খাগড়াছড়িতে জাতি বৈচিত্র্য ইনস্টিটিউট প্রস্তাবনা বাতিল ও আদিবাসী স্বীকৃতির আড়ালে ষড়যন্ত্র বন্ধের দাবি

খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলায় জাতি বৈচিত্র্য ইনস্টিটিউট প্রস্তাবনা বাতিল ও আদিবাসী স্বীকৃতির আড়ালে ষড়যন্ত্র বন্ধের দাবি জানিয়েছে পিসিসিপি।

প্রস্তাবিত ‘জাতি বৈচিত্র্য ইনস্টিটিউট অধ্যাদেশ ২০২৫’ বাতিলের দাবি জানিয়েছে বাংগালী সম্প্রদায় ভিত্তিক সংগঠন পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদ(পিসিসিপি)। একইসঙ্গে সংগঠনটি ‘আদিবাসী’ স্বীকৃতির আড়ালে পরিচালিত গোপন ষড়যন্ত্র বন্ধে রাষ্ট্রীয় হস্তক্ষেপ ও কঠোর পদক্ষেপ দাবি করেছে।

শনিবার (২৮ জুন) খাগড়াছড়ি প্রেস ক্লাবে এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে এ দাবিগুলো তুলে ধরে পিসিসিপি’র খাগড়াছড়ি জেলা শাখা।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন জেলা সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম। তিনি অভিযোগ করেন, ২৩শে জুন সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের আন্ত:মন্ত্রণালয় সভায় ‘ক্ষুদ্র-নৃ-গোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান আইন, ২০১০’ সংশোধনের নামে যে অধ্যাদেশের খসড়া প্রস্তাব করা হয়েছে, তা একতরফা এবং সাংবিধানিক কাঠামোর পরিপন্থী।

জাতি বৈচিত্র্য ইনস্টিটিউট’ প্রস্তাবনা বাতিল ও আদিবাসী স্বীকৃতির আড়ালে ষড়যন্ত্র বন্ধের দাবি পিসিসিপির।
তিনি বলেন, প্রস্তাবিত আইনে সাতটি সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউটের নাম পরিবর্তন করে ‘জাতি বৈচিত্র্য ইনস্টিটিউট’ করার পাশাপাশি পরিচালনা পর্ষদের ছয় সদস্যকেই কেবলমাত্র ক্ষুদ-নৃ-গোষ্ঠী থেকে মনোনয়নের যে ধারা রাখা হয়েছে, তা বাঙালি জনগোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক প্রতিনিধিত্ব হরণ করার শামিল।

এ ধরনের প্রস্তাব সংবিধানের ৬(২) অনুচ্ছেদ বিরোধী বলেও দাবি করেন তিনি।

পিসিসিপি নেতারা অভিযোগ করেন, সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরওয়ার ফারুকী ও পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমার ভূমিকা পক্ষপাতমূলক ও উদ্দেশ্য প্রণোদিত। তারা বলেন, মন্ত্রণালয়ের বাজেট বরাদ্দের ৯০শতাংশ একটি নির্দিষ্ট গোষ্ঠীকে দিয়ে দেওয়া হয়েছে, যা ঘোরতর বৈষম্যের উদাহরণ।

সংবাদ সম্মেলনে পিসিসিপির পক্ষ থেকে চার দফা দাবি জানানো হয়-১. প্রস্তাবিত ‘জাতি বৈচিত্র্য ইনস্টিটিউট অধ্যাদেশ ২০২৫’ বাতিল। ২. পরিচালনা পর্ষদে কেবল ক্ষুদ্র-নৃ-গোষ্ঠী সদস্য মনোনয়নের বিধান প্রত্যাহার। ৩. উপদেষ্টাদের বিতর্কিত ভূমিকার তদন্ত ও ব্যবস্থা। ৪. বাজেট বরাদ্দের বৈষম্য নিরসনে নিরপেক্ষ তদন্ত ও পুনর্বিন্যাস।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো: আব্দুল মজিদ, পিসিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সাধারণ সম্পাদক শাহাদাৎ হোসেন, পিসিসিপির সদর উপজেলা সভাপতি তরিকুল ইসলাম রাইহান, প্রচার সম্পাদক রিয়াদুল ইসলাম রিয়াদ এবং দপ্তর সম্পাদক সাইফুল ইসলাম জুনায়েদ।

পিসিসিপি মনে করে এ ধরনের একপাক্ষিক ও বিভাজনমূলক উদ্যোগ বন্ধ না হলে পার্বত্য চট্টগ্রামের দীর্ঘদিনের সহাবস্থান ও শান্তি প্রক্রিয়া মারাত্মক হুমকির মুখে পড়বে।