খালেদা জিয়ার জন্য বানানো কারাগারে এখন থাকবেন আওয়ামী লীগ নেতারা

আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে কেরানীগঞ্জে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের ভেতর বেগম খালেদা জিয়ার জন্য তৈরি করা হয়েছিল বিশেষ কারাগার।
তবে রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট পাল্টে যাওয়ায় সেই কারাগারে এখন বন্দি থাকবেন আওয়ামী লীগের নেতারা।

জানা গেছে, খালেদা জিয়াকে ওই কারাগারে স্থানান্তরের জন্য প্রস্তুতিও নিয়েছিল কারা কর্তৃপক্ষ। কিন্তু করোনা মহামারি শুরুর পর ২০২০ সালে তিনি মুক্তি পান। এরপর কয়েক দফায় তার মুক্তির মেয়াদ বাড়ানো হয়।

২০২৪ সালে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর পরিস্থিতি পুরোপুরি বদলে যায়। একের পর এক মামলায় খালাস পান খালেদা জিয়া। আর জেলে ফেরেননি তিনি।

অন্তর্বর্তী সরকার খালেদা জিয়ার জন্য তৈরি করা সেই বিশেষ কারাগার নতুনভাবে চালু করছে। ১৫ মে থেকে সেখানে বন্দি স্থানান্তরের কথা রয়েছে। কারাগারটিতে রাখা হবে আওয়ামী লীগের গ্রেপ্তার হওয়া মন্ত্রী, এমপি ও ভিআইপিদের।

কারাগার সূত্রে জানা গেছে, বিশেষ কারাগার চালুর প্রস্তুতি প্রায় সম্পন্ন। ইতোমধ্যে কারা কর্মকর্তাদের নিয়োগ দেয়া হয়েছে। সিনিয়র জেল সুপার হিসেবে মোহাম্মদ তাইফুদ্দিন ও জেলার হিসেবে শাখাওয়াত হোসেন দায়িত্ব নিয়েছেন। সিসিটিভি, জ্যামারসহ সব নিরাপত্তা ব্যবস্থা শক্ত করা হচ্ছে।

কারা কর্তৃপক্ষ জানায়, গ্রেপ্তার হওয়া প্রভাবশালী নেতাদের এই কারাগারে স্থানান্তর করা হবে। বর্তমানে গ্রেপ্তার হওয়া ভিআইপির সংখ্যা ১৪৬ জন।

কারাগারে যাচ্ছেন যারা

উল্লেখযোগ্যদের মধ্যে রয়েছেন- সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, মন্ত্রী শাজাহান খান, রাশেদ খান মেনন, হাসানুল হক ইনু, সাধন চন্দ্র মজুমদার, জুনায়েদ আহমেদ পলক, আরিফ খান জয়সহ আরও অনেকে।

এছাড়াও আছেন পুলিশের সাবেক এসপি সাদেক খান, সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন, বরখাস্ত পুলিশ কর্মকর্তা তানভীর সালেহ ইমন, বিতর্কিত সেনা কর্মকর্তা মেজর জেনারেল জিয়াউল আহসান, সাবেক রিয়ার অ্যাডমিরাল মো. সোহাইল, সাবেক মেয়র আতিকুল ইসলাম এবং সাবেক সচিব শাহ কামাল।

আরও রয়েছেন সাবেক ডেপুটি স্পিকার শামসুল হক টুকু, খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম, ডা. এনামুর রহমান, ডেপুটি গভর্নর সিতাংশু সুর চৌধুরী, দীপংকর তালুকদার, চিফ হুইপ আসম ফিরোজ, হাজি সেলিমের ছেলে সাবেক এমপি সোলায়মান সেলিম, শমসের মবিন চৌধুরী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ছেলে সাফি মোদাচ্ছের খান জ্যোতি, মহিউদ্দিন ফারুকী, কামরুল ইসলাম খান পোটন, পুলিশ কর্মকর্তা শাহেন শাহ এবং তানজিল আহমেদ।

এছাড়াও বিশেষ কারাগারে স্থানান্তরের তালিকায় রয়েছেন আরও একঝাঁক ভিআইপি বন্দি- সাবেক মন্ত্রী, উপদেষ্টা, সচিব ও এমপিরা। তাদের মধ্যে আছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা এইচটি ইমামের ছেলে ও সাবেক সংসদ সদস্য তানভীর ইমাম, আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুস সোবহান মিয়া (গোলাপ), কাজী জাফরউল্লাহ, আহম্মদ হোসাইন, শাহে আলম ও হাজি মোহাম্মদ সেলিম। রয়েছেন সাবেক হুইপ মাহবুব আরা গিনি, বিতর্কিত এমপি আব্দুর রহমান বদি এবং উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী ও ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী।

এই তালিকায় আরও আছেন- সাবেক মন্ত্রী লে. কর্নেল (অব.) মুহাম্মদ ফারুক খান, আমিনুল ইসলাম খান, নজিবুর রহমান, জাহাঙ্গীর আলম, মেজবাহ উদ্দিন, বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক, সাবেক ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া, ক্যাপ্টেন (অব.) এবি তাজুল ইসলাম, মোস্তাফা কামাল উদ্দিন, আসাদুজ্জামান নূর, হেলালুদ্দিন আহমেদ, টিপু মুনশি, জ্যাকব, মাহবুব আলী, ফরহাদ হোসেন, ইমরান আহমেদ, ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন ও কামাল আহমেদ মজুমদার।

এছাড়া রয়েছেন জাকির হোসেন, অ্যাডভোকেট নুরুল ইসলাম সুজন, আবুল কালাম আজাদ, ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু, নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন, আমির হোসেন আমু, আব্দুস শহীদ, ড. আব্দুর রাজ্জাক, শহিদুজ্জামান সরকার, ইসমাইল হোসেন, ডা. দীপু মনি, সাবেক আইজিপি মো. শহিদুল হক, ব্যারিস্টার সায়েদুল হক সুমন, গোলাম দস্তগীর গাজী, রমেশ চন্দ্র সেন, এবং সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চন্দন কুমার ধর ওরফে চিন্ময় কৃষ্ণ দাস। তালিকার আরও আছেন একরামুল করিম চৌধুরী, কর্নেল (অব.) জাহিদ ফারুক শামীম, মেজর (অব.) শাহজাহান ওমর, নারায়ণ চন্দ্র চন্দ এবং আব্দুস সালাম মুর্শেদী।