খাগড়াছড়ির রামগড়ে প্রশিক্ষণার্থীদের টাকা লোপাটের অভিযোগ
খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার রামগড় উপজেলা মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের কর্মকর্তা মো: জাঙ্গাগীরের আলমের বিরুদ্ধে ৩৫০জন প্রশিক্ষণার্থীর কাছ থেকে আবেদন ফরমের টাকা লোপাটের অভিযোগ উঠেছে।
জানা যায়, আইজিএ প্রকল্প ও রাজস্ব খাতের আওতায় দুস্থ ও বেকার মহিলাদের জন্য ৩মাস মেয়াদী প্রশিক্ষণ কোর্স সেলাই, বøক বাটি, বিউটি পার্লারে ৮০জন প্রশিক্ষণার্থীর জন্য ৩৫০জন মহিলার কাছ থেকে ১শ টাকা করে আবেদন ফরম ফি সরকারি কোনো নির্দেশনা না থাকলেও অবৈধভাবে আদায় করেন বলে অভিযোগ উঠেছে রামগড় উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে।
গত ১০ই জানুয়ারী সোমবার থেকে শুরু হওয়া প্রশিক্ষণের জন্য ৩৫০জন মহিলা থেকে যাচাই-বাছাই করে মাত্র ৩০জন মহিলাকে সেলাই প্রশিক্ষণার্থী হিসেবে বাছাই করা হয়। এছাড়াও আইজিএ প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হওয়ার কারণে বাকি দুটি প্রশিক্ষণ স্থগিত হয়ে যায়।
স্থানীয় আবেদন ফরম নেওয়া প্রশিক্ষণার্থীরা জানান, প্রকল্পের মেয়াদ শেষ জেনেও মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা মো: জাঙ্গাগীর আলম আমাদের কাছে ১০০টাকা করে আবেদন ফরম বিতরণ করেন। বর্তমানে রাজস্ব খাতের আওতায় সেলাই প্রশিক্ষণ কোর্স চালু থাকলেও আবেদন ফরম বিক্রি করে ১০৮জন প্রশিক্ষণার্থীর কাছে যার মধ্যে থেকে যাচাই-বাছাই করে মাত্র ৩০জনকে প্রশিক্ষণার্থী হিসেবে বাছাই করা হয়। বাকি ৭৮জন প্রশিক্ষণার্থী বাদ পড়ে যায়। পরে তিনটি প্রশিক্ষণ থেকে বাদ হওয়া মহিলারা তাঁদের আবেদন ফরমের জন্য দেওয়া টাকা গুলো কর্মকর্তার কাছে ফেরত চাইলে তিনি তাদেরকে বিভিন্ন রকম গালাগালি করে ও পুলিশ ডেকে থানায় পাঠানোর ভয়ভীতি দেখান। পরে ভুক্তভোগীরা নিরুপায় হয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সাংবাদিকদের কাছে যাওয়ার কথা বললে তিনি ভুক্তভোগীদের বলেন, যাও আমার কিছুই হবে না। আমার এই অফিসে গত ৯ই তারিখে ১০বছর পূর্ণ হল। সবাই আমাকে ভালো করে চেনে আমি ভালো নাকি খারাপ।
এদিকে প্রশিক্ষণার্থী তাসলিমা আক্তার বলেন, আমি এবারসহ ৪বার ১শত টাকা করে আবেদন ফরম পূরণ করেও প্রশিক্ষণে আমাকে কি কারণে নেওয়া হয় না তা আমি সত্যি জানি না।
এবিষয়ে জানতে চাইলে রামগড় উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা মো: জাঙ্গাগীর আলম বলেন, প্রশিক্ষণার্থীদের কাছ থেকে শুধু মাত্র আবেদন ফরমের খরচের জন্য ১শত টাকা করে নেওয়া হয়েছে। খরচের জন্য টাকা নেওয়ার সরকারি কোনো নির্দেশনা আছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, সরকারি ভাবে চিঠি বা কোনো নির্দেশনা নাই। খরচের টাকা গুলো দিয়ে যাচাই-বাছাই করতে আসা মেহমানদের নাস্তা পানির জন্য খরচ করা হয়। এই খরচের টাকা গুলোর বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা যদি বলে প্রশিক্ষণ থেকে বাদ পরা মহিলারা গরীব তাঁদের টাকাগুলো ফিরত দিয়ে দাও তাঁহলে আমি টাকাগুলো তাঁদের ফিরত দিয়ে দেব। তবে আবেদন ফরম ৩৫০জন নিলেও তাঁর মাঝে ২২৮জন প্রশিক্ষণার্থীর কাছ থেকে ১শত টাকা করে মোট ২২,৮০০টাকা নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন অফিস সহকারী মো: আল আমিন।
রামগড় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মু. মাহমুদ উল্ল্যাহ মারুফের কাছে এবিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরে প্রশিক্ষণের জন্য আবেদন করতে কোনো টাকা নেওয়া হয় কিনা তা আমার জানা নেই। তবে আমি খাগড়াছড়ি জেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার সাথে কথা বলে এবিষয়ে জেনে নেব। সরকারি ভাবে টাকা নেওয়ার বিষয়ে সত্যতা যদি না পাওয়া যায় তাহলে উপজেলা প্রশাসন তদন্তের মাধ্যমে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করবে।
খাগড়াছড়ি জেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা মো: মহিউদ্দিন আহমেদ মুঠোফোন জানান, মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের আওতায় মহিলাদের জন্য কোনো প্রশিক্ষণের আবেদন ফরমের ফি নেওয়া হয় না। আর সরকারিভাবে এর কোনো লিখিত নির্দেশনাও নেই। টাকা নেওয়ার বিষয়টা খুবই দুঃখজনক।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন