খুলনার কয়রায় গায়ে এসিড ঢেলে প্রতিপক্ষকে ফাঁসানোর চেষ্টা
খুলনার কয়রায় গায়ে এসিড জাতীয় পদার্থ ঢেলে প্রতিপক্ষকে ফাঁসানোর চেষ্টা করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে গৃহবধূ শামীমা নাসরিনের (৩২) বিরুদ্ধে।
শনিবার (২৪ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাতে ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার মহেশ্বরীপুর ইউনিয়নের কুচির মোড় সংলগ্ন এলাকায়। তবে ফাঁসানোর অভিযোগ অস্বীকার করে এটাকে ষড়যন্ত্র বলে দাবি অভিযুক্তের। এদিকে ঘটনা খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন কয়রা থানা পুলিশ।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, শামীমার সাথে দীর্ঘদিন ধরে জমি সংক্রান্ত বিরোধ চলছিল একই গ্রামের আব্দুল খালেক ও লেয়াকত গংদের সাথে। প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে নিজের গায়ে নিজেই এসিড জাতীয় পদার্থ ঢেলে তাদের মামলায় ফাঁসানোর চেষ্টা করছে। এর আগেও শামীমা এলাকার নিরীহ ও সাধারণ মানুষের নামে মামলা দেয় প্রতিহিংসার বশে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, তার গায়ে কেউ এডিস নিক্ষেপ করেছে কিনা। তা তার প্রতিবেশী ও স্থানীয়রা কেউ জানেনা। হঠাৎ সকালে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর তারা বিষয়টা জানতে পারেন। এলাকাবাসীর দাবি, এটা ওই মহিলার সম্পূর্ণ প্রতিপক্ষকে ফাঁসানোর ফাঁদ। এসময় এলাবাসী শামীমার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনৈতিক কর্মকান্ড, একাধিক বিয়ে ও অবৈধ স্থাপনের কথা বলেন।
প্রতিবেশী আব্দুল খালেক বলেন, শামীমাকে দিয়ে তার স্বজনেরা জোর করে ভয়-ভ্রীতি দেখিয়ে আমাদের জমি দখল করে খাচ্ছে। উল্টো বিভিন্ন মিথ্যা ও বানোয়াট তথ্য দিয়ে সংবাদ করিয়ে মামলা দিয়ে হয়রানি করছে।
সরেজমিনে গেলে ছোট বাচ্চা কোলে নিয়ে কান্না বিজড়িত কন্ঠে সাবিনা বলেন, আমি কিছুই জানিনা। তার সাথে আমার কোন শত্রুতা নেই। জমি সংক্রান্ত বিরোধ পারিবারিক ও বংশগত। আমার বাচ্চা একেবারে ছোট। সে আমাকেও ছাড় দেইনি মিথ্যা মামলা দিতে। এসিড নিজের গায়ে দিয়ে আমাদের ভাসাতে চেষ্টা করছে।
শিক্ষিকা শামীমার প্রতিবেশী খায়রুল বলেন, তার বাড়ির পাশে আমার বাড়ি। রাতে এডিস মারবে তা অন্তত পক্ষে আমরা তো জানবো। আমরা মনে হচ্ছে, তাদের প্রতিপক্ষকে ফাসানোর পায়তারা করছে।
শামীমা নাসরিন বলেন, প্রতিদিনের ন্যায় নিজের ঘরে রাতে ঘুমিয়ে পড়ি। হঠাৎ গভীর রাতে শরীরে জ্বালা পোড়ায় চিৎকার চেঁচামেচি করে বাড়ির সকলকে ডাকি। ভোর সাড়ে ৫টায় পরিবার আমাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। তবে কে বা কারা এসিড নিক্ষেপ করেছে তা নিশ্চিত করতে পারেনি তিনি।’
শামীমা প্রথমে এমন বক্তব্য প্রশাসন ও গণমাধ্যমে দিলেও পরে পূর্বে যাদের সাথে জমি নিয়ে শত্রুতা তাদের নাম উল্লেখ করে। তাদের দোষারোপ করে মামলা করার চেষ্টাও করছে।
হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. সুজিত কুমার বৈদ্য বলেন, মেজর তেমন কিছু দেখছি না, এসিড কিনা সন্দেহ হচ্ছে। এসিড হলে ক্ষত হতো। যতটুকু সমস্যা, সেটুকু এখানে চিকিৎসা সম্ভব। কিন্তু ভিকটিম খুলনায় যেতে চাচ্ছে তাই তাদের রেফার্ড করা হয়েছে।
কয়রা থানার অফিসার্স ইনচার্জ এ.বি.এম.এস. দোহা বিপিএম বলেন, সংবাদ পেয়ে আমি নিজেই হাসপাতালে গিয়ে তাদের সাথে সাক্ষাৎ করি। বিষয়টি খতিয়ে দেখে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার প্রস্তুতি চলছে।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন