খাগড়াছড়ির দীঘিনালায় দু’পক্ষের বন্দুকযুদ্ধে নিহত-১
খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার দীঘিনালা উপজেলায় প্রতিপক্ষের গুলিতে ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট(ইউপিডিএফ) প্রসিত গ্রুপের সদস্য ত্রিদিব চাকমা ওরফে শিমুল(৪২) নিহত হয়েছে।
মঙ্গলবার (৪ এপ্রিল) বিকেল আড়াইটার দিকে দীঘিনালা-বাবুছড়া সড়কে এ হত্যাকান্ড ঘটে। সে দীঘিনালার কবাখালি ইউনিয়নের কৃপাপুর গ্রামে দেবেন্দ্র চাকমার ছেলে। ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট(ইউপিডিএফ) প্রসিত গ্রুপের প্রচার ও প্রকাশনা বিভাগের নিরন চাকমা স্বাক্ষরিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে তাদের সদস্য ত্রিদিব চাকমা(শিমূল)কে হত্যা করা হয়েছে বলে দাবী করে এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে।
স্থানীয় ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, ৭জনের একটি দল মোটর সাইকেল ও সিএনজি যোগে কার্বারি টিলায় এসে ত্রিদিব চাকমা ওরফে শিমুলকে(৪২) গুলি করে হত্যা করে পালিয়ে যায়। জেলার দীঘিনালায় ইউপিডিএফ (গনতান্ত্রিক) ও ইউপিডিএফ (প্রসিত) আঞ্চলিক সশস্ত্র দুই দলের মধ্যে গুলিবিনিময়ের ঘটনায় ১জন নিহত হয়েছে বলে জানা যায়।
মঙ্গলবার বিকালে উপজেলার দীঘিনালা ইউনিয়নের পুকুরঘাট এলাকার কার্বারী টিলায় দু’পক্ষে গুলিবিনিময় হয়েছে বলে স্থানীয় সূত্রে জানা যায়। এতে ঘটনাস্থলেই ইউপিডিএফ(প্রসিত) গ্রুপের ত্রিদিব চাকমা(শিমূল)(৪২) নামে একজন নিহত হন। নিহতের বাড়ি উপজেলার কবাখালি ইউনিয়নের কৃপাপুর গ্রামের দেবেন্দ্র চাকমার ছেলে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় সূত্র জানায়, বিকেলে হঠাৎ গোলাগুলির শব্দ শুনতে পান, কিছুক্ষন পরে একটি লাশ পড়ে থাকতে দেখেন, পরে আবার দেখেন লাশটি ঐ স্থানে নেই। কে বা কারা লাশটি নিয়ে গেছে সূত্রটি নিশ্চিত করতে পারেনি।
দীঘিনালা থানা অফিসার ইনর্চাজ(ওসি) মুহাম্মদ আলী জানান, গুলিবিনিময়ের ঘটনার কথা শুনে আইনশৃক্সখলা রক্ষাকারী বাহিনী ঘটনাস্থলে গিয়ে কোন লাশ পায়নি। এসময় তিনি আরো জানান, কেউ অভিযোগ দায়ের করলে পুলিশ আইনগত ব্যবস্থা নিবে।
এদিকে ইউনাইটেড পিপল্স ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট(ইউপিডিএফ) প্রসীত গ্রুপের খাগড়াছড়ি জেলা ইউনিটের সংগঠক অংগ্য মারমা জেলার দীঘিনালায় ইউপিডিএফ সদস্য ত্রিদিব চাকমাকে(শিমূল) হত্যার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে এবং এ ঘটনার জন্য সেনা মদদপুষ্ট সশস্ত্র সন্ত্রাসী ঠ্যাঙারে বাহিনীকে দায়ী করেছে। সংবাদ মাধ্যমে দেয়া এক বিবৃতিতে তিনি অবিলম্বে খুনীদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় নিয়ে আসার দাবি জানান।
ইউপিডিএফ নেতা অংগ্য মারমা বিবৃতিতে বলেন, গত দুই যুগেরও বেশি সময় ধরে খুন, গুম, গ্রেফতার, হামলা-মামলা তথা রাজনৈতিক দমন-পীড়ন চালিয়ে ইউপিডিএফকে দমন করা যায়নি, ভবিষ্যতেও যাবে না। উক্ত খুনের ঘটনাকে অত্যন্ত ন্যাক্কারজনক ও জঘন্য বলে উল্লেখ করে মঙ্গলবার(৪ঠা এপ্রিল ২০২৩) সংবাদ মাধ্যমে দেয়া এক বিবৃতিতে তিনি অবিলম্বে খুনীদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় নিয়ে আসার এবং সেনা মদদপুষ্ট ঠ্যাঙারে বাহিনীগুলোকে ভেঙে দেয়ার দাবি জানান।
ইউপিডিএফ নেতা ঘটনার বর্ণনা দিয়ে বলেন, মঙ্গলবার(৪ঠা এপ্রিল) বিকেল আড়াইটার দিকে সেনা মদদপুষ্ট ঠ্যাঙারে বাহিনীর ৭জনের একটি দল দীঘিনালা সদর থেকে মোটর সাইকেল ও সিএনজি যোগে কার্বারী টিলায় এসে ত্রিদিব চাকমাকে(৪২) গুলি করে হত্যা করে পালিয়ে যায়। যেখানে হত্যাকান্ড সংঘটিত হয়েছে তা রাঙাপানি সেনা ক্যাম্প থেকে দক্ষিণে মাত্র ৫০গজ দূরে।’
খুনীদের মধ্যে রাজীব চাকমা, রঞ্জন চাকমা ও রিপন চাকমাকে চেনা গেছে বলে তিনি জানান এবং বলেন সেনাবাহিনীর সহযোগিতা ছাড়া এ হত্যাকান্ড সংঘটিত করা কখনই সম্ভব নয়।
নিহত ইউপিডিএফ সদস্য ত্রিদিব চাকমার বাড়ি দীঘিনালার কবাখালি ইউনিয়নের কৃপাপুর গ্রামে এবং তার পিতার নাম দেবেন্দ্র চাকমা বলে অংগ্য মারমা জানিয়েছেন।
পার্বত্য চট্টগ্রামে অশান্তির জন্য সেনাদের পালিত ঠ্যাঙারে বাহিনীর নিয়ন্ত্রণহীন সন্ত্রাসকে দায়ি করে ইউপিডিএফ নেতা বলেন, গত দুই যুগেরও বেশি সময় ধরে খুন, গুম, গ্রেফতার, হামলা-মামলা তথা রাজনৈতিক দমনপীড়ন চালিয়ে ইউপিডিএফকে দমন করা যায়নি, ভবিষ্যতেও যাবে না।
শাসকগোষ্ঠী রাজনৈতিকভাবে ইউপিডিএফকে মোকাবিলা করতে ব্যর্থ হয়ে ঠ্যাঙারে বাহিনী দিয়ে খুন ও সন্ত্রাস চালাচ্ছে বলে তিনি অভিযোগ করেন। ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট(ইউপিডিএফ) প্রচার ও প্রকাশনা বিভাগের প্রধান নিরন চাকমা স্বাক্ষরিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন