খাগড়াছড়ির ২টি উপজেলাতে সহিংসতার ঘটনায় তিন মামলা, হাজারেরও বেশি অজ্ঞাত মামলার

খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলায় সহিংসতার ঘটনায় ২টি উপজেলা তিন মামলা রুজু করেছে। জেলার গুইমারা ও সদর উপজেলায় সহিংসতার ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে তিনটি মামলা দায়ের করেছে।

এসব মামলায় হাজারেরও বেশি অজ্ঞাত ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে। এর মধ্যে দুটি মামলা গুইমারা থানায় এবং একটি মামলা খাগড়াছড়ি সদর থানায় দায়ের করা হয়েছে।

গুইমারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) মো: এনামুল হক চৌধুরী জানান, গত ২৮শে সেপ্টেম্বর সকাল সাড়ে ১১টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত গুইমারায় প্রশাসনের জারি করা ১৪৪ধারা ভঙ্গ করে সেনাবাহিনী, পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের ওপর হামলা হয়। এ সময় অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুরের ঘটনাও ঘটে।

পরবর্তীতে ধানক্ষেত থেকে তিন ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় হত্যা মামলায় শতাধিক অজ্ঞাত ব্যক্তি এবং সহিংসতা, হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় আড়াইশ অজ্ঞাত ব্যক্তিকে আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়েছে। নিহত ও ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের পক্ষ থেকে কেউ মামলা না করায় গুইমারা থানার এসআই সোহেল রানা বাদী হয়ে মামলা করেন।

এদিকে খাগড়াছড়ি সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) মো: আব্দুল বাতেন মৃধা জানান, গত ২৭শে সেপ্টেম্বর জেলা সদরের মহাজনপাড়া, স্বনির্ভর ও উপজেলা পরিষদ সংলগ্ন এলাকায় ১৪৪ধারা ভঙ্গ করে সংঘর্ষের ঘটনায় অজ্ঞাত সাত থেকে আটশ ব্যক্তিকে আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়েছে।

অপরদিকে খাগড়াছড়ির গুইমারার রামেসু বাজার এলাকায় গত রোববার আগুন দেওয়া হয় বেশ কিছু ঘরবাড়িতে। সোমবার সকালেও কিছু ঘর থেকে আগুনের ধোঁয়া উড়তে দেখা যায়।

এতে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সদস্য ও খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান কংজরী চৌধুরী বাসা ব্যাপক ভাংচুর, অগ্নিসংযোগ ও মৌজা হেডম্যানের কাগজ পুড়ে তসনস হয়ে কোটি টাকার পরিমানে ক্ষতি হলেও পাশে থাকা ধানের গোলাভর্তি ধান এখনও কালো ধোওয়া উড়তে দেখা গেছে।

একটি ভবনের নিচে পড়ে আছে আগুনে পুড়ে যাওয়া কয়েকটি মোটর সাইকেল। সোমবার সকালে গুইমারার রামেসু বাজার এলাকায় পুড়ে যাওয়া আগুনের ছায়ের গন্ধ ছড়িয়ে পড়ছে।

জেলার গুইমারা উপজেলায় পাহাড়ি কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগে বিক্ষোভ ও সহিংসতার ঘটনায় চার দিন পর তিন মামলা করেছে পুলিশ। গতকাল বুধবার রাতে গুইমারা থানায় এ মামলা হয়। তিনটি মামলাতেই পুলিশ বাদী হয়েছে।

পুলিশ জানায়, তিনটি মামলার মধ্যে একটি করা হয়েছে সরকারি কাজে বাধা দেওয়া, সরকারি কর্মচারীদের আহত করা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের অভিযোগে। এতে অজ্ঞাত নামা ৩০০জনকে আসামি করা হয়েছে। আরেকটি হয়েছে হত্যার অভিযোগে। এতেও অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করা হয়েছে। নিহত ব্যক্তিদের পরিবারের কেউ মামলা করতে রাজি হয়নি।

অন্যদিকে খাগড়াাছড়ি সদরে ১৪৪ধারা ভেঙে সরকারি কাজে বাধা দেওয়া ও সহিংসতার অভিযোগেও একটি মামলা হয়েছে। এতে অজ্ঞাত ৮০০জনকে আসামি করা হয়েছে।

গুইমারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) মো: এনামুল হক চৌধুরী মামলার এ তথ্য বৃহস্পতিবার সকালে নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, জেলা জুড়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মোতায়েন আছে। গোয়েন্দা নজরদারিও অব্যাহত রয়েছে। সেনাবাহিনী ও বিজিবি’র সদস্যদের তহল অব্যাহত রয়েছে।

এদিকে খাগড়াছড়ি সদর ও গুইমারা উপজেলায় ১৪৪ধারা এখনো বহাল। তবে বৃগষ্পতিবার খাগড়াছড়িতে হাটের বাজারদিন হওয়ায় যানবাহন এবং লোকজনের চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। জেলা সদর থেকে দূরপাল্লার যান ছেড়ে গেছে। বৃহষ্পতিবার খাগড়াছড়ি জেলার সাপ্তাহিক হাটের দিন হওয়ায় বাজারেও লোকজনের ভিড় দেখা গেছে।

সাধারন মানুষের লোকমুখে কথা আগে-বাগে বাজার করে না রাখলে আবার ৫ই অক্টোবর পরে লাগাতার জুম্ম ছাত্র-জনতা কর্মসূচী থাকলে পরিবারে বেকায়দা পড়া থেকে কিছুতা লাঘব হবে।

খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা প্রশাসক এ বি এম ইফতেখারুল ইসলাম খন্দকার বলেন, পরিস্থিতি স্বাভাবিক মনে হয়েছে। এরপরও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী যদি মনে করে পরিস্থিতি স্বাভাবিক, তাহলে ১৪৪ধারা তুলে দেওয়া হবে।

গত ২৪শে সেপ্টেম্বর রাত ৯টায় প্রাইভেট পড়ে ফেরার পথে খাগড়াছড়ি সদর সিংগীনালাতে পাহাড়ি এক কিশোরীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে। ওই দিন রাত ১১টার দিকে অচেতন অবস্থায় একটি খেত থেকে তাকে উদ্ধার করেন স্বজনেরা। রাতেই তাকে খাগড়াছড়ি আধুনিক জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরদিন সে হাসপাতাল ছেড়ে চলে যায়। এ ঘটনায় শয়ন শীল নামের একজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

ধর্ষণের অভিযোগ ওঠার পর এর প্রতিবাদে জুম্ম ছাত্র-জনতার ব্যানারে গত শনিবার খাগড়াছড়িতে আধা বেলা অবরোধ ডাকা হয়। পরদিন থেকে তিন পার্বত্য জেলায় অবরোধের ডাক দেয় সংগঠনটি। অবরোধের মধ্যেই রোববার বিক্ষোভ ও সহিংসতায় রণক্ষেত্র পরিণত হয় খাগড়াছড়ি সদর ও গুইমারার রামেসু বাজার। সেখানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে অবরোধকারীদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।

সেখানে স্থানীয় একটি পক্ষও সংঘর্ষে যোগ দেয়। এ সময় গুলিতে তিনজনের মৃত্যু হয়। তাঁরা তিনজনই পাহাড়ি মারমা জনগোষ্ঠীর। সেনাবাহিনীর মেজরসহ আহত হন অন্তত ২০জন। রামেসু বাজার এলাকায় আগুন দেওয়া হয় প্রায় অর্ধশত বসতবাড়ি ও ৪০টির মতো দোকান পাটে।

এর মধ্যে খাগড়াছড়ির ওই কিশোরীর শারীরিক পরীক্ষায় ধর্ষণের আলামত পাওয়া যায়নি বলে প্রতিবেদন দিয়েছে মেডিকেল বোর্ড। তবে এ প্রতিবেদনের বিষয়ে ক্ষোভ জানান কিশোরীর বাবা।

উল্লেখ্য, গত ২৩শে সেপ্টেম্বর রাতে এক মারমা কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগ এনে জুম্ম ছাত্র-জনতা সড়ক অবরোধ কর্মসূচি পালন করে। এরপর থেকেই খাগড়াছড়িতে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। তবে পরবর্তী সময়ে তিন সদস্যের চিকিৎসক দল কিশোরীর শরীরে ধর্ষণের কোনো আলামত পায়নি।

খাগড়াছড়ির ঘটনায় জাতিসংঘকে যুক্ত করে বিচার বিভাগীয় তদন্ত দাবি-হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ
খাগড়াছড়িতে সহিংসতার ঘটনার তদন্তে জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের একজন সদস্যের সমন্বয়ে একজন বিচারপতির নেতৃত্বে অনতিবিলম্বে বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিশন গঠনের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ।

