খাগড়াছড়ি সাম্প্রদায়িক হামলার গুইমারায় এখনো আতঙ্ক কাটেনি, জনজীবন স্থবির

খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার গুইমারা উপজেলায় এখনো আতঙ্ক কাটেনি, সাধারন মানুষের জনজীবন চরম স্থবির হয়ে পড়েছে। গত ২৮শে সেপ্টেম্বর থেকে রামসু বাজারের প্রবেশ মুখে সেনাবাহিনী ১৪৪ধারা উঠে গেলেও যুদ্ধের বাঙ্কার বানিয়ে অবস্থান করে চেকিং চলছে।

তার মধ্যে বাংগালীদের সংগঠন পার্বত্য চট্টগ্রাম সমঅধিকার আন্দোলন, পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদ, পার্বত্য চট্টগ্রাম বাংগালি ছাত্র পরিষদ’র উসকে দেওয়া গুরুতর অভিযোগ রয়েছে। নিরাপত্তা বাহিনীর সহযোগীতায় পার্বত্য চট্টগ্রামকে অস্তিতিশীল করে উদ্ভব সহিংসতা পরিস্থিতি করতে সব সময় গবেষনা চালিয়ে যাচ্ছে।

গত ২৮শে সেপ্টেম্বর ২০২৫রামসু বাজারে সেনা-সেটলার হামলা, অগ্নিসংযোগ ও সেনাবাহিনীর গুলিতে তিন মারমা যুবক নিহতের ঘটনায় গুইমারায় জনমনে এখনো চরম আতঙ্ক কাটেনি। স্বাভাবিক হয়নি সাধারন মানুষের জনজীন। গুইমারা থানা পুলিশের অজ্ঞাতনামা আসামি করে দায়ের মামলার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত জনগণ আরো বেশী আতঙ্কে রয়েছেন বলে জানা গেছে।

গত মঙ্গলবার(৭ই অক্টোবর) গুইমারা বাজাারে সাপ্তাহিক হাটবার হলেও বাজারে তেমন কোন পাহাড়ি লোকজনকে তেমন দেখা যায়নি। আগে হাটবাজারের দিন পাহাড়ি কাঁচামালে জাঁকজমকপুর্ণ বাজার বসতো।

সাপ্তাহিক হাটের দিন লোকজন বাজাারে না যাওয়ার বিষয়ে পার্শ্ববর্তী গ্রামগুলোর মুরুব্বীদের কাছ থেকে জানতে চাইলে তারা বলেন, গুইমারা থানা পুলিশ অজ্ঞাতনামা ৩০০জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করায় অহেতুক গ্রেফতারের ভয়ে লোকজন বাজারে যায়নি।

তাছাড়া গত ২ শে সেপ্টেম্বর সেনাবাহিনী যেভাবে গুলি চালিয়ে তিন জনকে হত্যা ও অনেক জনকে গুলিবিদ্ধ জখম করেছে তাতে লোকজনের মধ্যে যে আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে তা এখনো কাটেনি। ফলে এলাকার জনগণ নানা ভয় ও আতঙ্কের মধ্যেই দিনাতিপাত করছেন বলে তারা জানান।

এদিকে খাগড়াছড়ির মধুপুর বাজার সংলগ্ন ব্রিজের মোড়ে পরিত্যক্ত দোকানঘর থেকে টিয়ারশেল গ্রেনেট উদ্ধার করেছে পুলিশ। বুধবার(৮ই অক্টোবর) সকালে স্থানীয় লোকজনের সংবাদের ভিত্তিতে খবর পেয়ে পুলিশ পরিত্যক্ত দোকানঘর দোকানঘর টিয়ারশেল গ্রেনেট উদ্ধার করে।

বিষয়টি খাগড়াছড়ি সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) মো: আব্দুল বাতেন মৃদা নিশ্চিত করে বলেন, এটি একটি টিয়ারশেল গ্রেনেট। তবে এটি কোনো ক্ষতি কারক গ্রেনেট নয়। আমাদের পর্যবেক্ষক টিম এটি দেখে নিশ্চিত করেছেন।

এসময় তিনি আরো বলেন, খাগড়াছড়িতে আমাদের পুলিশ প্রশাসনের সর্বস্তরে নজরদারি রয়েছে। জেলার শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষায় আমরা কাজ করে যাচ্ছি। এবং এটা আগামীতেও অব্যাহত থাকবে।

অপরদিকে সেনাবাহিনীর সদস্যরা গত ২৮শে সেপ্টেম্বর থেকে রামসু বাজার প্রবেশ পথে বালুর বস্তা দিয়ে বাঙ্কার বানিয়ে রাতদিন পাহারায় নিয়োজিত রয়েছে। এছাড়া তারা আকাশে ড্রোন উড়িয়ে সার্বক্ষণিক নজরদারি করে থাকে।
উল্লেখ্য, খাগড়াছড়ি সদরের সিঙ্গিনালায় মারমা কিশোরী ধর্ষণে জড়িত সকল ধর্ষককে গ্রেফতার ও বিচারের দাবিতে জুম্ম ছাত্র জনতার আহ্বানে গুইমারা রামসু বাজার এলাকায় অবরোধ পালনকালে সেনাবাহিনী ও সেটলার বাঙালিরা হামলা চালায়।

এতে সেনাবাহিনীর গুলিতে আখ্রক মারমা, থোয়ইচিং মারমা ও আথুইপ্রæু মারমা নামে তিন মারমা যুবক নিহত হন। সেটলাররা রামসু বাজারের দোকানপাটসহ আশে-পাশের পাহাড়িদের বসতবাড়িতে লুটপাট, অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুর চালায়।