খাগড়াছড়ির পানছড়িতে খর্বকায় প্রতিবন্ধীর নলেন ত্রিপুরা সফল পানচাষী

খাগড়াছড়ি-পার্বত্য জেলার পানছড়ি উপজেলায় এক খর্বকায় প্রতিবন্ধীর নাম পানচাষী নলেন বিকাশ ত্রিপুরা (৩৮)। তিনি উপজেলার ১নং লোগাং ইউনিয়ন পরিষদের রামতনু পাড়ার অমৃত লাল কার্বারীর সন্তান। নলেন বিকাশ ত্রিপুরার উচ্চতা তিন ফিটেরও একটু কম।

খর্বকায় হলেও তিনি এলাকায় নিজেকে গড়ে তুলেছেন একজন সফল পানচাষী হিসেবে। ছোট বেলা থেকেই অদম্য ইচ্ছাশক্তি আর পরিশ্রমের ফলে সমাজের বোঝা না হয়ে তিনি আজ প্রতিষ্ঠিত সফল পান চাষী।

পানছড়ি উপজলার ১নং লোগাং ইউনিয়ন পরিষদের আঁকা-বাঁকা মেঠো পথ আর বাঁশের সাঁকো পার হয়ে দুর্গম রামতনু পাড়ার বাড়িতে গেলে দেখা মিলে নলেন বিকাশ ত্রিপুরার। গামছা পরে দা হাতে গুটি গুটি পায়ে পানের বরজে যাওয়ার প্রস্তুুতি নিচ্ছিল নলেন। এই প্রতিবেদকের সাথে যতক্ষন তিনি কথা বলছিলেন ততক্ষন ছিলেন হাসিখুশি।

শুনালেন জীবনের গল্প। দীর্ঘদিন তিনি ছিলেন পান ব্যবসার সাথে সরাসরি জড়িত। পরবর্তীতে পাহাড়ের ডালুতে নিজের জায়গাতেই গড়ে তোলেন দুটি দৃষ্টিনন্দন পানবরজ। বিগত দশ বছর ধরে বরজে পানের লতা চাষ করেন তিনি। যা পান চাষীরা বীজ হিসেবে নিয়ে যায়। প্রায় আশি শতক জায়গার দুটো বরজে বর্তমানে রয়েছে প্রায় সাত হাজার পানের লতা। প্রতিটি লতা দারুণভাবে জড়িয়ে আছে বাঁশের কঞ্চিতে।

এরি মাঝে প্রথম দফায় প্রায় লক্ষাধিক টাকার লতা বিক্রি করেছেন বলে জানালেন। দুই সন্তানের জনক নলেন বিকাশ ত্রিপুরা, বাবা অমৃত লাল কার্বারী ও তাঁর সহধর্মিনী মিলেই বরজের পরিচর্চার কাজগুলো করেন। পান চাষ করেই তিনি স্বাবলম্বী বলে জানালেন।

নলেনের বাবা অমৃত লাল কার্বারী জানালেন, ছেলে খর্বকায় প্রতিবন্ধী হলেও সে খুব কাজ কওে এবং অত্যন্ত পরিশ্রমী। পানছড়ি জুড়ে সে একজন সফল পান চাষী।

খাগড়াছড়ি জেলা প্রতিবন্ধী অফিসার মো: শাহজাহান জানান, প্রতিবন্ধীরা সমাজের বোঝা নয়। বিভিন্ন প্রশিক্ষন আর সহায়তা পেলে তারাও সমাজের অনন্য স্বাবলম্বী মানুষের মতো নিজেরা স্বাবলম্বী হয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে পারবে। যার জলন্ত উদাহরণ প্রতিবন্ধী নলেন বিকাশ ত্রিপুরা। সমাজকল্যাণ মন্ত্রনালয় নলেনের পাশে সব সময় ছিল ভবিষ্যতেও থাকবে।