অজ্ঞাতনামা অপহরণকারী।

ঘটনাটি ঘটে, রোববার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে। আল রাফি প্রতিদিনের মতো স্কুল শেষে বাড়ি ফেরার পথে খাগড়াছড়ি সদর উপজেলার চেঙ্গী স্কয়ার এলাকা থেকে একদল অজ্ঞাতনামা সন্ত্রাসীরা তাকে অপহরণ করে নিয়ে যায়।

খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই খাগড়াছড়ি সেনা জোন অপহৃত শিক্ষার্থীকে উদ্ধারে তৎপর হয়ে ওঠে। খাগড়াছড়ি জোনের সেনাবাহিনী অপহৃত শিক্ষার্থীকে উদ্ধার অভিযানে নামে। এরপর পানছড়ি আর্মি ক্যাম্পের ক্যাম্প কমান্ডার ক্যাপ্টেন মাহফুজুল ইসলাম এর নেতৃত্বে একটি সি-টাইপ টহল দল বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে পানছড়ি মোল্লাপাড়া ব্রিজ সংলগ্ন এলাকায় অভিযান চালায়।

খাগড়াছড়ি সদর উপজেলার মোহাম্মদপুর এলাকার বাসিন্দা আব্দুল রহিম এর ছেলে বাদশা মিয়া নামের এক অপহরণকারীসহ অপহরণকৃত শিক্ষার্থীকে উদ্ধার করে। সেখানে থেকে অপহৃত শিক্ষার্থীকে জীবিত উদ্ধার করা হয় এবং বাদশা মিয়া নামে একজন অপহরণকারীকে আটক করা হয়।

পরবর্তীতে অপহরণকারী বাদশা মিয়ার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে পানছড়ি বাজার হতে খাগড়াছড়ি জেলার পানছড়ি উপজেলার ইটখোলা এলাকার বাসিন্দা মৃত হানিফ হোসেন ছেলে কামরুল ইসলাম নামের আরো ১জন অপহরণকারীকে আটক করে।

উদ্ধার অভিযানের সাফল্যের পরে রাঁত ১০টার সময় খাগড়াছড়ি সদর জোন হতে অপহরণকারীদেরকে খাগড়াছড়ি সদর থানার হস্থান্তর করা হয়েছে।

তবে এ ঘটনার মূল হোতা আব্দুল মালেক মিয়া(ডাকনাম মালু) এখনও পলাতক। তাকে আটকের জন্য খাগড়াছড়ি সদর জোনের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

অপহরণকারীদের পরিচয়: আব্দুল মালেক মিয়া ওরফে মালু(পলাতক), পিতা-আব্দুল মান্নান, মাতা-কহিনুর বেগম, প্রাম-মোহাম্মদপুর, খাগড়াছড়ি সদর। বাদশা মিয়া(২৮), পিতা-আব্দুল রহিম, মাতা-রাবেয়া খাতুন, গ্রাম-মোহাম্মদপুর, খাগড়াছড়ি সদর।

কামরুল হাসান(২৩), পিতা-হানিফ হোসেন, মাতা-মনোয়ারা বেগম, গ্রাম-ইটাখোলা, পানছড়ি, খাগড়াছড়ি।
এ বিষয়ে খাগড়াছড়ি সদর থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) মো: আব্দুল বাতেন মৃধা জানান, আটককৃতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে এবং পলাতক আসামিকে ধরতে অভিযান চলমান রয়েছে।

স্থানীয়রা জানান, সেনাবাহিনীর এই দ্রæুত ও সফল অভিযানে এলাকায় স্বস্তি ফিরেছে। অপহরণের ঘটনাটি জানাজানি হওয়ার পর থেকে পুরো এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছিল।

উলেখ্য, অপহরণের ঘটনার সাথে জড়িত মূল পরিকল্পনাকারী খাগড়াছড়ি সদরের মোহাম্মদপুর গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল মান্নান এর ছেলে আব্দুল মালেক মিয়া(মালু) এখনো পলাতক রয়েছে। তাকে আটকের জন্য খাগড়াছড়ি সদর জোনের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
এর আগে ৬ পর্যটককে অপহরণ ও মুক্তিপণ আদায়ের ঘটনায় বিএনপি’র জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের চার নেতাকর্মীদেরকে আটক হয়েছেন।

গত শুক্রবার(২৯শে আগস্ট ২০২৫) বিকেলে মাটিরাঙ্গা জোনের সেনা সদস্যরা তাদেরকে আটক করে মাটিরাঙ্গা থানায় হস্তান্তর করে বলে জানা যায়।