খুলনার কয়রায় কথিত মাদক সম্রাটের বিদেশী অবৈধ মদের রমরমা ব্যবসা

শারদীয় দূর্গোৎসব উপলক্ষে খুলনার কয়রা উপজেলায় যুব সমাজের মধ্যে বিদেশী অবৈদ মদের চাহিদা ছিল তুঙ্গে। ফলে দামও বাড়িয়ে দেয় বিক্রেতা। উপজেলার দক্ষিণ বেদকাশি ইউনিয়নের খাসিটানা নৌ-পুলিশ ফাঁড়ি সংলগ্ন চেক পোস্টে আগত বিদেশী জাহাজ থেকে আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ডের মদ নামমাত্র মূল্যে ক্রয় করে কয়রা ও অন্যত্র সরবরাহ করে কথিত এক মাদক সম্রাট।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, ওই মাদক সম্রাট স্বল্প মূল্যে অবৈধ বিদেশী মদ কিনে উপজেলার সর্বত্র অধিক মূল্যে বিক্রি করে। স্থানীয় রাজনীতিক, জনপ্রতিনিধি ও প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ীদের পাশাপাশি উঠতি বয়সী তরুণ-যুবকরা ওই মাদক বিক্রেতার মূল টার্গেট। বিদেশী মদ বিকিকিনি সিন্ডিকেট চক্র কয়রাতে ‘ওপেন সিক্রেট’। এদিকে কতিপয় অসাধু রাজনীতিবিদ ও জনপ্রতিনিধি এই মাদক বিক্রেতার কাছ থেকে নিয়মিত মাসোয়ারা পায় বলে অভিযোগ উঠেছে। শুধু মদ নয় গাজা, ইয়াবা, ফেন্সিডিল সরবরাহ করে বলে অভিযোগ উঠেছে। সাম্প্রতিক সময় ও এলাকার এক জনপ্রিনিধির নিকট আত্মীয়ের ইয়াবা সেবনের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।

স্থানীয় একাধিক সূত্রে জানা গেছে, সুন্দরবন হয়ে দক্ষিণ বেদকাশি ইউনিয়নের খাসিটানার প্রবেশদ্বার দিয়ে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে প্রতিদিন গড়ে ৫ থেকে ৭টি দেশী-বিদেশী জাহাজ প্রবেশ করে। এসব জাহাজ কর্তৃপক্ষকে কাস্টমস্ এর অবৈধ সুযোগ-সুবিধা দিয়ে বিদেশী মদের চালান নিয়ে আসে স্থানীয় এক মাদক সম্রাট। স্থানীয় প্রভাবশালী মহল ও প্রশাসনকে ম্যানেজ করেই দীর্ঘদিন ধরে চলছে তার মাদক সিন্ডিকেটের অভয়ারণ্য। ওই মাদক সম্রাটের বিশ্বস্থ স্থানীয় কয়েকজন যুবক কয়রা উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় মাদক পৌঁছে দেয়। কখনো খাসিটানা এলাকায় গিয়ে মদ ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে মদ বা অন্য মাদক নিয়ে আসছে মাদকসেবীরা। দুর্গা পূজা উপলক্ষ্যে বিদেশী ব্র্যান্ডের মদ এনে কয়রায় কতিপয় ছাত্রনেতা নামধারী কিছু যুবক মিলে মদের পার্টিও দিয়েছেন।

স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, ওই মাদক সম্রাট কাস্টমস্ কর্মকর্তার পরিচয় দিয়ে খাসিটানা কাস্টমস্ অফিস ও নৌ-পুলিশ ফাঁড়ি নিয়ন্ত্রণ করে, ও পুলিশ ক্যাম্প নিয়ন্ত্রণ করে । তার মাদক বিক্রির মাসোয়ারা কয়রা থেকে শুরু করে খুলনা পর্যন্ত পৌঁছে যায়। ‘ওপেন সিক্রেট’ মাদক সম্রাট এতোটাই প্রভাবশালী যে তার বিরুদ্ধে কথা বলার সাহস নেই স্থানীয়দের। তার অপকর্মের প্রতিবাদ বা মাদক বিকিকিনি সম্পর্কে তথ্য ফাঁস করলে তাকে হয়রানিমূলক মামলায় জড়ানোর হুমকি কিংবা আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী দিয়ে মারপিট করানো হয়।

এসব বিষয়ে কয়রা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এসএমএ দোহা বলেন, ‘বিষয়টি তদন্তসাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থান নেয়া হবে। যদি সত্যতা পাওয়া গেলে, তাদের সাথে জড়িত সকলের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। ওসি কয়রায় মাদক ব্যবসায়ী ও মানবসেবীদের কঠিন হুশিয়ারী দিয়ে আরও বলেন, কয়রায় মাদকের বিরুদ্ধে পুলিশের জিরো টলারেন্স। এবিষয়ে কোন প্রকার ছাড় নেই।