খাগড়াছড়ির দীঘিনালায় বিজিবি’র সভা : সীমান্ত দিয়ে অনুপ্রবেশ করতে দেয়া হবে না

খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলায় দীঘিনালা উপজেলায় ৭বিজিবি’র জনসচেতনতা মূলক সভা করেছে নিরাপত্তা বাহিনী। এতে কোন ক্রমে সীমান্ত দিয়ে অনুপ্রবেশ করতে দেয়া হবেনা। সীমান্তের অতন্দ্র প্রহরী বিজিবি সীমান্ত রক্ষা পাশাপাশি এলাকার অভ্যন্তরিক আইন শৃঙ্খলা বদ্ধ পরিকর।

খাগড়াছড়ি দীঘিনালা বাবুছড়া ব্যাটালিয়ন ৭বিজিবি পক্ষ থেকে জনজচেতনতা মূলক সভা করেছে।

বৃহস্পতিবার (৮ মে ২০২৫) সকাল ১১টায় বাবুছড়া ইউনিয়ন পরিষদ সম্মেলন কক্ষে বাবুছড়া ব্যাটালিয়ন ৭বিজিবি আয়োজনে জনসচেতনতা মূলক সভা অনুষ্ঠিত হয়।

বাবুছড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গগন বিকাশ চাকমা সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন বাবুছড়া ব্যাটালিয়ন (৭বিজিবি) এর সহকারী পরিচালক এডি মো: হুমায়ন করিম।

জনসচেতনতা মূলক সভায় এডি মো: হুমায়ন করিম বলেন, সীমান্তের অতন্দ্র প্রহরী বিজিবি সীমান্ত রক্ষা পাশাপাশি এলাকার অভ্যন্তরিক আইন শৃঙ্খলা বদ্ধ পরিকর। সকল স¤প্রদায়ের জনগোষ্ঠি ঐক্যবন্ধ বজায় রেখে আইনশৃঙ্খলা, সীমান্ত অপরাধ, চোরাচালান ও মাদক পাচার প্রতিরোধ সকলে সচেতন থাকতে হবে।

বিশ্বে কোন দেশের সাথে কোন দেশ যুদ্ধ লাগলে তা সকল দেশের মধ্যে প্রভাব পড়ে। আমরা যুদ্ধ চাই না বিশ্ব শান্তি চাই। ভারত-পাকিস্কান মধ্যে যে উত্তেজনা পূর্বক যে যুদ্ধ শুরু হয়েছে। তাকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশে যেন কোন ভারতীয় নাগরিক অনুপ্রবেশ করতে না পারে আইন শৃংখলা বাহিনী তৎপর আছে।

এলাকায় যদি কোন পরিচিত লোক সন্দেহ হয় আপনারা আইন শৃংখলা বাহিনীকে খবর দিবেন। আর কোন ধরনের কান কথা/গুজব কথায় কান দিবেন না, গুজব কথা ছড়াবেন না। আমরা সবাই বাংলাদেশে নাগরিক সবাই বাংলাদেশী দেশকে ভালোবেশে সাম্প্রদায়িক-সম্প্রীতি বজায় রাখতে সকলে মিলেমিসে কাজ করতে হবে। জনসচেতনতা মূলক উপস্থিত ছিলেন জনপ্রতিনিধি, সাংবাদিক, হেডম্যান, কার্বারী সহ সুশীল সমাজের ব্যক্তিবর্গরা।

বুধবার(৭ই মে) ভোরে জোরপূর্বক তাদেরকে বাংলাদেশে প্রবেশ করানো হয়। তবে এ ব্যাপারে বিস্তারিত কিছু জানা সম্ভব হয়নি। বুধবার ভোরে জেলার মাটিরাঙ্গা উপজেলার গুমতি ইউনিয়নের দক্ষিন শান্তিপুর সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেন ৩টি পরিবারের আনুমানিক ২৭জন ভারতীয় নাগরিক। এদের মধ্যে অধিকাংশই নারী ও শিশু।

