খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলায় রামগড় উপজেলা সড়কে ভয়াবহ বাস দুর্ঘটনায় ৯জন যাত্রী আহত হয়েছে।

মঙ্গলবার (২৪শে জুন) ভোর সাড়ে ৫টার দিকে এই দুর্ঘটনাটি ঘটে। তবে অনেক যাত্রী প্রানে রক্ষা পায়।

যাত্রীদের অভিযোগ চালক শুরু থেকে খুবই বেপরোয়া ভাবে বাসটি রাফ চালাছিলেন। জেলার রামগড় উপজেলার মাহবুবনগরে শান্তি পরিবহনের একটি নৈশকোচ গভীর খাদে পড়ে ভয়াবহ দুর্ঘটনার শিকার হয়েছে। এতে অন্তত: ৯জন যাত্রী আহত হয়েছেন।

আহতদের মধ্যে রয়েছেন– খাগড়াছড়ির জাহেদা আক্তার(৩৮), হাজেরা আক্তার(২৮), শিশু রেদোয়ার(৭), মুন্সিগঞ্জের নজরুল ইসলাম(৪২), খোরশেদ আলম(৫২), তানিয়া আক্তার(২২), বাসের সুপারভাইজার আজাদ হোসেন(৩৬) ও হেলপার রমজান আলী(৪৫)। এদের মধ্যে দুর্ঘটনা কবলিত ২জনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

স্থানীয় ও প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে জানা যায়, ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা বাসটি রামগড়ের মাহবুবনগরে পৌঁছালে চালক সম্ভবত ঘুমিয়ে পড়েন এবং নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেন। মুহূর্তেই বাসটি রাস্তা থেকে ছিটকে পড়ে যায় পাশের গভীর খাদে।
আহত যাত্রী তানিয়া বলেন, ’চালক শুরু থেকে খুবই বেপরোয়া ছিলেন। পথেই একবার ট্রাকের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়, কিন্তু তখন কেউ আহত হয়নি। আমরা বারবার বলেছিলাম, সাবধানে চালাতে, কিন্তু চালক শোনেননি।’

বাসের অধিকাংশ যাত্রীরা অভিযোগ করেন, সোমবার রাত ১১টা ৪০মিনিটে ঢাকা থেকে ছেড়ে আসার পর থেকেই চালক বেপরোয়া গতিতে বাস চালাচ্ছিলেন। পথে মুন্সিগঞ্জ এলাকায় একটি ট্রাকের সঙ্গে সংঘষের ঘটনাও ঘটে। এ সময় যাত্রীরা চালককে বারবার সতর্ক করলেও তিনি তা উপেক্ষা করেন।

আহত যাত্রী মো: ইব্রাহিম বলেন, “এর আগেও একবার দুর্ঘটনা হতে হতে বেঁচে যাই। চালক পুরোটা সময়ই গাফিলতি করছিলেন।”

আরেক যাত্রী নজরুল ইসলাম অভিযোগ করে বলেন, “দুর্ঘটনার সময় চালক ঘুমাচ্ছিলেন বলে মনে হয়েছে।”
বাসে আরেক যাত্রী বলেন, ‘সবাই ঘুমে ছিল, হঠাৎ বিকট শব্দ আর ধাক্কায় ঘুম ভেঙে যায়। তারপর দেখি বাসটা খাদে পড়ে গেছে।’

দুর্ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গেই স্থানীয়রা ছুটে এসে আহতদের উদ্ধার কাজ শুরু করেন। পরে পুলিশ, সেনা বাহিনী, বিজিবি ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা এসে দ্রæুত অভিযান চালিয়ে আহতদের জালিয়াপাড়া বিজিবি হাসপাতালে পাঠান।

আহত যাত্রীদের মধ্যে রয়েছেন নজরুল ইসলাম, বাস হেলপার রমজান আলী, তানিয়া, হাজেরা বেগম, বাস সুপারভাইজার আজাদ, জাহিদা আক্তার, মো: রেজওয়ান, খোরশেদ আলম এবং মো: ইব্রাহিম। এর মধ্যে দুজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাঁদের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।

রামগড় থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) মোহাম্মদ মঈন উদ্দীন জানান, ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা শান্তি পরিবহনের দ্রæুতগতির বাসটি রাস্তার পাশের প্রায় ১০০ফুট গভীর খাদে পড়ে যায়। দুর্ঘটনার পর স্থানীয় বাসিন্দারা দ্রæুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে আহতদের উদ্ধার করেন। পরে পুলিশ, সেনাবাহিনী, ফায়ার সার্ভিস ও বিজিবির সদস্যরাও উদ্ধার অভিযানে অংশ নেয়।

রামগড় থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) মোহাম্মদ মঈন উদ্দীন আরো বলেন, ‘আমরা দ্রæুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধার ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছি। বাসটি উদ্ধার করে পুলিশের হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। চালক পালিয়ে গেছে, তাঁকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।’