খাগড়াছড়ির পানছড়িতে ইসকনের তৎপরতায় ক্ষুব্ধ পাহাড়ের বাসিন্দারা

খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার পানছড়ি উপজেলায় প্রশাসনিক অনুমোদন ছাড়াই ইসকনের একটি পরিত্যক্ত প্রচার কেন্দ্র ও কীর্তন মন্দিরের পুনঃনির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হলে স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগের ভিত্তিতে নির্মাণ কাজ স্থগিত করে বিজিবি। এতে ইসকনের তৎপরতায় ক্ষুব্ধ পাহাড়ের বাসিন্দারা।
গত রোববার (২৭ এপ্রিল) ও শনিবার(২৬শে এপ্রিল) সকাল ১০টায় ৩বিজিবি’র পানছড়ি ব্যাটালিয়ন সদর দপ্তর হতে প্রায় ২০০গজ পশ্চিমে অবস্থিত আদি ত্রিপুরা পাড়ায় ইসকন কমিটির সভাপতি সুকান্ত চক্রবর্তীর নেতৃত্বে ৮জন থেকে ১০জন সদস্য নির্মাণকাজ শুরু করেন।
নির্মাণের বিষয়ে স্থানীয়দের মধ্যে উদ্বেগ সৃষ্টি হলে তারা পানছড়ি ব্যাটালিয়নের নিকট অভিযোগ জানান।
তারই অভিযোগের প্রেক্ষিতে বিজিবি নির্মাণকাজ পরিচালনাকারী ব্যক্তিদের কাছে উপজেলা প্রশাসনের অনুমতি ও জমির বৈধ কাগজপত্র প্রদর্শনের অনুরোধ জানায়।
তবে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দেখাতে ব্যর্থ হন বলে জানা গেছে। ফলে শান্তি-শৃঙ্খলা অক্ষুন্ন রাখার স্বার্থে কাজটি আপাতত বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়। বর্তমানে সংশ্লিষ্ট স্থানটিতে নির্মাণকাজ বন্ধ রয়েছে। প্রশাসনিক অনুমতি নিযে আসার জন্য বলা হয়েছে।
স্থানীয় ও এলাকাবাসীর সূত্রে জানা যায়, পানছড়ি উপজেলায় হিন্দু সম্প্রদায়ের মোট জনসংখ্যা ১৪,৭৪০জন এবং ১০টি মন্দির রয়েছে। বিজিবি ও অন্যান্য প্রশাসনিক সংস্থার সাথে স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের দীর্ঘদিনের সুসম্পর্ক বিদ্যমান।
এ বিষয়ে হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিদের সাথে যোগাযোগ করা হলে তারা জানান, ইসকন প্রচার কেন্দ্রের পুনঃনির্মাণ সম্পর্কে তারা অবগত ছিলেন না।
এদিকে সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো মনে করছে, পানছড়ি উপজেলায় ইসকনের নিজস্ব কোনো প্রচার কমিটি নেই। সনাতনী ধর্মাবলম্বীদের একটি ক্ষুদ্র অংশ ইসকনের অনুসারী।
ধারণা করা হচ্ছে, স্থানীয়ভাবে ইসকনের অনুসারী সংখ্যা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ও তাদের গোপনীয় কর্মকান্ড জোরদার করার উদ্দেশ্যে এ পুনঃনির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
অন্যদিকে পানছড়ি এলাকায় পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি(পিসিজেএসএস-সন্তু) ও ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট(ইউপিডিএফ-প্রসিত) গ্রæপের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বৈরিতা বিরাজ করছে।
এছাড়াও পানছড়ি সীমান্তবর্তী এলাকাগুলো দিয়ে ভারত থেকে অবৈধ অস্ত্র ও গোলাবারুদ চোরাচালানের তথ্য রয়েছে। এ ধরনের বাস্তবতায়, স্থানীয় পরিবেশ ও স্থিতিশীলতা অক্ষুণ্ণ রাখার স্বার্থে পরিত্যক্ত মন্দির নতুন স্থাপনার উদ্যোগ সতর্কতার সাথে পর্যবেক্ষণে রাখার প্রয়োজনীয়তার কথা এলাকাবাসী উল্লেখ করেছে। তাই তারা বিজিবি’র দারস্থ হয়েছেন।
পানছড়ি আদি ত্রিপুরা পাড়ায় ইসকন কমিটির সভাপতি সুকান্ত চক্রবর্তী জানান, ইসকনের একটি আন্তজাতিক সংস্থা মাধ্যমে সার্বজনীন সনাতন ধর্মালম্বীদের প্রচার কেন্দ্র ও কীর্তন মন্দিরের পুনঃনির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়।
তবে স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগটি সম্পুর্ন মিথ্যা অপবাদ ভিত্তিতে নির্মাণ কাজ স্থগিত করা অহেতুক হয়রানি ও উদ্দেশ্য প্রনোদিত। ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের এ রকম ন্যাক্কারজনক আচরন করা কারো সমুচিত নয়। এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন।

এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন