খাগড়াছড়ির সীমান্তবর্তী রামগড় চা বাগানের ভেতরেই করাতকল
খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার সীমান্তবর্তী রামগড় চা বাগানের ভেতরেই বেআইনী ভাবে স্থাপিত করাতকল রয়েছে। ফটিকছড়ির উত্তরে অবস্থিত রামগড় চা বাগানের ভেতরেই গড়ে উঠেছে অবৈধ করাত কল, অথচ বাগানের এক কিলোমিটারের মধ্যে করাত কল স্থাপনের নিয়ম নেই। অভিযোগ রয়েছে বাগান ব্যবস্থাপক জয়নাল আবেদীনের সার্বিক তত্ত্বাবধানে সরকারি নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে চা বাগানের মধ্যে প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে রাতে কিংবা দিনে নিয়ন্ত্রণহীনভাবে চলছে ছায়াবৃক্ষ কর্তন এবং কাঠ চেরাই।
জানা গেছে, বন বিভাগের আইন অনুযায়ী সংরক্ষিত, রক্ষিত, অর্পিত অন্য যে কোন ধরনের সরকারী বন ভূমির সীমানা হইতে ১০কিলোমিটার অথবা বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক স্থল সীমানা(সীমান্ত এলাকা) হইতে ৫কিলোমিটারের মধ্যে(পৌর এলাকা ব্যতীত) কোন স্থানে করাত কল স্থাপন বা পরিচালনা করার আইন নেই। কিন্তুু আন্তর্জাতিক সীমানা থেকে এক কিলোমিটারের মধ্যে এবং রামগড় চা বাগানের ভেতরেই এই করাতকল স্থাপন করা হয়েছে।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, রামগড় চা বাগানের ভেতরেই অবস্থিত এই অবৈধ করাত কল। যা সীমান্ত থেকে এক কিলোমিটারের ও কম দূরত্বে অবস্থিত। অবৈধ করাত কলে গাছ চেরাইয়ের জন্য কিছু গাছ ফেলা রাখা হয়েছে। তাছাড়াও করাত কলের আশেপাশে অন্তত ৫০-৭০টি চেরাই গাছ রাখা হয়েছে। ফটিকছড়ির রামগড় চা বাগান কর্তৃপক্ষ বাংলাদেশ টি বোর্ড এবং বন বিভাগের পূর্বানুমতি ছাড়াই বাগানের বিভিন্ন টিলার ব্যাপক পরিমাণ বড় বড় পুরাতন ছায়াবৃক্ষ কাটছে। প্রতিনিয়ত ছায়াবৃক্ষ কেটে এই করাত কলে গাছ চেরাই করার অভিযোগ উঠেছে।
এছাড়াও গত বছরের মাঝামাঝিতে কয়েকটি জাতীয় গণমাধ্যমে রামগড় চা বাগানের ৩ ও ২৮নম্বর সেকশন থেকে ৬টি বিশালাকৃতির ছায়াবৃক্ষ গাছ বাইরে পাচার করার অভিযোগে প্রতিবেদন প্রকাশ হয়। শ্রমিকদের বাঁধা সত্তেও হেয়াকো বাজারে ‘মা টিম্বার’ ফার্নিচার দোকানে ১লাখ ৮০হাজার টাকায় বিক্রি করে। বাগান ব্যবস্থাপক জয়নাল আবেদীনের সার্বিক তত্ত্বাবধানে এই গাছ গুলো কাটা হয় এবং চেরাই করা হয়। গতবছর গাছ কাটার ব্যাপারে জানতে জয়নাল আবেদীনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তখন তিনি দাম্ভিকতার স্বরে জানিয়েছিলেন বাগান মালিকের নির্দেশে গাছ কেটেছেন। অসুবিধা কী? এখানে শ্রমিকদের বাধা দেওয়ার কী আছে? বরং গাছ গুলো চা-বাগানের জন্য ক্ষতিকর।
রামগড় চা বাগানে করাত কলের অনুমোদন আছে কিনা জানতে যোগাযোগ করা হলে বাগানের ব্যবস্থাপক মো: জয়নাল আবেদীন কোন মন্তব্য করতে অনীহা প্রকাশ করে দ্রুত টেলিফোনের লাইন কেটে দেন। পরে একাধিকবার ফোন করলেও তাকে আর পাওয়া যায়নি।
চট্টগ্রাম উত্তর বন বিভাগ করেরহাটের সহকারী বন সংরক্ষক(এসিএফ) জামিল মোহাম্মদ খান বলেন, রামগড় চা বাগানে করাত কলের কোন অনুমোদন নাই। এটা বেআইনী।
চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক(রাজস্ব)মাসুদ কামাল জানান, চা বাগানে করাত কলের কোন নিয়ম নেই। খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
রামগড় চা বাগানে করাত কলের ব্যবহার করে গাছ কাটার বিষয়ে জানতে চাইলে চা বোর্ডের চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মো: আশরাফুল ইসলাম বলেন, চা বাগানে করাত কল সম্পূর্ণ বেআইনি। ছায়াগাছ কাটতে হলে তার চেয়ে বেশী লাগাতে হবে।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন