খাগড়াছড়ির প্রধান সড়কের জায়গা দখল, অভিযোগ অনুসন্ধানে মাঠে নেমেছে দুদক

খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলাতে প্রধান সড়কের জায়গা দখল করে স্থাপনা নির্মাণ মিথ্যা অভিযোগ অনুসন্ধানে মাঠে নেমেছে দুদক টিম। জেলাতে সড়কের জায়গা দখল করে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান করার অভিযোগ পেয়ে তা অনুসন্ধানে মাঠে নেমেছে দুর্নীতি দমন কমিশন। এতে প্রতিহিংসা ও মিথ্যা প্রাথমিক তদন্তে দুদক মিথ্যা প্রমান পায়।

মঙ্গলবার (১৭ জুন) দুপুরে সদরের চেঙ্গী ব্রীজ সংলগ্ন খাগড়াছড়ি-চট্টগ্রাম আঞ্চলিক প্রধান সড়কের পাশে একটি রেস্টুরেন্টে এ অভিযান চালায় দুদক রাঙামাটি সমন্বিত কার্যালয়।

এ সময় দুদকের রাঙামাটি কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক আহমদ ফরহাদ হোসেন, খাগড়াছড়ি সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মাকসুদুর রহমান এবং অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠানের মালিক কেমী চাকমা, অভিযুক্ত স্বামী খাগড়াছড়ি স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী তৃপ্তি শংকর চাকমা উপস্থিত ছিলেন।

দুদক জানায়, সড়কের জায়গা দখল করে ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান করা হয়েছে এমন অভিযোগ পান হটলাইনে। ৩জন বিশিষ্টি সদস্যের একটি দল অভিযানে গিয়ে খোঁজ খবর নেন। তেমন সত্যতা না পাওয়ায় প্রাথমিক যাচাই-বাছাই করে পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়া হবে জানিয়েছে সহকারী পরিচালক আহমদ ফরহাদ হোসেন।

খাগড়াছড়ি সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মাকসুদুর রহমান জানান, সড়কের জায়গা দখল করে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের জন্য অভিযুক্তদের নোটিশ দেয়া হচ্ছে। এটি চলমান প্রক্রিয়া।

দুদকের অভিযান প্রসঙ্গে বলেন, অংশীদার হিসেবে সড়ক বিভাগকে অবগত করেন দুদক। রেস্টুরেন্টে অভিযানের বিষয়টা স্বীকার করে নির্বাহী প্রকৌশলী বলেন, হটলাইনে অভিযোগ পেয়ে সেখানে সরেজমিনে খোঁজ খবর নিতে যান দুদক। দখলের ব্যাপারে রেস্টুরেন্ট মালিকের যুক্তির বিষয়টিও দেখবে দুদক।

তবে সড়কের জায়গা দখল করে রেস্টুরেন্ট গড়ে তোলার বিষয়ে দুদক অনুসন্ধানে আসলে তা খতিয়ে দেখছে তারা। রেস্টুরেন্ট মালিকের যুক্তির বিষয়েও বিবেচনা করে দেখবে দুদক। এছাড়া, সার্ভে করে সড়কের জায়গা দখল উদ্ধারসহ অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে দেখবে স্থানীয় প্রশাসন।

অভিযুক্ত রেস্টুরেন্টের মালিক কেমি চাকমা জানান, আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল তারা। একইসাথে সড়কের উভয় পাশের জায়গার সঠিকভাবে পরিমাপ ও নির্ধারণ করার তথ্য বা রিপোর্ট পেলে তাদের প্রতিষ্ঠানের বাড়তি অংশ কতোটুকু তা সরিয়ে নিতে সহজ হবে।

অভিযুক্ত স্বামী এলজিইডি’র নির্বাহী প্রকৌশলী তৃপ্তি শংকর চাকমা জানান, হিংসা ও শত্রæুতামূলক যে কেউ মিথ্যা অভিযোগ দিতে পারে। আমরা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। আমাদের নিজস্ব রেকর্ডিয় জায়গায় সরকারি নিয়ম-কানুন মেনে অবকাঠামো রেস্টুরেন্ট নির্মান করেছি। সড়ক থেকে নির্ধারিত জায়গাটি রেখে অবকাঠামো নির্মান করা হয়েছে।

সার্ভে জরিপ আইন অনুযায়ী যতটুকু রাস্তার অংশ ততটুকু জায়গা রেখে রেষ্টুরেন্ট করা হয়েছে। তাতেও কেউ যদি মিথ্যা অভিযাগ দেয়, সেটি সড়ক আইন অনুযায়ী সঠিক ব্যবস্থা গ্রহন করবে এটাই প্রত্যাশা।

এদিকে চেঙ্গী ব্রীজ সংলগ্ন খাগড়াছড়ি-চট্টগ্রাম আঞ্চলিক প্রধান সড়কের জায়গা দখল করে সরাকারি-বেসরকারী সংস্থার প্রতিষ্টান। জেলা প্রশাসনে হাতির কবর অবকাঠামো নির্মান, গাড়ির গ্যারেজ ইত্যাদি।

চেংগী নদীর পাথর ভরাতের যেমন দখলসহ রাস্তা দখলের মধ্য রয়েছে বাংলাদেশ পর্যটন কর্র্পোরেশনের হোটেল পর্যটন মোটেল, বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী প্রশিক্ষন কেন্দ্র গেইট, রেস্টরেন্ট, মসজিদ নির্মান, হোটেল গ্রীণ স্টার নামে বহুতল ভবন গড়ে তোলার অভিযোগ থাকলেও সেখানে যাননি দুদক ও সড়ক বিভাগ।

তবে হোটেলটির মালিক পলাতক জেলা আওয়ামীলীগের নেতা এবং খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের সদস্য কল্যাণ মিত্র বড়ুয়ার। তাঁর মালিকানাধীন এ হোটেলটি গড়ে তোলার সময় পতিত সরকারের প্রভাব বিস্তার করে সড়কের জায়গা দখল এবং পাহাড় কাটার অভিযোগ উঠে। দীর্ঘদিনের অভিযোগ থাকলেও এখন পর্যন্ত কোনধরনের তৎপরতা জেলা আ’লীগ নেতা কল্যাণ মিত্র বড়ুয়ার বিরুদ্ধে।