খালেদা জিয়াকে কোথায় রাখা হচ্ছে, চিকিৎসক কারা?

বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য কারাগার থেকে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে। আদালতের নির্দেশ অনুসারে শনিবার বিকেল পৌনে ৪টার দিকে তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়।

হাসপাতালের একটি সূত্র নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছে, হাসপাতালের ভিআইপি ডিলাক্স ৬১১ এবং ৬১২ নম্বর কেবিনে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে চিকিৎসা দেওয়া হবে।

আর রোববার দুপুর ১টায় খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ডের সভা শেষে তাঁর শারীরিক অবস্থা ও চিকিৎসা সম্পর্কে জানানো যাবে বলে জানিয়েছেন হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল হারুন আর রশিদ।

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় পাঁচ বছরের দণ্ডপ্রাপ্ত খালেদা জিয়াকে গত ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে পুরান ঢাকার নাজিম উদ্দিন রোডের সাবেক কেন্দ্রীয় কারাগারের একটি কক্ষে রাখা হয়েছে। এরপর গত ৭ এপ্রিল তাঁকে বিএসএমএমইউ হাসপাতালে এনে চিকিৎসা দেওয়া হয়। পরে সেদিনই তাঁকে কারাগারে ফিরিয়ে নেওয়া হয়।

কারাগারের নির্জন কক্ষে খালেদা জিয়া গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তাঁর সুচিকিৎসার জন্য লিখিত আবেদন নিয়ে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা দুইবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের সঙ্গে সচিবালয়ে গিয়ে দেখা করেন। খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের অবনতির বিষয়টি তুলে ধরে তাঁকে দ্রুত রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে ভর্তির অনুরোধ জানান বিএনপির নেতারা।

সরকারের পক্ষ থেকে ইউনাইটেড হাসপাতালের পরিবর্তে বিএসএমএমইউ অথবা সিএমএইচে চিকিৎসা নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়।

এই পরিপ্রেক্ষিতে খালেদা জিয়ার চিকিৎসার বিষয়ে হাইকোর্টের নির্দেশনা চেয়ে একটি রিট আবেদন করেন তাঁর আইনজীবীরা। গত বৃহস্পতিবার হাইকোর্ট খালেদা জিয়ার বিষয়ে একটি নির্দেশনা দেন। এতে খালেদা জিয়ার পছন্দের চিকিৎসক ও নিরপেক্ষ চিকিৎসদের সমন্বয়ে একটি মেডিকেল বোর্ড গঠন করে বিএসএমএমইউতে চিকিৎসার বিষয়ে নির্দেশনা দেন আদালত।

হাইকোর্টের আদেশে বলা হয়েছে, খালেদা জিয়া তাঁর পছন্দমতো ফিজিওথেরাপিস্ট, গাইনোকোলজিস্ট ও টেকনিশিয়ান নিতে পারবেন। মেডিকেল বোর্ডের অনুমতি সাপেক্ষে বাইরে থেকে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকও আনতে পারবেন। হাইকোর্টের এ নির্দেশনা অনুযায়ী খালেদা জিয়া চিকিৎসা গ্রহণে সম্মত হন বলে জানিয়েছেন অ্যাডভোকেট সানাউল্লাহ মিয়া।

বিএনপির চেয়ারপারসনের কার্যালয়ের মিডিয়া উইংয়ের কর্মকর্তা শায়রুল কবির খান জানান, এর আগে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর চিকিৎসার জন্য পাঁচ সদস্যের একটি মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়েছিল। আদালতের নির্দেশে সেই বোর্ডের চিকিৎসক ডা. এম এ জলিল (মেডিসিন) ও সহকারী অধ্যাপক ডা. বদরুন্নেসা এখন থাকছেন। এ ছাড়া নতুন করে অধ্যাপক ডা. সৈয়দ আতিকুল হক (নিউমটোলিজ), অধ্যাপক সজল কৃষ্ণ ব্যানার্জি (কার্ডিওলজি), অধ্যাপক নকুল কুমার দত্তকে (অর্থোপেডিক্স) বোর্ডে যুক্ত করা হয়েছে বলে জেনেছি।’ এর বেশি কিছু জানেন না বলেও জানান মিডিয়া উইংয়ের এই কর্মকর্তা।

তবে খালেদা জিয়ার পছন্দের চিকিৎসক মেডিকেল বোর্ডে আছেন কি না জানতে চাইলে বিএসএমএমইউ হাসপাতালের পরিচালক বলেন, ‘আদালতের নির্দেশে আবদুল জলিল চৌধুরী ও ডা. বদরুন্নেসাসহ পাঁচজন ডাক্তারের মেডিকেল বোর্ড আমরা গঠন করেছি। আদালত আদেশে বলেছেন, এখানে ভর্তি হওয়ার পর আমরা সেই অনুসারে একটি মেডিকেল বোর্ড গঠন করেছি। এর পরও যদি তাঁর নিজস্ব কোনো পছন্দের ডাক্তার থাকেন উনি বলার সঙ্গে সঙ্গে সে বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’