একই সঙ্গে পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর স্বার্থ ও অস্তিত্ব রক্ষায় পার্বত্য শান্তিচুক্তির বাস্তবায়নে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য সরকারের কাছে জোর দাবি জানিয়েছে তারা। বুধবার ঐক্য পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মনীন্দ্র কুমার নাথের পাঠানো এক বিবৃতিতে এসব কথা জানানো হয়েছে।

বিবৃতিতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ বলেছে, আদিবাসী কিশোরীকে দলবদ্ধভাবে ধর্ষণের জন্য দায়ী দুর্বৃত্তদের গ্রেপ্তার না করে বরং খাগড়াছড়ির নিরীহ ও নিরস্ত্র জুম্ম জনগোষ্ঠীর ওপর সশস্ত্র হামলা করা হয়েছে।

এতে ৩জন নিহত, অন্তত ১৫জন আহত হয়েছেন। এ ছাড়া বাড়িঘর ও দোকানপাটে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। এমন দুর্ভাগ্যজনক ঘটনাকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার জন্য স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাসহ সরকারের দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের উসকানিমূলক বক্তব্য খাগড়াছড়িসহ গোটা পার্বত্য চট্টগ্রামে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করেছে।

বিবৃতিতে ঘটনায় দায়ীদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদান, নিহত ব্যক্তিদের প্রত্যেক পরিবারকে অন্যূন এক কোটি টাকা করে, ক্ষতিগ্রস্ত প্রত্যেক পরিবারকে অন্যূন পঁচিশ লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণ প্রদান ও সরকারি খরচে আহত ব্যক্তিদের সুচিকিৎসার ব্যবস্থার জন্য অন্তর্র্বতীকালীন সরকারের কাছে দাবিও জানিয়েছে ঐক্য পরিষদ।

খাগড়াছড়িতে সহিংসতা চার দিন পর স্বাভাবিক যান চলাচল, জনজীবনে স্বস্তি অবরোধের কারণে চার দিন বন্ধ থাকার পর যান চলাচল শুরু হয়েছে খাগড়াছড়িতে। বৃহস্পতিবার সকালে পৌরশহরের শাপলা চত্বর এলাকাতে সামধারন মানুষ ও যানবাহন ব্যাপক চলাচল করতে দেখা গেছে।

জুম্ম ছাত্র-জনতার ব্যানারে ডাকা অবরোধ স্থগিত করায় খাগড়াছড়িতে চার দিন পর যান চলাচল স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে। এতে কিছুটা স্বস্তি ফিরেছে জনজীবনে। অবরোধ স্থগিত হলেও বুধবার সকাল পর্যন্ত জেলা প্রশাসনের জারি করা ১৪৪ধারা প্রত্যাহার করা হয়নি।

বৃহষ্পতিবার (২রা অক্টোবর) সকালে খাগড়াছড়ি পৌর শহরের শাপলা চত্বর এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, সড়কে সব ধরনের যানবাহন চলাচল করছে। কিছু দোকানপাটও খুলেছে। দূরপাল্লার যান চলাচলও সকাল নয়টার পর থেকে স্বাভাবিক। শহরজুড়েই মোড়ে মোড়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের অবস্থান দেখা যায়। সন্দেহভাজন কাউকে দেখলেই জিজ্ঞাসাবাদ ও তল্লাশি করা হচ্ছে।

সকালে খাগড়াছড়ি সাপ্তাহিক হাট বাজার এলাকায় বাজার করতে আসা চামেলী মারমা নামের এক নারীর সঙ্গে। তিনি জানান, পৌর শহরের রাজ্যমনি পাড়ার এলাকায় স্বামী-সন্তান নিয়ে একটি নিজস্ব বাসায় থাকেন তিনি। ৫ই অক্টোবর পর যদি আবার লাগাতার জুম্ম ছাত্র জনতা কর্মসূচী দিলে তখন বেকাদায় পড়াপড়ি হতে হবে। এখন অবরোধ না থাকায় নিজ বাড়ি থেকে এসে কিছু বাড়তি বাজার করে নিয়ে যাচ্ছি।

পৌর শহরে মো; জসিম উদ্দিন নামের এক বাসচালকের সঙ্গে কথা হয়। চট্টগ্রাম-খাগড়াছড়ি সড়কে বাস চালান জানিয়ে তিনি বলেন, অবরোধের কারণে বাস চলাচল না করায় গত কয়েক দিন উপার্জন করতে পারেননি। পরিবার নিয়ে অনেক কষ্টে দিন কেটেছে। আজ অবরোধ না থাকায় গাড়ি চালানো শুরু করতে পেরেছেন, যে কারণে অনেক খুশি তিনি।

জেলার পানছড়ি উপজেলায় পরিবার নিয়ে থাকেন অঞ্জন দাশ। তিনি জানান, তাঁর বাড়ি কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলায়। তিনি দুর্গাপূজা উপলক্ষে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে আজ সকালে বাড়ির উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন। সড়ক অবরোধ কর্মসূচির কারণে এত দিন বাড়িতে যেতে পারেননি।

গতকাল মঙ্গলবার রাত নয়টার দিকে ফেসবুক পেজ থেকে সড়ক অবরোধ কর্মসূচি স্থগিতের কথা জানায় জুম্ম ছাত্র-জনতা। সংগঠনটি জানায়, খাগড়াছড়ির গুইমারায় সংঘটিত ঘটনার তদন্তে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

প্রশাসনের আশ্বাস ও উদ্যোগের প্রতি আস্থা রেখে এবং হিন্দু সম্প্রদায়ের শারদীয় দুর্গোৎসবকে সম্মান জানিয়ে মঙ্গলবার রাত ১১টা থেকে ৫ই অক্টোবর পর্যন্ত অবরোধ স্থগিত করা হয়েছে। তবে প্রশাসনের কাছে উপস্থাপিত আট দফা দাবি যদি যথাযথভাবে পূরণ না করা হয়, আবারও কঠোর কর্মসূচি গ্রহণ করা হবে বলে হুশিয়ারি উচ্চারন করা হয়।

ধর্ষণের অভিযোগ ওঠার পর এর প্রতিবাদে জুম্ম ছাত্র-জনতার ব্যানারে গত শনিবার খাগড়াছড়িতে অবরোধ ডাকা হয়। পরদিন থেকে তিন পার্বত্য জেলায় অবরোধের ডাক দেয় সংগঠনটি।

সদরের সিঙ্গিনালা এলাকার অষ্টম শ্রেণির মারমা কিশোরীর মেডিকেল রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে। মেডিকেল টেস্টে গণধর্ষণ কিংবা ধর্ষণের কোনো আলামত পাননি চিকিৎসকরা। খাগড়াছড়ি জেলা সদর আধুনিক হাসপাতালের ৩জন চিকিৎসকের ২৮শে সেপ্টেম্বর স্বাক্ষরিত মেডিকেল রিপোর্টে এ তথ্য পাওয়া যায়। ২৩শে সেপ্টেম্বর রাতে ১২বছর বয়সী ওই কিশোরী খাগড়াছড়ি জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি হয়।

কিশোরীর বাবার অভিযোগ, ওই দিন(২৩শে সেপ্টেম্বর) স্থানীয় এক শিক্ষকের কাছে প্রাইভেট শেষে বাড়ি ফেরার পথে রাত সাড়ে ৯টার দিকে নিখোঁজ হয় তার কিশোরী কন্যা। রাত সাড়ে ১১টার দিকে স্থানীয়রা খোঁজাখুঁজি করে স্থানীয় শাসন রক্ষিত বৌদ্ধ বিহারের পাশে পানিযুক্ত জমিতে খুঁজে পায় এবং সেখান থেকে তাকে খাগড়াছড়ি জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।

গণধর্ষণের অভিযোগ এনে কিশোরীর বাবা ওই দিন রাতেই খাগড়াছড়ি সদর থানায় এজাহার দায়ের করেন। তাঁর অভিযোগ তার মেয়েকে অজ্ঞাত ৩যুবক পালাক্রমে ধর্ষণ করেছে। তিনি নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে সদর থানায় এ এজাহার দায়ের করেন।

অভিযোগের প্রেক্ষিতে পরের দিন বুধবার বেলা ১১টার সদরের সিঙ্গিনালা এলাকার ১নং ওয়ার্ড থেকে শয়ন শীল (১৯) নামে সন্দেহভাজন এক কিশোরকে সেনাবাহিনীর সহায়তায় আটক করা হয়।

আদালতের নির্দেশে আটক কিশোরকে ৬দিনের রিমান্ডে আনে পুলিশ।

অষ্টম শ্রেণির স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ কেন্দ্র করে ইউপিডিএফের ইন্ধন অভিযোগে ২৪শে সেপ্টেম্বর সকাল ৬টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত সহিংস সড়ক অবরোধ কর্মসূচি চালায় জুম্ম ছাত্র জনতা। এতে সংহতি জানায় ইউপিডিএফ সমর্থিত পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ, হিল উইমেন্স ফেডারেশন ও গণতান্ত্রিক যুব ফোরাম নামে ৩টি সংগঠন।