সীমান্ত পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে ভারতীয় নাগরিকরা উঠেন সীমান্তবর্তী জনৈক আবু তাহের এর বাড়িতে।

স্থানীয় বাসিন্দা আবু তাহের ভারতীয়দের উদ্বৃতি দিয়ে জানান, ‘তাদেরকে ভারতের গুজরাট থেকে ত্রিপুরায় নিয়ে আসে বিএসএফ সদস্যরা। পরে সেখান থেকে গভীর রাতে কাটাতারের বেড়া পার করে ছেড়ে দিয়ে যায় তারা। ভোরে আজানের শব্দ শুনে তারা বাংলাদেশে প্রবেশ করে তার বাড়িতে আশ্রয় নেয়। পরে সকালে তাদেরকে স্থানীয় ইউপি সদস্যের বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়।

’আবু তাহের জানান, বর্তমানে ভারতীয় নাগরিকরা আবুল হোসেন মেম্বারের বাড়িতে রয়েছেন। এছাড়া যামিনী পাড়ার ২৩বিজিবি ব্যাটালিয়নের আওতাধীন মাটিরাঙ্গা তাইন্দং বিওপি’র সীমান্তবর্তী এলাকা দিয়ে ২২জন ভারতীয়(গুজরাট রাজ্যের) মুসলিম নাগরিক মাটিরাঙ্গা অনুপ্রবেশ করে বলে জানা যায়।

এছাড়াও খাগড়াছড়ির ৩২বিজিবি ব্যাটালিয়নের আওতাধীন পানছড়ি রুপসেনপাড়া বিওপি’র সীমান্তবর্তী এলাকা দিয়ে ৩০জন ভারতীয়(গুজরাট রাজ্যের) মুসলিম নাগরিক পানছড়ি উপজেলায় অনুপ্রবেশ করে বলে জানা যায়।
এসব নাগরিকদের পূর্ব পুরুষরা বাংলাদেশী নাগরিক ছিলেন এমন অজুহাত দেখিয়ে তাদেরকে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করানো হচ্ছে বলে জানা যায়।

বাংলাদেশে যারা অনুপ্রবেশ করেছে তাদের সাথে আরও ৪০০ থেকে ৫০০জন ভারতীয় মুসলিম বিএসএফের তত্ত¡াবধানে রয়েছে বলে জানা যায়। তাদেরকে বিএসএফ কর্তৃক খেদাছড়া, যামিনীপাড়া, খাগড়াছড়ি ও পানছড়ি সীমান্তবর্তী এলাকা দিয়ে বাংলাদেশে পুশ ইন করা করা হতে পারে।

এ ভারতীয় মুসলিম নাগরিকদের বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করার জন্য গুজরাট রাজ্য হতে বিমানযোগে ত্রিপুরা রাজ্যে নিয়ে আসা হয়েছে বলে জানা যায়। এ ব্যাপারে এখনো বিজিবি বা প্রশাসনের কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

খাগড়াছড়ি দায়িত্ব প্রাপ্ত ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক নাজমুন আরা সুলতানা জানান, মাটিরাঙ্গা ও পানছড়ি সীমান্তে জন ৭৯অনুপ্রবেশ করেছে। তারা বিজিবি হেফাজতে দায়িত্বে আছেন। ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।সমাধান না হওয়া পর্যন্ত তাদের খাওয়ানো থাকার ব্যবস্থা করবে প্রশাসন।

উল্লেখ্য, উপজেলা ২টি সীমান্ত দিয়ে ৭৯জন ভারতীয় নাগরিককে বাংলাদেশে পুশ করেছে বিএসএফ। বুধবার(৭ই মে)ভোরে জেলার মাটিরাঙ্গা ও পানছড়ি উপজেলার কয়েকটি সীমান্ত পয়েন্ট দিয়ে ৭৯জন ভারতীয় নাগরিককে বাংলাদেশে পুশ করেছে বিএসএফ।