খাগড়াছড়ির ঝুলন্ত তরুণ ছাত্রকে গুলি করা সেই অভিযুক্ত পুলিশ কর্মকর্তা গ্রেপ্তার

খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা দীঘিনালা উপজেলার ঢাকা রামপুরায় ছাদে ঝুলন্ত তরুণ ছাত্রকে গুলি করার সেই অভিযুক্ত পুলিশ কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। জুলাইয়ে বিপ্লবে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে ঢাকার রামপুরায় একটি ভবনের ছাদে ঝুলে থাকা শিক্ষার্থীকে গুলি করার ঘটনায় আলোচিত পুলিশের সহকারী উপ-পরিদর্শক(এএসআই) চঞ্চল চন্দ্র সরকারকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

জুলাই-আগস্ট বিপ্লবে ঢাকার রামপুরায় ছাদে ঝুলন্ত তরুণ আমীর হোসেনকে (১৮) গুলি ঘটনায় অভিযুক্ত পুলিশের এএসআই চঞ্চল সরকারকে খাগড়াছড়ি দীঘিনালা থেকে গ্রেফতার করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।

রোববার (২৬ ফেব্রুয়ারী) রাত সাড়ে ৯টার দিকে খাগড়াছড়ি সদর থানার পুলিশের সহযোগিতায় আর্ন্তজাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের সহকারী এটর্নি জেনারেল তানভির হাসান জোহার’র নেতৃত্বে খাগড়াছড়ি পুলিশের সহযোগিতায় ঢাকা থেকে আসা পুলিশের একটি টিম দীঘিনালা থানা থেকে গ্রেফতার করে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন খাগড়াছড়ি পুলিশ সুপার মো: আরেফিন জুয়েল।

জানা যায়, রোববার (২৬ জানুয়ারি) খাগড়াছড়ির দীঘিনালা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা থেকে আসা পুলিশের একটি বিশেষ ইউনিট। এএসআই চঞ্চল চন্দ্র সরকারকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দীঘিনালা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) মো: জাকারিয়া।

তবে তিনি(ওসি) বলেন, সে তো পলাতক আসামি না! সে(চঞ্চল সরকার) আমাদের দীঘিনালা থানায় কর্মরত ছিলো সে ৭ই নভেম্বর ২৪সাল থেকে আজ পর্যন্ত কর্মরত ছিলো, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্যাইব্যানাল এর বিশেষ একটি টিম থানা পুলিশের সহযোগিতায় আটক করে।

তিনি আরো জানান, চঞ্চল সরকার ২০২৪সালে ৭ই নভেম্বর দীঘিনালা উপ-পুলিশ পরিদর্শক(এএসআই) হিসাবে যোগদান করেন।

খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার পুলিশ সুপার মো: আরেফিন জুয়েল জানান, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল তানভীর হাসান জোহা এর নেতৃত্বে খাগড়াছড়ি পুলিশের সহযোগিতায় একটি টিম দীঘিনালায় অভিযান পরিচালনা করে। এসময় পুলিশের সহযোগিতায় তাকে গ্রেফতার করে। তাকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের উদ্দেশ্যে ঢাকা নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

ঘটনার বিবরনে জানা গেছে, গত বছরের ১৯শে জুলাই আমির হোসেন(১৮) কাজ থেকে ফেরার পথে গুলাগুলি সংর্ঘষের মুখে পড়েন। আত্মরক্ষার্থে রামপুর থানার পাশের ওই নির্মাণাধীন ভবনে আশ্রয় নেন। পুলিশে ধাওয়া খেয়ে এক পর্যায় ভবনে একটি রডের সঙ্গে ঝুলে থাকেন। সেই ভবনে গিয়ে ঝুলন্ত অবস্থায় হোসেনকে অন্তত ৬রাউন্ড করে পুলিশ। তার শরীরে ৬টি গুলি লাগে। মারা গেছে ভেবে পুলিশ চলে যায়। অন্তত: ৩ঘন্টা ঝুলে থাকার কয়েকজন শিক্ষার্থী তাকে উদ্বার করে হাসপাতালে ভর্তি করে।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বাঞ্জারামপুর থানার দুলারামপুর গ্রামের অটোরিকশা চালক বিল্লাল মিয়ার ছেলে আমির হোসেন। চার ভাই বোনের মধ্যে আমির তৃতীয়। পেশায় কফি শপের কর্মী আমির রাজধানীর রামপুরা থানার মেরাদিয়া এলাকায় বড় ভাই নয়ন মিয়ার সঙ্গে বসবাস করতেন।

উল্লেখ্য, ঘটনাটি ঘটে গত ১৯শে জুলাই ২০২৪খ্রি:। ঢাকার রামপুরার মেরাদিয়া এলাকার নির্মাণাধীন একটি ভবনে। ভুক্তভোগী তরুণের নাম আমির হোসেন(১৮)। তার গ্রামের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়। ঢাকায় ফুফুর বাসায় থেকে কাজ করতেন রামপুরার একটি রেস্তোরাঁয়। সেদিন ঘটনায় অবশ্য তিনি বেঁচে গিয়েছিলেন।