খাগড়াছড়িতে আ.লীগ-বিএনপি সংঘর্ষে সাংবাদিকদের ওপর হামলার নিন্দা ও প্রতিবাদ

খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলাতে আ.লীগ-বিএনপি সংঘর্ষে’র ঘটনায় সাংবাদিকদের ওপর হামলার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে পেশাজীবি সংবাদকর্মীরা।

খাগড়াছড়ি প্রেসক্লাব’র প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ও খাগড়াছড়ি সাংবাদিক ইউনিয়ন(কেইউজে)-এর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি সিনিয়র সাংবাদিক মো: নুরুল আজম’র ওপর মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে জেলা শহরের পৌরসভার সামনে সংঘটিত রক্তক্ষয়ী হামলা এবং তাঁকে মধ্যযুগীয় কায়দায় গুরুতর জখম করায় খাগড়াছড়ি প্রেস ক্লাব, খাগড়াছড়ি রিপোটার্স ইউনিটি, বাংলাদেশ প্রেস ক্লাব, কেইউজে, সাংবাদিক ফোরাম তীব্র নিন্দা এবং প্রতিবাদ জ্ঞাপন করেছে।

মঙ্গলবার সন্ধ্যায় নিজ নিজ সংগঠনে’র আদালত সড়কস্থ কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক জরুরী সভায় নিন্দা প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়। সংগঠনের নিজস্ব অনুসন্ধানে প্রত্যক্ষদর্শী এবং হাসপাতালে চিকিৎসাধীন সাংবাদিক নুরুল আজম’র বয়ানে উঠে এসেছে; তিনি মূলত: শিক্ষানবিশ আইনজীবি ইকু চাকমাকে বিএনপি’র উচ্ছৃঙ্খল কর্মীরা লাঠিসোটা দিয়ে আঘাত করতে থাকলে ইকু মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। মাটিতে লুটিয়ে পড়ার পরও দুর্বৃত্তরা উপুর্যপরি তাঁকে লাথি ও টানাহেঁচড়া করতে থাকলে তাঁকে বাঁচাতে এগিয়ে যান সিনিয়র সাংবাদিক নুরুল আজম।

এসময় সন্ত্রাসীরা নুরুল আজম’র মানবিক ভূমিকাকে উপেক্ষা করে তাঁর ওপরও একই স্টাইলে হামলা শুরু করলে তিনিও মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। এসময় তাঁর মাথায় জখম হওয়া স্থান থেকে ফিনকি দিয়ে রক্ত বেরোতে থাকলে সন্ত্রাসীরা তাঁকে মাটিতে ফেলে চলে যান।

সংগঠনে’র যৌথ বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, গণতান্ত্রিক সমাজে পেশাজীবি হিসেবে যে কারো নিজস্ব রাজনৈতিক মত প্রকাশ-চর্চা এবং অনুশীলনের অধিকার আমাদের সংবিধান স্বীকৃত। তাই বলে একজন প্রতিষ্ঠিত পেশাজীবি সাংবাদিকের ওপর দিনে দুপুরে এমন ন্যাক্কারজনক হামলা খাগড়াছড়ি পেশাগত সাংবাদিকদের ভীষণ আতঙ্কিত করেছে।

এছাড়া মঙ্গলবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত থেমে থেমে সংঘর্ষ চলাকালে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ থেকে রক্ষা পেতে ডেইলী নিউ এজ ডিস্ট্রিক করসপন্ডেন্ট চাইথোয়াই মারমাসহ বেশ কিছু পুলিশ দোকানে ঢুকে প্রানে আশ্রয় নেওয়ার পরও গ্রীল দরজায় লাঠি-সোঠা দিয়ে ভাংচুর, ভীতি সংচার করে। যমুনা টিভি’র স্টাফ করসপন্ডেন্ট শাহরিয়ার ইউনুস, চ্যানেল টুয়েন্টফোর’র প্রতিনিধি নুরুচ্ছাফা মানিক, এশিয়ান টিভি’র বিপ্লব তালুকদার, পার্বত্যনিউজ’র জ্যাক ত্রিপুরা, ক্যামেরা পারসন অভি বড়ুয়া, ফটো জার্নালিস্ট লিটন ভট্টাচার্য্য রানাসহ বেশ কয়েকজন সংবাদকর্মী পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে বিএনপি-আওয়ামীলীগের সংঘর্ষের চিত্র ধারণ করতে গিয়ে নানাভাবে শারীরিক ও মানসিক হেনস্থার শিকার হয়েছেন।

খাগড়াছড়ি পেশাজীবি সংবাদিকদের এই ধরনের সংঘাতময় রাজনৈতিক কর্মসূচির মাধ্যমে জনগণের জানমালের নিরাপত্তা বিঘ্ন থেকে বিরত এবং কর্মসূচি চলাকালে সাংবাদিকদের প্রতি দায়িত্বশীল আচরণ অনুসরণের আহ্বান জানান। পাশাপাশি সংঘাতপূর্ণ সময়ে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতিও সাংবাদিকদের সাথে ইতিবাচক মনোভাব প্রকাশের অনুরোধ জানান।

খাগড়াছড়ি প্রেস ক্লাবে’র সভাপতি জীতেন বড়ুয়া, সম্পাদক মো: আবু তাহের, খাগড়াছড়ি রিপোটার্স ইউনিটির সভাপতি চাইথোয়াই মারমা, পার্বত্য প্রেস ক্লাবে’র সভাপতি মো: জুলহাজ উদ্দিন, সাংবাদিক ইউনিয়ন সভাপতি প্রদীপ চৌধুরী, সা. সম্পাদক, সৈকত দেওয়ান, বাংলাদেশ প্রেস ক্লাবের খাগড়াছড়ি জেলা শাখার সভাপতি দেব প্রসাদ ত্রিপুরা, সাংবাদিক ফোরামে’র সভাপতি ইব্রাহিম শেখ প্রমূখ।