খাগড়াছড়িতে হৃদয় ছোঁয়া সন্ধ্যায় কবি-সাহিত্যিকদের আড্ডায় জেলা শহর

খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলাতে হৃদয় ছোঁয়া সন্ধ্যায় কবি-সাহিত্যিকদের আড্ডায় জেলা শহর। শুক্রবার (১লা আগস্ট) সন্ধ্যায় খাগড়াছড়ি জেলা সাহিত্য পরিষদের আয়োজনে জেলা সদরের পৌর টাউন হলস্থ কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত হলো এক অসাধারণ সাহিত্য আড্ডা।
যেখানে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় ও স্থানীয় পর্যায়ের প্রথিতযশা কবি, সাহিত্যিক ও সংস্কৃতিচর্চাকারীরা। শব্দের জাদু, ভাবনার বুনন, আর কবিতার স্পন্দনে মুখরিত হয়ে উঠেছিল অনন্য এই আয়োজন।
সাহিত্য-সংস্কৃতির এই অনন্য আয়োজনে সভাপতিত্ব করেন জেলা সাহিত্য পরিষদের সভাপতি প্রফেসর ড. বোধিসত্ত¡ দেওয়ান। অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রখ্যাত কবি ও সাংবাদিক হাফিজ রশিদ খান এবং খ্যাতিমান সাহিত্যিক সৈয়দ মঞ্জুর মোর্শেদ। পুরো আয়োজনটি প্রাণবন্ত ভাবে সঞ্চালনা করেন পরিষদের গবেষণা সম্পাদক মথুরা বিকাশ ত্রিপুরা।
এই সাহিত্য আড্ডায় কবিতা পাঠ, মুক্তচিন্তার আলোচনায় উঠে আসে পাহাড়, প্রকৃতি, মানুষের বেঁচে থাকা ও সমাজ-রাজনীতির নানান অনুষঙ্গ। সাহিত্যিকদের বক্তব্যে ধ্বনিত হয় ভাষা, সংস্কৃতি, আত্মপরিচয় ও জাতীয় চেতনার বার্তা।
এ সাহিত্য আড্ডায় কবি ও সাহিত্যিক অতিথিরা বলেন, “সাহিত্য হলো আত্মার অন্বেষণ। যখন আমরা কবিতা লিখি বা গল্প বলি, তখন আমরা আমাদের অস্তিত্বের গভীরে এক ধরনের আলো জ্বালিয়ে দিই, যা কেবল পাঠকের মনকেই নয়, গোটা সমাজকেও আলোকিত করে।
তারা আরও বলেন, খাগড়াছড়ির সাহিত্যচর্চা আজ জাতীয় পর্যায়ে দৃষ্টান্ত হয়ে উঠছে। এই শহরের মানুষ শব্দ দিয়ে, স্বপ্ন দিয়ে পাহাড় গড়ে।”
আড্ডায় অংশ নেন জেলা সাহিত্য পরিষদের সহ-সভাপতি ও খাগড়াছড়ি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক ধর্মরাজ বড়ুয়া, জেলা তথ্য কর্মকর্তা মো: বেলায়েত হোসেন, জেলা সাহিত্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ইউসুফ আদনানসহ আরও অনেক লেখক, কবি, প্রাবন্ধিক ও সংস্কৃতিকর্মী।
তাঁদের কথায় উঠে আসে সাহিত্যকে কেন্দ্র করে পার্বত্য চট্টগ্রামে যে সামাজিক বন্ধন ও মেধা বিনিময়ের জায়গা তৈরি হয়েছে, তা আজ একটি আলোর বাতিঘর হয়ে উঠছে নতুন প্রজন্মের জন্য।
আড্ডার শেষাংশে কবিতা পাঠ, গল্প পাঠ ও মুক্ত অনুভূতির শৈল্পিক প্রকাশ দর্শকদের মধ্যে এনে দেয় এক অনন্য সাহিত্যিক তৃপ্তি।
অনেকেই মনে করেন, এমন আয়োজন শুধুই বিনোদন নয়, বরং মননের জাগরণ ও সাংস্কৃতিক প্রতিবাদও বটে।
প্রসঙ্গত, খাগড়াছড়ি জেলা সাহিত্য পরিষদ দীর্ঘদিন ধরেই স্থানীয় সাহিত্যচর্চায় এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছে। পাহাড়ের নানা প্রান্তে বসে যারা হৃদয়ে বহন করেন ভাষার শিল্প, তাদের স্বর ও সৃষ্টিকে তুলে ধরাই এই পরিষদের মূল লক্ষ্য।
এই সাহিত্য আড্ডাটি হয়ে উঠেছে যেন সময়ের উপাখ্যান, যেখানে শব্দ ছিল প্রেম, পাঠ ছিল প্রতিরোধ, আর কবিতা ছিল এক অন্তহীন যাত্রার দিগন্ত।

এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন