খালেদার জন্য যুক্তরাষ্ট্র থেকে আসা তিন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক কাজ শুরু করেছেন

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার চিকিৎসার জন্য যুক্তরাষ্ট্র থেকে আসা তিন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক এভারকেয়ার হাসপাতালে কাজ শুরু করেছেন।

খালেদার ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক এজেডএম জাহিদ হোসেন বৃহস্পতিবার সকালে বলেন “তারা ম্যাডামের বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষাগুলো পর্যালোচনা করবেন এবং ম্যাডামকে দেখবেন। এরপর মেডিকেল বোর্ডকে নিয়ে তারা করণীয় ঠিক করবেন ।,

তিনি বলেন, “গতরাতে উনারা ঢাকায় পৌঁছেছেন। আজকে তারা ম্যাডামের জন্য যে মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়েছে, তাদের সাথে বৈঠক করবেন। ম্যাডামের বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষাগুলো পর্যালোচনা করবেন এবং ম্যাডামকে দেখবেন। এরপর মেডিকেল বোর্ডকে নিয়ে তারা করণীয় ঠিক করবেন।”

যুক্তরাষ্ট্রের জনস হপকিনস ইউনিভার্সিটির স্কুল অব মেডিসিনের লিভার ও কিডনি প্রতিস্থাপন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক হামিদ আহমাদ আবদুর রব, ইন্টারভেনশনাল অনকোলজি বিভাগের অধ্যাপক ক্রিসটোস স্যাভাস জর্জিয়াডেস এবং হেপাটোলজির অধ্যাপক জেমস পিটার হ্যামিলটন বুধবার রাতে যুক্তরাষ্ট্র থেকে ঢাকায় পৌঁছান। তাদের মধ্যে জর্জিয়াডেস ও হ্যামিলটন রাতেই এভারকেয়ারে যান খালেদা জিয়াকে দেখতে।

তাদের আগে যুক্তরাজ্য থেকে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ রফিকুল আলম গত বুধবার রাতে ঢাকায় পৌঁছান। তিনিও এভারকেয়ারে গিয়ে বিএনপি চেয়ারপারসনকে দেখে এসেছেন।

গত ৯ অগাস্ট থেকে বসুন্ধরার ওই হাসপাতালে ভর্তি আছেন বিএনপি চেয়ারপারসন। তিনি লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত। গত আড়াই মাসে তাকে কয়েক দফা তাকে সিসিইউতে নিয়ে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে ১৯ সদস্যের একটি মেডিকেল বোর্ডের তত্ত্বাবধায়নে তার চিকিৎসা চলছে।

৭৮ বয়সী এই সাবেক প্রধানমন্ত্রী আথ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, লিভার, কিডনি, ফুসফুস ও হদরোগে ভুগছেন দীর্ঘদিন ধরে। গত ৯ অক্টোবর মেডিকেল বোর্ডের পক্ষ থেকে এক সংবাদ সম্মেলনে মেডিসিন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক এফএম সিদ্দিকী বলেন, “দেশে উনার চিকিৎসার সব অপশন শেষ হয়ে এসেছে। জরুরিভাবে তার ট্রান্সজুগলার ইন্ট্রাহেপাটিক পোরটোসিসটেমিক সান্ট (টিপস) দরকার। কিন্তু এই টিপস বাংলাদেশে হয় না। এটা হলে উনার বুকে যে পানি আসছে এটা চলে যাবে, রক্তক্ষরণ হবে না।”

টিপস করার পর খালেদা জিয়ার লিভার প্রতিস্থাপনের জন্য বিদেশে কোনো উন্নত মেডিকেল সেন্টারে নেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন মেডিকেল বোর্ডের চিকিৎসকরা।

দুর্নীতি মামলায় দণ্ডিত সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া এখন সরকারের নির্বাহী আদেশে সাময়িক মুক্ত। তাকে বিদেশে নেওয়ার জন্য পরিবারের পক্ষ থেকে একাধিকবার সরকারের কাছে আবেদন করা হয়েছে। তাতে সায় না দিয়ে সরকারের তরফ থেকে বলা হয়েছে, যে শর্তে খালেদা জিয়াকে সাময়িক মুক্তি দেওয়া হয়েছে তাতে এখন তাকে বিদেশে যেতে দেওয়ার ‘আইনি সুযোগ নেই’।

বিদেশে যেতে চাইলে খালেদা জিয়াকে কারাগারে গিয়ে আদালতে আবেদন করতে হবে অথবা রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা চাইতে হবে বলে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।

তবে ১০ অক্টোবর তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বিদেশি চিকিৎসক নিয়ে আসার পরামর্শ দেন। সেদিন তিনি বলেন, “বেগম জিয়া যাতে সর্বোচ্চ স্বাস্থ্যসেবা পান, সেজন্য সরকার আন্তরিক এবং যত ধরনের সহযোগিতা প্রয়োজন সেটি করছে এবং প্রয়োজনে আরও করবে। বাইরের ডাক্তার আনার প্রয়োজন পড়লে তাও তারা আনতে পারেন।”