খাগড়াছড়ির টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজে পাহাড়ি শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা
খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজে পাহাড়ি শিক্ষার্থীদের ওপর সেটলারদের হামলা হয়েছে। এতে টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজে পাহাড়ি শিক্ষার্থীদের ওপর একদল সেটলার বাঙালি হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এতে কয়েকজন পাহাড়ি শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। এলাকায় বসতিদের আতংক বিরাজ করেছে। এ ঘটনার অতিরিক্ত পুলিশ ও সেনা বাহিনী তহল জোরদার করা হয়েছে। গত সোমবার (৯ ডিসেম্বর) বিকেল সাড়ে ৩টায় এ ঘটনা ঘটে।
ঘটনার বিবরনে জানা যায়, টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজের সেটলার বাঙালি শিক্ষার্থীরা বেশ কিছুদিন ধরে পাহাড়ি শিক্ষার্থীদের নানাভাবে হেনস্তা করে আসছে। সোমবার বিকেল সাড়ে ৩টার সময় ক্লাস-পরীক্ষা শেষে পাহাড়ি শিক্ষার্থীরা বাড়ি যাওয়ার জন্য বের হলে মূল গেটের বাইরে অবস্থানরত কয়েকজন সেটলার শিক্ষার্থী পাহাড়ি শিক্ষার্থীদের ডেকে আবারো হেনস্তা করতে থাকলে পাহাড়ি শিক্ষার্থীরা তাতে প্রতিবাদ জানায়।
এতে উভয়ের মধ্যে কিছুটা কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে সেটলার শিক্ষার্থীরা আরো কয়েকজন সেটলার বাঙালিকে তাদের সাথে যুক্ত করে। পরে ১০-১৫জন সেটলার বাঙালি রামদা, ছুরি, লাঠিসোটা দিয়ে পাহাড়ি শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায় ও ধাওয়া করে।
হামলায় ৮ম শ্রেণির এক শিক্ষার্থীসহ কয়েকজন পাহাড়ি শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
খাগড়াছড়ি সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) মো: আব্দুল বাতেন মৃধা ঘটনা সত্যতা স্বীকার করে জানান, যেহেতু এর আগেও অনেক ঘটনার তদন্ত চলছে। সেটিসহ গুরত্ব সহকারে ঘটনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
এর আগে খাগড়াছড়ি টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষক আবুল হাসনাত মুহাম্মদ সোহেল রানাকে (৪৯) পাহাড়ি শিক্ষার্থীরা পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় মামলা করা হয়েছে। মামলায় প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার্থীসহ ১০জনের নাম উল্লেখ করে আরো ৪-৫শ’ জনকে অজ্ঞাত আসামী দেখানো হয়েছে।
খাগড়াছড়ি সদর থানায় বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন এসআই মিজানুর রহমান। মামলায় এজাহারভুক্ত আসামিরা হলেন, নিমন্ত ত্রিপুরা(২২), টুনশু চাকমা সজিব চাকমা(১৯), প্রনয় চাকমা(১৯), কোষ চাকমা(২১), টিনটু চাকমা(১৯), অ¤øন ত্রিপুরা(২০), আইকন চাকমা(২০), নিউটন মারমা(২০) ও অনিল চাকমা(১৯)।
এরমধ্যে সজিব চাকমা, প্রনয় চাকমা ও কোষ চাকমা টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষার্থী। খাগড়াছড়ি সদর থানার ওসি আবদুল বাতেন মৃধা মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে আসামিদের গ্রেফতারে চেষ্টা চলছে বলে জানান।
উল্লেখ, গত ১লা অক্টোবর একই প্রতিষ্ঠানের ৭ম শ্রেণির ত্রিপুরা এক শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগ এনে পাহাড়ি শিক্ষার্থীরা খাগড়াছড়ি টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজের ইন্সট্রাক্টর ও বিভাগীয় প্রধান শিক্ষক আবুল হাসনাত মুহাম্মদ সোহেল রানাকে পিটিয়ে হত্যা করে।
এ ঘটনার জেরে শহরে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। চলে সংর্ঘষ, ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে বিকাল ৩টা থেকে খাগড়াছড়ি সদর উপজেলা ও পৌর শহরে অনির্দিষ্টকালের জন্য ১৪৪ধারা জারি করে জেলা প্রশাসন।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন