‘খালেদার কারাদণ্ড রাজনৈতিক সংঘাত ফিরিয়ে আনতে পারে’
দুর্নীতি মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার কারাদণ্ড আবারও ২০১৪-২০১৫ সালের মতো রাজনৈতিক সংঘাত ফিরিয়ে আনতে পারে বলে আশঙ্কা করছে ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপ-আইসিজি।
এক্ষেত্রে নির্বাচনী বছরে রাজনৈতিক বৈরিতা সহিংস জঙ্গিবাদের উত্থানের ক্ষেত্র তৈরি করতে পারে বলেও সতর্ক করে দিয়েছে সংস্থাটি।
আইসিজি জানায়, জামায়াতুল মজাহিদিন বাংলাদেশ (জেএমবি) ও আনসার আল ইসলামই এখন বাংলাদেশে জঙ্গিবাদী কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণ করছে।
গ্রুপটির কাউন্টারিং জিহাদিস্ট মিলিটান্সি ইন বাংলাদেশ শীর্ষক গবেষণায় এসব কথা বলা হয়েছে। মাঠ পর্যায়ে গবেষণার মাধ্যমে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সংঘাত ও তার নিরসনে করণীয় সম্পর্কে পরামর্শ দেয় আইসিজি।
বুধবার সংস্থাটি বাংলাদেশ বিষয়ক প্রতিবেদন করে। এতে উল্লেখ করা হয়, সম্প্রতিক সহিংসতার মাত্রা যে অনেকটা কম, সেটা সাময়িকও হতে পারে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে রাজনৈতিক মেরুকরণে যে সংকট তৈরি হয়েছে, জঙ্গিরা তার সুযোগ নিতে পারে বলে ঝুঁকি রয়েছে।
২০০৪ থেকে ২০০৮ সালে বাংলাদেশে জঙ্গি হামলার কথা উল্লেখ করে এতে বলা হয়, পরবর্তীতে বিশেষত ২০১৪ সালের জানুয়ারির বিতর্কিত নির্বাচনের পর তীব্র রাজনৈতিক বিভেদ নতুনভাবে জিহাদি কার্যক্রমের পথ খুলে দেয়।
আইসিজির মতে, বাংলাদেশ সরকার সন্ত্রাস দমন কৌশলকে গুরুত্ব না দিয়ে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, গুম ও অহরহ রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বীদের ওপর চড়াও হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। যেখানে জঙ্গি তৎপরতা এবং আল-কায়েদা ও আইএসের সঙ্গে তাদের সংশ্লিষ্টতার ওপর নজর দেয়া উচিত।
জেএমবির একটি অংশের সঙ্গে আইএসের যোগাযোগ রয়েছে বলে ধারণা আইসিজির। আর আনসার আল-ইসলামকে আল-কায়েদার দক্ষিণ এশিয়া শাখা সংশ্লিষ্ট হিসেবে বর্ণনা করেছে তারা। প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশে সাম্প্রতিক জঙ্গিবাদের ইতিহাস নব্বই দশকের শেষ দিকের, যা শুরু করে আফগান যুদ্ধ ফেরতরা।
জঙ্গিদের প্রথম দফা তৎপরতার সবচেয়ে বড় প্রকাশ ঘটে ২০০৫ সালে একযোগে ৬৩ জেলায় বোমা বিস্ফোরণের মাধ্যমে।
আইসিজির মতে, জেএমবির কাছে শত্রুর তালিকা অনেক বড়। ধর্ম নিরপেক্ষ রাষ্ট্রের বিরোধিতার পাশাপাশি তাদের মতো করে ইসলাম পালনে অনাগ্রহীদেরই তারা লক্ষ্যবস্তু করে। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ জঙ্গিবাদের হুমকিকে রাজনৈতিক পুঁজি করছে অভিযোগ করে সংগঠনটি বলছে, জঙ্গিবাদীদের নতুনদের দলে ভেড়ানো এবং তাদের হামলার ঝুঁকি নির্মূলের কাজকে গুরুত্ব না দিয়ে তারা রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে দমন করছে।
নিরাপত্তা বিশ্লেষকদের অনেক বলছেন, জিহাদিদের নতুন প্রজন্ম, যাদের সঙ্গে আগে জেএমপি ও আনসার আল ইসলামের সংযোগ ছিল, বর্তমানে তাদের সঙ্গে আইএসের সরাসরি যোগাযোগের বিষয়টি শনাক্ত করা গেছে। যেটা দেশীয় জঙ্গী সংগঠনগুলোর চেয়েও আরও বেশি। যদিও বাংলাদেশ সরকার আইএসের উপস্থিতি অস্বীকার করে আসছে।
জঙ্গিবাদ দমনের বিষয়ে বৃহত্তর পরিসরে সামাজিক ও রাজনৈতিক মতৈক্য তৈরি এবং রাজনৈতিক উদ্দেশ্যমূলক দমন-পীড়ন বন্ধ করার পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীতে জবাবদিহি নিশ্চিতে পদক্ষেপ গ্রহণে বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে আইসিজি।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন