খাগড়াছড়ির পানছড়িতে পিসিজেএসএস-ইউপিডিএফ গোলাগুলি, পরিস্থিতি থমথমে

খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার পানছড়ি উপজেলাতে পার্বত্য চট্টগ্রামা জনসংহতি সমিতি(পিসিজেএসএস)-ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট(ইউপিডিএফ) গোলাগুলি ঘটনায় এলাকার পরিস্থিতি থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।

জেলার পানছড়ির লোগাং ইউনিয়নের হারুবিল ও দুধুকছড়া সীমানা আদম এলাকায় মঙ্গলবার (২৭ মে) পিসিজেএসএস (সন্তু গ্রুপ) ও ইউপিডিএফ(প্রসীত গ্রæুপ) এর মধ্যে এক ভয়াবহ গোলাগুলির ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় সূত্র ও প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে জানা যায়, উভয় পক্ষ প্রায় ১৫মিনিট অধিক ধরে টানা গোলাগুলি করে, যাতে অন্তত: চারজন আহত হয়। আহতদের পরিচয় ও অবস্থা তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি।

ঘটনার তীব্রতায় পার্শ্ববর্তী বসত ঘর, গাছপালা ও গুদাম ঘরে গুলির চিহ্ন পাওয়া গেছে। এক ঘরের জানালার গøাস গুলিতে চূর্ণ হয়ে যায় এবং একটি গুদাম ঘর বৃষ্টির মতো গুলিতে বিদ্ধ হয়। উল্লেখ্য এর আগের দিন অর্থাৎ সোমবার(২৬শে মে) রাতে প্রায় ১০ থেকে ১২ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোঁড়া হয়। স্থানীয়রা ধারণা করছেন, এটি ছিল পূর্ব পরিকল্পিত আতঙ্ক সৃষ্টির অংশ।

সূত্রের মতে, সোমবার(২৬ মে)র ফাঁকা গুলির ঘটনার পরদিন ইউপিডিএফ-এর একটি ঘাঁটিতে আকস্মিকভাবে আক্রমণ চালায় পিসিজেএসএস।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গোলাগুলির সময় আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে গ্রামবাসীরা দিকবিদিক ছুটে পালিয়ে যায়। ঘটনাটির প্রভাব এতটাই গভীর যে হারুবিল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ক্লাস বন্ধ রাখতে হয়েছে। এলাকার বাতাস এখনো থমথমে এবং ভয়ের ছায়া ছড়িয়ে রয়েছে সর্বত্র।
এদিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ইউপিডিএফ ও পিসিজেএসএস-এর কর্মী ও সমর্থকরা পরস্পরবিরোধী মন্তব্য ও তথ্য ছড়িয়ে দিচ্ছে।

কেউ কেউ আহত বা নিহতের সংখ্যা বাড়িয়ে বলছে, আবার কেউ একে অপরকে দোষারোপ করছে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত ভাবে।

আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি সূত্র জানিয়েছে, “হারুবিল, সীমানা আদাম দুর্গম এলাকা হওয়ায় সঠিকভাবে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণ সম্ভব হয়নি। তবে গোলাগুলির খবর পেয়েছি এবং পরিস্থিতির দিকে নজর রাখছি।

ওই এলাকায় পিসিজেএসএস ও ইউপিডিএফ-এর মাঝে দীর্ঘদিন ধরেই আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বিরোধ চলছে, যা মাঝে মাঝেই সশস্ত্র সংঘর্ষে রূপ নেয়।”

স্থানীয়দের দাবি, দ্রæুত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতা বৃদ্ধি ও সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণে কার্যকর পদক্ষেপ না নিলে ভবিষ্যতে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করতে পারে।

পানছড়ি থানা অফিসার ইনচার্জ(ওসি) মো: জসিম উদ্দিন ঘটনা সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, ঘটনাটি অত্যন্ত দুর্ঘম ও সীমান্তবর্তী এলাকা। পিসিজেএসএস ও ইউপিডিএফ-এর মাঝে প্রায় গুলাগুলি লেগে থাকে। দীর্ঘদিন ধরেই আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল। যা মাঝে মাঝেই সশস্ত্র সংঘর্ষে ঘটনায় হতাহত হয়ে থাকে।