খালেদা জিয়া গণতন্ত্রের স্বার্থে প্রধানমন্ত্রিত্ব ছেড়ে দিয়েছিলেন: সালাম

বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক আবদুস সালাম বলেছেন, ওবায়দুল কাদের কথায় কথায় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে খালেদা জিয়ার তুলনা দেন। তার সঙ্গে কারো তুলনা হয় না।

খালেদা জিয়া কারো সঙ্গে আপস করেন না। এরশাদের সঙ্গে আপস করে নির্বাচনে কে গিয়েছিল, ১/১১তে কে ফখরুদ্দিন সরকারের সঙ্গে আপস করেছিলেন? তখন যদি খালেদা জিয়া আপস করতেন তখনও আপনি (শেখ হাসিনা) নন, খালেদা জিয়াই আবার প্রধানমন্ত্রী হতেন।

চলমান আন্দোলনেও অনেকবার আপসের প্রস্তাব দিয়েছিলেন। আপসহীন নেত্রী আপস করেননি।

৯৬ সালে তিনি নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী হওয়া সত্ত্বেও গণতন্ত্রের স্বার্থে প্রধানমন্ত্রীত্ব থেকে পদত্যাগ করেছিলেন। তিনি আপস করেছিলেন জনগণের স্বার্থে, গণতন্ত্রের স্বার্থে। তিনি বলেন, খালেদা জিয়া এখনও বন্দি। ইশরাককে হাইকোর্ট জামিন দিলেও নিম্ন আদালত তাদের কারাগারে পাঠায়। জেল-জুলুম বিএনপি ভয় পায় না। এসবে অভ্যস্ত হয়ে গেছে।

সোমবার (১০ জুন) বিকেলে বিএনপির নয়াপল্টন কার্যালয়ের সামনে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের জ্যেষ্ঠ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি জহির উদ্দিন তুহিনসহ সব রাজবন্দিদের মুক্তির দাবিতে ঢাকা-৬ আসনের সাবেক ছাত্রদল নেতাদের আয়োজিত এক মানববন্ধনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

সাইদুর রহমান মিন্টুর সভাপতিত্বে মুকিতুল হাসান মঞ্জুর সঞ্চালনায় এতে প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনু।

সালাম বলেন, এ সরকার সিন্ডিকেটের সরকার। সব কালোবাজারীদের সঙ্গে, দুর্নীতিবাজদের সঙ্গে সিন্ডিকেট করে এ সরকার ক্ষমতায় এসেছে। আজকে বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিকদের ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। ব্যাংকের গভর্নর কি প্রধানমন্ত্রীর চেয়ে বেশি শক্তিশালী। আসলে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশই গভর্নর পালন করেছেন।

তিনি আওয়ামী লীগের শরিক দলগুলোর উদ্দেশে বলেন, আজকে যারা জোটে আছেন মঞ্জু, ইনু এবং মাহি সাহেব। জনগণের পাশাপাশি আপনাদের সঙ্গেও প্রধানমন্ত্রী প্রতারণা করেছেন। তিনি কিন্তু লতিফ সিদ্দিকীকে ঠিকই এমপি বানিয়েছেন। তার পাশে দাঁড়িয়েছেন। লতিফ সিদ্দিকী নিজে সংসদে বলেছেন-প্রধানমন্ত্রী সরাসরি হস্তক্ষেপ না করলে এমপি হতে পারতাম না। কই মঞ্জু, ইনু ও মাহিকে এমপি বানাতে কোনো হস্তক্ষেপ করলেন না। আপনাদের পাশেতো দাঁড়াননি। এখনও সময় আছে তাদের ত্যাগ করে জনগণের পাশে দাঁড়ান।

বাজেটে বেকারদের কর্মসংস্থানে কথা বলা নেই। নতুন শিল্প কলকারখানা কথা নেই। আজকে শিক্ষিত বেকাররা বিদেশ চলে যাচ্ছেন। কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দিয়ে দুর্নীতিবাজদের আরও উৎসাহ দেওয়া হয়েছে। আপনি (প্রধানমন্ত্রী) দেশে এসে পদত্যাগের ঘোষণা দেন। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন দেন। তাহলেই দেশের সব সমস্যার সমাধান হবে। মুক্তি পাবে গণতন্ত্র, আর মানুষ ফিরে পাবে বাকস্বাধীনতা।

মানববন্ধনে অংশ নিয়ে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনু বলেন, এখনও বিএনপির হাজার হাজার নেতাকর্মীদের আটক রাখা হয়েছে। যেসব মামলার কোনো ভিত্তি নেই। যেখানে ন্যায় বিচার নেই, সেখানে বিচার চেয়ে লাভ নেই। আজকে দুর্নীতিবাজ ও লুটেরা ঘুরে বেড়ায় আর গণতন্ত্রের মা খালেদা জিয়া, ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন কারাগারে।

আজকে যারা দেশের অর্থনীতিকে পঙ্গু করে দিয়েছে। হাজার হাজার কোটি টাকা লুট করছে তাদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না। আজকে যে বেনজীরকে দিয়ে বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর হামলা করিয়েছেন, হত্যা করিয়েছিলেন, হাজার কোটি টাকা লুট করার সুযোগ করে দিয়েছিলেন তার বিচারতো করছেনই না, বরং দেশ থেকে যাতে পালাতে পারে সেই ব্যবস্থা করে দিলেন।

মানববন্ধন কর্মসূচিতে আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু, বন ও পরিবেশ বিষয়ক সহ সম্পাদক রওনাকুল ইসলাম টিপু, সহ স্বাস্থ্য বিষয়ক ডা. পারভেজ রেজা কাকন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক নবী উল্লাহ নবী, যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুস সাত্তার, লিটন মাহমুদ, জিয়া মঞ্চের সাধারণ সম্পাদক ফায়েজুল্লাহ ইকবাল, শ্রমিক দলের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক সুমন ভূইয়া ও মহিলা দলের সভানেত্রী রুমা আক্তার।