খাগড়াছড়ির দু’টি উপজেলার হ্রদে মাছ ধরা বন্ধ হওয়ায় ঠিকমতো চলছেনা জেলেদের সংসার

খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা মহালছড়ি ও দীঘিনালার দু’টি উপজেলায় হ্রদে মাছ ধরা বন্ধ হওয়ায় ঠিকমতো চলছেনা জেলেদের সংসার। প্রজনন মৌসুমে কাপ্তাই লেকে মৎস আহরণ বন্ধ থাকায় কর্মহীন হয়ে পড়েছে জেলার মহালছড়ি ও দীঘিনালার প্রায় ৪হাজারের বেশি জেলে।

কর্মহীন জেলেদের প্রতি মাসে ভিজিএফ কর্মসূচির আওতায় মাত্র ২০কেজি চাল বরাদ্দ দিয়েছে সরকার। তবে জেলেদের দাবি সরকারি এ সহায়তা পর্যাপ্ত পরিমান মতো নয়। অপ্রতুল বরাদ্দের কথা স্বীকার করে আরও বাড়ানোর জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে চিঠি দিয়েছে স্থানীয় বাংলাদেশ মৎস উন্নয়ন কর্পোরেশন।

কাপ্তাই লেকে মাছ ধরে খাগড়াছড়ির মহালছড়ি ও দীঘিনালা উপজেলার প্রায় ৪হাজার জেলে পরিবারের সংসার চলে। মে থেকে জুলাই পর্যন্ত প্রজনন মৌসুম হওয়ায় কাপ্তাই লেকে মাছ ধরা বন্ধ থাকে। এসময় জেলেরা বেকার হয়ে পড়ে। কর্মহীন ও দুস্থ জেলেদের খাদ্য সহায়তা প্রদান করছে সরকার। পরিবার প্রতি দেয়া হয় মাত্র ২০কেজি চাল। জেলেদের দাবি সরকারিভাবে পাওয়া রেশন পর্যাপ্ত নয়। ২০কেজি চাল দিয়ে ৫দিনের বেশি চলে না। চাল পেলেও অন্যান্য খাদ্য সামগ্রী জোগাড় করতে হিমশিম খাচ্ছে তারা।

স্থানীয় জেলেরা জানান, আমাদের পরিবারের সদস্য ৮ থেকে ১৪জন। সরকার ২০কেজি চাল দেয়। এটা দিয়ে আমাদের ৪-৫দিন সংসার চলে। মাসের বাকি দিনগুলি আমাদের খেয়ে, না খেয়ে থাকতে হয়। সরকারিভাবে রেশনের পরিমাণ বৃদ্ধির দাবি জানান মৎসজীবী নেতারা।

মাছ ব্যবসায়ী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো: আবুল খায়ের বলেন, জেলেরা সারা বছর মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করে। বছরে মে থেকে জুলাই তিন মাস মাছ ধরা বন্ধ থাকে। এই সময়টাতে জেলেরা খুব কষ্টে থাকে। সরকার যদি জেলেদের আর্থিক প্রণোদনা দেয়, তাহলে জেলেরা কোন রকমে বেঁচে থাকতে পারবে।

জানা যায়, জেলেদের জন্য বরাদ্দকৃত চাল অপ্রতুল বলে স্বীকার করেছে স্থানীয় মৎস উন্নয়ন কর্পোরেশন। বরাদ্দ বৃদ্ধির জন্য বাংলাদেশ মৎসউন্নয়ন কর্পোরেশনের চেয়ারম্যানকে চিঠি দেয়া হয়েছে।

মহালছড়ি হ্রদ মৎস্য উন্নয়ন ও বিপণন উপকেন্দ্র’র প্রধান মো: নাসরুল্লা জানান, জেলেদের পরিবার প্রতি ২০কেজি চাল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এটা আমাদের কাছে অপ্রতুল মনে হয়েছে। জেলেদের বরাদ্দ বাড়িয়ে ২০কেজির পরিবর্তে ৩০কেজি চাল বরাদ্দের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে চিঠি দেয়া হয়েছে।

তথ্যানুযায়ী ২০২১-২২অর্থ বছরে খাগড়াছড়ির মহালছড়ি উপকেন্দ্রে মৎস আহরণ থেকে রাজস্ব আদায় হযেছে প্রায ৭৮লাখ টাকা।