খালেদার সঙ্গে চীনের সম্পর্কে উন্নতি, উদ্বিগ্ন মোদি সরকার
বাংলাদেশে নির্বাচন এগিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে বেইজিং যেভাবে বিরোধী দল বিএনপি নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ বাড়াচ্ছে, তা নিয়ে উদ্বিগ্ন মোদি সরকার। তাই চীনকে ঠেকাতে বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ ও আলোচনার পরিধি বাড়াতে আগ্রহী দিল্লি। আগামী সপ্তাহে ঢাকা সফরের সময় বেগম জিয়ার সঙ্গে বৈঠকে বসতে চলেছেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ।
শুক্রবার (২০ অক্টোবর) এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে কোলকাতার শীর্ষস্থানীয় দৈনিক আনন্দবাজার পত্রিকা।
পত্রিকাটি বলছে, শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ সরকারের উপর প্রভাব ও অর্থনৈতিক কর্তৃত্ব তৈরি করতে দীর্ঘদিন ধরেই চেষ্টা চালাচ্ছে চীন। দক্ষিণ এশিয়ায় আধিপত্য বিস্তারের লক্ষ্যে নেপালের পাশাপাশি বাংলাদেশেও ভারতের ভূমিকা খর্ব করার কৌশলগত চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বেইজিং। এই প্রেক্ষাপটে খালেদার সঙ্গে চীনা প্রতিনিধিদের যোগাযোগের নতুন তথ্যে আতঙ্কিত দিল্লি।
হাঁটু ও চোখের চিকিৎসার জন্য ১৫ জুলাইয় লন্ডন গিয়েছিলেন খালেদা জিয়া। ফিরেছেন গত বুধবার। লন্ডনে পুত্র তারেক রহমানের বাড়িতে থেকে পাকিস্তান, চীন ও সৌদি আরবের কূটনীতিকদের সঙ্গে খালেদা বৈঠকে বসেছেন বলে খবর পেয়েছে দিল্লি। এজন্য বরাবরের মতই চির প্রতিদ্বন্দ্বী পাকিস্তানকে দূষছে ভারত।
তাদের অভিযোগ, খালেদার সঙ্গে ওই তিন দেশের কূটনীতিকদের যোগাযোগ করিয়ে দিয়েছে পাক গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই।
গত মাসের ২১ তারিখ লন্ডনে পাকিস্তান হাইকমিশনের দফতরে ‘ডিফেন্স ডে’অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়েছিলেন খালেদা। সেখানেই ব্রিটেনে নিযুক্ত চীনা রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে যোগাযোগ হয় বিএনপি নেত্রীর। তবে শেখ হাসিনার সঙ্গেও সুসম্পর্ক বজায় রেখেছে চীন।
আনন্দবাজারের ওই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, প্রধানমন্ত্রী হাসিনা ভারতের স্বার্থে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নেয়ার পাশাপাশি চীনের সঙ্গেও সম্পর্ককে এগিয়ে নিয়ে গিয়েছেন। বাংলাদেশে শক্তি, পরিকাঠামো এবং বাণিজ্য ক্ষেত্রে চীন বিশাল বিনিয়োগ করেছে।
এই পরিস্থিতিতে নয়াদিল্লি সরকারের একটি বড় অংশ বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে সম্পর্ককে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি খালেদার সঙ্গেও যোগাযোগ বাড়াতে আগ্রহী। আর চীনকে ঠেকাতেই যে তারা এখন বেগম জিয়ার সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তুলতে চাইছে সেটা ওই প্রতিবেদনে পরিষ্কার। কেননা ভারতীয় নেতারা মনে করছেন, বিএনপি নেত্রীকে চীনের প্রভাবে চলে যেতে দেওয়াটা দিল্লির জন্য ঠিক হবে না।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে পত্রিকাটি আরো জানায়, ‘বাংলাদেশের কোনও বিশেষ রাজনৈতিক দলের প্রতি দিল্লি পক্ষপাত দেখায় না। বাংলাদেশের কিছু দলই ভারত-বিরোধিতার রাজনীতি করে। দিল্লি চায়, আগামী নির্বাচনে সব দল অংশ নিক, যাতে নির্বাচন নিয়ে কোনও বিতর্ক না-ওঠে। কারণ, গুরুত্বপূর্ণ পড়শি দেশে রাজনৈতিক ব্যবস্থা দুর্বল হওয়াটা দিল্লির কাম্য নয়।’
তাই আগামী সপ্তাহে ঢাকায় খালেদা জিয়ার সঙ্গে বৈঠকের সময় বিএনপি নেত্রীকে আগামী নির্বাচনে অংশ নেওয়ার পরামর্শ দেবেন সুষমা স্বরাজ।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন