খাবারের সন্ধানে বনের হনুমান লোকালয়ে
বিপন্ন প্রজাতির কালোমুখো হনুমানটি খাবারের সন্ধানে ঘুরছে গুরুদাসপুরের লোকালয়ে। বনের হনুমান লোকালয়ে আসায় উৎসুখ মানুষ ভিড় জমাচ্ছেন হনুমানটি দেখতে। কেউ কেউ খাবারও দিচ্ছেন। আবার কৌতুহলী মানুষের কোলাহলে বিরক্তও হচ্ছে বনের এই প্রাণীটি।
সবশেষ বুধবার বিকালে গুরুদাসপুরের চলনালী গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা মোড়ে দেখা মিললো কালোমুখো হনুমানটির। গত প্রায় সপ্তাহখানেক ধরে কালোমুখো হনুমানটি চাঁচকৈড় বাজারের আশেপাশে ছুটাছুটি করেছে। এখন ছুটেছে গ্রামে।
মুক্তিদ্ধো মোড়ের মুদিদোকানি আজিম সরকার জানান, বুধবার দুপুর ২টা নাগাদ হনুমানটি মোড়ের কালভার্টের ওপর অবস্থান নেয়। প্রায় আধাঘন্টা কালভার্টের ওপর বসেছিল এই প্রাণী। গ্রামের উৎসুখ মানুষ ভিড় জামিয়েছিল হনুমানটি দেখতে। কেউ কেউ এটিকে বানর, আবার কেউ কেউ ভাল্লুকও মনে করেছে। এসময় অনেকই আলু, ভাত,কলা খেতে দেয়।
তবে শিশু আর কৌতুহলী মানুষের চিৎকার চেচামেচিতে হনুমানটি বিরক্ত বোধ করে একপর্যায়ে চলনালী পূর্বপাড়ার দিকে ছুটে যায়।
স্থানীয় মাসুদ রানা বলেন, বাণিজ্যিক শহর চাঁচকৈড় থেকে দেশের বিভিন্ন এলাকায় কৃষিসহ বিভিন্ন পণ্য আমদানি-রপ্তানি হয়। খাবার খেতে গিয়ে ফল কিংবা সবজির ট্রাকে উঠে হনুমানটি দেশের কোনো এক বন থেকে এখানে আসতে পারে। হনুমানটিকে উদ্ধার করে বনে ছেড়ে দেওয়ার দাবি তার।
রোজী মোজাম্মেল মহিলা কলেজের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের শিক্ষক মৌতুসী সুলতানা বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশে বিপন্ন তালিকায় স্থান পাওয়া প্রাণিদের একটি কালোমুখো হনুমান। এরা দলবদ্ধ হয়ে বসবাস করা বৃক্ষচারী শান্তিপ্রিয় প্রাণী। তবে গুরুদাসপুরের লোকালয়ে প্রায়ই কালোমুখো হনুমানকে খাবারের সন্ধানে ছোটাছুটি করতে দেখা যায়।
উপজেলা বন কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান বলেন, দলছুট হয়ে লোকালয়ে আসা হনুমানের কোনো ক্ষতি বা বিরক্ত না করতে সবার প্রতি অনুরোধ জানানো হয়েছে। হনুমানটি লোকালয় থেকে উদ্ধার করে বনাঞ্চলে ছেড়ে দেওয়ার জন্য উদ্যোগ নেওয়া হবে।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা আলমগীর হোসেন বলেন, কালোমুখো হনুমান এই এলাকায় আসার খবর তিনি পেয়েছেন। এ বিষয়ে খোঁজ-খবর রাখার জন্য বন কর্মকর্তাকেও অবহিত করা হয়েছে।
গুরুদাসপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সালমা আক্তার বলেন, খাবারের সন্ধানে লোকালয়ে ঘুরছে কালোমুখো হনুমানটি। দ্রুত এবং ঘন ঘন স্থান পরিবর্তনের ফলে প্রাণীটিকে উদ্ধার করা কঠিন হলেও স্থানীয়দের সহায়তায় এটি উদ্ধারের উদ্যোগ নিয়েছেন তিনি।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন