খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার গুইমারা উপজেলায় ধনিরাম কার্বারী পাড়ায় পানি সংকটের বিকল্প উৎস জরুরি হয়ে পরেছে। জেলার গুইমারা উপজেলার অত্যন্ত দুর্গম পাহাড়ি গ্রাম ধনিরাম কার্বারী পাড়ায় দেখা দিয়েছে চরম পানি সংকট।

প্রায় ৮০টি ত্রিপুরা পরিবারের এই গ্রামে সুপেয় পানি পাওয়া এখন কঠিন হয়ে পড়েছে। স্থানীয়দের দাবি, প্রতিদিনই পানি সংগ্রহে তাদের পড়তে হচ্ছে চরম দুর্ভোগে।

প্রচন্ড তাপদাহে গরমে নৈসর্গিক প্রাকৃতিক ছড়া, ঝিরি ও কুয়ার পানির উৎস শুকিয়ে যাচ্ছে। ফলে প্রতিদিন এক কলসি পানি সংগ্রহ করতে দুই থেকে আড়াই ঘণ্টা সময় লাগছে। অনেক সময় দীর্ঘ অপেক্ষার পরেও পানির দেখা মেলে না। দুর্গমতার কারণে এসব এলাকায় টিউবওয়েল স্থাপন করাও সম্ভব নয় বলে জানানো হয়েছে।

স্থানীয় ইউপি সদস্য কেশব কুমার ত্রিপুরা বলেন, তার ওয়ার্ডসহ আশপাশের পাহাড়ি এলাকায় সুপেয় পানির সংকট দীর্ঘদিনের। ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নির্মল নারায়ণ ত্রিপুরাও জানান, মার্চ থেকে জুন মাস পর্যন্ত সংকট তীব্র আকার ধারণ করে।

বাড়তি সমস্যা দেখা দেয় বৃষ্টির সময়, যখন ঝিরি ও কুয়ার পানি হয়ে পড়ে ঘোলাটে ও অনুপযোগী। এর প্রভাবে দেখা দিচ্ছে নানা স্বাস্থ্যঝুঁকি, যেমন চর্মরোগ, ডায়রিয়া, কিডনি ও মূত্রনালির সমস্যা।

গুইমারা উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের উপ-সহকারী প্রকৌশলী শামীম হোসেন বলেন, এলাকা পরিদর্শন করে বিকল্প কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সংকট নিরসনে গত ৬ই মে গুইমারা ইউপি চেয়ারম্যান, সদস্য, এনজিও প্রতিনিধি ও টেকনিক্যাল টিম সরেজমিনে ধনিরাম কার্বারী পাড়া পরিদর্শন করেন।

ইউরোপীয় ইউনিয়নের অর্থায়নে, মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের সহায়তায় ও আলো (খাগড়াছড়ি) নামের এনজিওর বাস্তবায়নে একটি সৌর-চালিত পানির প্রকল্প নেওয়া হচ্ছে। এর মাধ্যমে পাহাড়ের নিচের পানি উত্তোলন করে ওপরে পৌঁছে দেওয়া হবে।

এই প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে ধনিরাম কার্বারী পাড়ার মানুষ পানির দুর্ভোগ থেকে কিছুটা হলেও মুক্তি পাবে বলে আশাবাদী স্থানীয়রা।