খাগড়াছড়ির মহালছড়িতে নানা আয়োজনে স্মরণ করা হলো মানবেন্দ্র লারমাকে

খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার মহালছড়ি উপজেলায় মুবাছড়ি ইউনিয়ন খুলারাম পাড়া উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে এম এন লারমা ৪২তম মৃত্যুবার্ষিকী পালিত হয়েছে।

সোমবার (১০ই নভেম্বর) সকাল ১০টা সময়ে কর্মসূচী অনুযায়ী কালোব্যাজ ধারণ ও বিভিন্ন উপজেলা থেকে আগত হাজারো কর্মী, সমর্থক ও স্থানীয় নারী পুরুষের অংশগ্রহনের মধ্য দিয়ে পৃথক পৃথক ব্যানার এবং পুস্প স্তবক নিয়ে ধনপুদি বাজার থেকে প্রভাতফেরী শুরু হয়ে মুবাছড়ি রাধামন স্পোর্টিং ক্লাব এর মাঠে এসে এমএন লারমার শহীদ বেদীতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।

পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে রাধামন স্পোর্টিং ক্লাব এর মাঠে এমএন লারমার স্মরণে স্মরণ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির মহালছড়ি থানা শাখার সভাপতি নীল রঞ্জন চাকমার সঞ্চালিত স্মরণ সভায় সুভাষ কান্তি চাকমার সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, এমএন লারমা সমর্থিত পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি বিমল কান্তি চাকমা।

স্মরণ সভায় শোক প্রস্তাব পাঠ করেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম জন সংহতি সমিতি কেন্দ্রীয় কমিটির মহিলা বিষয়ক সম্পাদক কাকলী খীসা। স্বাগত বক্তব্য রাখেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির কেন্দ্রীয় সহ সাধারণ সম্পাদক সুদর্শন চাকমা। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, পিসিজেএসএস কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক অংশুমান চাকমা।

পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক নিশান চাকমা, শান্তি বিজয় চাকমা শান্ত, শান্তি কুমার চাকমা, মল্লিকা চাকমা, অমর চাকমা, প্রীতি চাকমা প্রমূখ।

এমএন লারমা আজ থেকে ৪২বছর আগে ১৯৮৩সালের ১০ই নভেম্বর গভীর রাতে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতিরই মধ্যে থাকা রাজনৈতিক উচ্চাভিলাষী, বিশ্বাসঘাতক, বিভেদপন্থী চক্রের অতর্কিত সশস্ত্র হামলায় গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যুবরণ করেন।

পাহাড়ি জনগণের অত্যন্ত প্রিয়জন, নিপীড়িত মানুষের পরম বন্ধু, পাহাড়ি-বাঙালি সকল সম্প্রদায়ের কাছে অত্যন্ত শ্রদ্ধেয় অবিসংবাদিত এই নেতা এমএন লারমা। তাঁর এই মর্মান্তিক মৃত্যুতে সমগ্র জাতিগোষ্ঠী বিশ্বের অধিকারকামী জনগণের অপূরণীয় ক্ষতি সাধিত হয়।

এই ঘটনায় এম এন লারমাসহ শহীদ হয়েছেন। আপন বড় ভাই সহযোদ্ধা শুভেন্দু প্রবাস লারমা(তুফান), সহযোদ্ধা অপর্ণাচরণ চাকমা(সৈকত), অমর কান্তি চাকমা(মিশুক), পরিমল বিকাশ চাকমা(রিপন), মনিময় দেওয়ান(স্বাগত), কল্যাণময় খীসা(জুনি), সন্তোষময় চাকমা(সৌমিত্র) ও অর্জুন ত্রিপুরা(অর্জুন)।

উল্লেখ্য, সাবেক এমপি মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমা ছিলেন বাংলাদেশের একজন বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ এবং পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর অধিকার আন্দোলনের একজন অগ্রগণ্য নেতা। তিনি ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির(পিসিজেএসএস) প্রতিষ্ঠাতা। ১৯৭৯সালে বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন।