খালেদার শুনানি: আদালতে এসি প্রিজন ভ্যান
দুর্নীতির দুই মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার আদালতে হাজিরার দিন সেখানে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ও বুলেট প্রুফ প্রিজন ভ্যান আনা হয়েছে। রয়েছে নিরাপত্তার কড়াকড়ি।
আজ মঙ্গলবার খালেদা জিয়ার আদালতে হাজিরা দেয়াকে কেন্দ্র করে পুরান ঢাকার বিশেষ জজ আদালত এলাকা ও আশপাশ এলাকায় কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা করা হয়েছে। বিশেষ করে হাইকোর্ট এলাকায় নজরদারি বেশি।
বিশেষ আদালত এলাকায় গিয়ে পুলিশের ব্যাপক উপস্থিত লক্ষ্য করা গেছে। এছাড়া র্যাবের গাড়িও টহল দিচ্ছে। আদালতে প্রবেশের পথে স্থাপন করা হয়েছে আর্চওয়ে।
গতদিনের মতো আদালতে প্রবেশের পথে স্থাপন করা হয়েছে আর্চওয়ে। এর পাশপাশি পুলিশের হাতে আছে হ্যান্ড মেটাল ডিটেক্টরও। আদালত চত্বরে আনা হয়েছে অত্যাধুনিক প্রিজনভ্যান। ভেতরে আসামির গতিবিধি পর্যবেক্ষণে এর ভেতরে আছে ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরাও।
আদালত চত্বরে যে প্রিজন ভ্যানটি আনা হয়েছে সেটির চালক রফিকুল বলেন, ‘ইতালি থেকে তিনটি বুলেটপ্রুফ প্রিজনভ্যান কেনা হয়েছে। এর মধ্যে দুটি দেয়া হয়েছে ডিএমপিকে। অন্যটি গাজীপুর পুলিশকে দেয়া হয়েছে। এসব প্রিজন ভ্যানে ছয় স্তরের নিরাপত্তা আছে।’
ঢাকা মহানগর পুলিশের একজন কর্মকর্তা জানিয়েছে, গত জুন মাসে এ ধরনের তিনটি প্রিজন ভ্যান আনা হয়েছে দেশে। মূলত গুরুত্বপূর্ণ আসামিদের পরিবহনের জন্য এই ভ্যানগুলো ব্যবহার করার কথা আছে।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের শেষ দিকে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনের করা জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় আজ, আগামীকাল এবং পরশুর মধ্যে যুক্তি তর্ক শেষ করতে হবে খালেদা জিয়ার আইনজীবীদের। আর এর আগে তিন কার্যদিবসে যুক্তি উপস্থাপনের সময় আদালতে উপস্থিত থাকবেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। আজও তার আদালতে থাকার কথা আগেই জানিয়েছেন আইনজীবীরা।
পুরান ঢাকার বকশিবাজারে বিশেষ জজ আদালতে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়ার পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন ছাড়াও এবং জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের যুক্তি উপস্থাপনের জন্য দিন ধার্য রয়েছে।
এই দুই মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসনের হাজিরাকে কেন্দ্রে করে গত চার কার্যদিবসেই সহিংসতা হয়েছে রাজধানীতে। খালেদা জিয়া আদালত ছাড়ার পর হাইকোর্ট এবং সচিবালয় এলাকায় বিএনপি নেতা-কর্মীদের সঙ্গে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়েছে পুলিশের, ভাংচুর হয়েছে বেশ কিছু গাড়ি। আর পুলিশ বিএনপির ৬০ জনেরও বেশি নেতা-কর্মীকে আটকও করেছে।
গত ৬ ডিসেম্বরও খালেদা জিয়ার আদালতে হাজিরা শেষে হাইকোর্ট এবং সচিবালয় এলাকায় বেশ কিছু গাড়ি ভাঙচুর করে বিএনপির নেতা-কর্মীরা। সেদিন বিএনপির ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক আমিনুল ইসলাম ছাড়াও বেশ কয়েকজনকে আটক করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
১৯ ডিসেম্বর খালেদা জিয়া আদালতে হাজিরা শেষে হাইকোর্ট এলাকায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ হয় বিএনপির নেতা-কর্মীদের। সে সময় তারা বেশ কিছু গাড়ি ভাঙচুরও করে। সেদিন ১২ জনকে আটক করে পুলিশ।
পরদিন আদালত থেকে হাজিরা দিয়ে খালেদা জিয়া বের হওয়ার পর আবার সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে এবং পুলিশ ৩০ জনকে আটক করেছিল।
২১ ডিসেম্বর খালেদা জিয়া আদালত থেকে ফেরার পথে হাইকোর্ট এলাকায় বিএনপি নেতা-কর্মীরা আবার সহিংসতায় জড়ায়। তারা পুলিশের ওপর ইট পাটকেল ছুড়লে বাহিনীটির পাঁচ সদস্য আহত হয়। সেদিন পাঁচ জনকে আটক করে।
সেই অভিজ্ঞতা থেকে আজ সকালে খালেদা জিয়া আদালতে উপস্থিত হওয়ার আগেই ব্যাপক নিরাপত্তার আয়োজন করার কথা জানিয়েছে পুলিশ।
দুই কোটি ১০ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ২০০৮ সালের ৩ জুলাই রমনা থানায় মামলা করে দুদক। খালেদা জিয়া ছাড়াও এই মামলায় তার বড় ছেলে তারেক রহমান, সাবেক মুখ্য সচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী, প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ভাগ্নে মমিনুর রহমান, মাগুরার সাবেক সংসদ সদস্য কাজী সালিমুল হক কামাল ও ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদকে আসামি করা হয়।
জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট নামে ওই মামলাতেও একই ধরনের অভিযোগ আনা হয়েছে। এই মামলাটির বিচারও প্রায় শেষ পর্যায়ে।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন