খাগড়াছড়িতে করোনা আক্রান্তের হার ১৪শতাংশ, পরিবহনে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান
খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা থেকে ছেড়ে যাচ্ছেনা ঢাকাসহ দূর পাল্লার রুটের যাত্রীবাহী পরিবহন। মঙ্গলবার(২২শে জুন) সকাল থেকে বিভিন্ন পরিবহনের যাত্রীরা টিকিট নিয়ে কাউন্টারে হাজির হন। কিন্তু কয়েকঘন্টা অপেক্ষা করার পরও ছেড়ে যায়নি কোন পরিবহন। অনেক বাসের কাউন্টার বন্ধ দেখতে পান যাত্রীরা। এতে ভোগান্তিতে পড়েছে যাত্রীরা। এক পর্যায়ে যাত্রীদের টিকিটের টাকা ফেরত দেয়া হয়।
যাত্রীরা জানান, নির্ধারিত সময়ানুযায়ী যাত্রীরা পরিবহনের টিকিট কাউন্টারে আসেন। কিন্তু পরিবহন ছেড়ে না যাওয়ায় ভোগান্তিতে পড়েন তারা। হাঠাৎ করে এমন সিদ্ধান্তে ক্ষোভ জানান অনেকে।
পরিবহন সংশ্লিষ্টরা জানান, রাতে নির্দেশনা পাওয়ার পর থেকে পরিবহন বন্ধ করে দেয়া হয়। ভোর ছ’টা থেকে জেলা থেকে ঢাকাগামী কোন পরিবহন ঢুকতে না দেয়ায় যাত্রীদের ফেরত দেয়া হচ্ছে। পরবর্তী নির্দেশনা না দেয়া পর্যন্ত খাগড়াছড়ি থেকে ঢাকারুটে চলাচলকারী সবক’টি যাত্রীবাহী বাস বন্ধ থাকবে। এর আগে রাতে খাগড়াছড়ি থেকে ছেড়ে গেছে ঢাকাসহ দূর পাল্লার রুটের যাত্রীবাহী পরিবহন।
এদিকে খাগড়াছড়িতে করোনা আক্রান্তে হার ক্রমেই বাড়ছে। মাত্র ২৪ঘন্টায় সংক্রমের হার বেড়ে প্রায় ১৪শতাংশ দাঁড়িয়েছে।
খাগড়াছড়ির সিভিল সার্জন ডা: নুপুর কান্তি দাশ জানান, গত ২৪ঘন্টায় ২৮জন করোনা পরীক্ষা করালে ৮জনের শরীরে করোনা সংক্রমণ ধরা পড়ে। এ নিয়ে চলতি মাসে জেলায় মোট ৭শ’ ৬৭জন করোনা পরীক্ষা করে ৮১জনের শরীরে করোনা সংক্রমণ ধরা পড়ে। সংক্রমণের হার ১০দশমিক ৬শতাংশ। এখন পর্যন্ত জেলায় সর্বমোট ৭হাজার ১০৪জন করোনা পরীক্ষা করেছেন। তার মধ্যে ৯৮৯জনের শরীরে করোনা ধরা পড়ে। যার সংক্রমণের হার ১৩দশমিক ৯২শতাংশ।
বর্তমানে ১৯জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। এর মধ্যে ৯জন করোনা আক্রান্ত এবং ১০ জনের শরীরে উপসর্গ রয়েছে।
সিভিল সার্জন ডা: নুপুর কান্তি দাশ বলেন, যদি কারও জ্বর, কাশি থাকে তাহলে অবশ্যই করোনা পরীক্ষা করাবেন। তিনি মাস্ক পরিধানের পাশাপাশি প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে না যেতে অনুরোধ জানান।
অপরিদিকে খাগড়াছড়িতে করোনা সচেতনতায় যাত্রীবাহী পরিবহনে অভিযান চালিয়েছে জেলা প্রশাসন। তবে এসময়ে কাউকে জরিমানা করা হয়নি। সতর্ক করা হয়েছে পরিবহন সংশ্লিষ্ট ও যাত্রীদের। সোমবার(২১শে জুন) রাত ১০টায় জেলা শহর থেকে দূরপাল্লার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাওয়া পরিবহন ও টিকিট কাউন্টারগুলোতে এ অভিযান পরিচালনা করা হয়। এ সময় খাগড়াছড়ি থেকে ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে ছেড়ে যাওয়া নৈশ কোচগুলোতে সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী যাত্রী পরিবহন, স্বাস্থ্যবিধি মানাসহ যাত্রী হয়রানি করা হচ্ছে কিনা এসব বিষয় খতিয়ে দেখা হয়। একইসাথে টিকিটি কাউন্টারগুলোতে পর্যাপ্ত স্বাস্থ্য সুরক্ষা, নিয়ম-নীতি মেনে যাত্রী সেবা দেয়া হচ্ছে কিনা দেখেন অভিযানে থাকা ম্যাজিস্ট্রেটরা।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক আবু সাঈদ’র নেতৃত্বে মোবাইল কোর্টে অংশ নেন বিআরটিএ-এর উপ-পরিচালক প্রদীপ কুমার দেব ও জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সাজ্জাদ হোসেন, শ্যামানন্দ কুন্ডু, বাসুদেব মালো।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক জানান, মূলত খাগড়াছড়িতে করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে সচেতনতামূলক এ অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। পরিবহন সংশ্লিষ্টসহ যাত্রীদের সাস্থ্যবিধি মানা এবং সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী যাত্রী পরিবহনে কঠোরভাবে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। অন্যথায় জরিমানার পাশাপাশি শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন