খুলনার কয়রায় চেয়ারম্যানের ভাগ্নের নেতৃত্বে ছাত্রলীগ নেতাকে কুপিয়ে জখম, থানায় মামলা
র্যাবের হাতে গ্রেফতার হয়ে জেল খাটার পরে আবারও দুর্ধর্ষ হয়ে উঠেছে কয়রা সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম বাহারুল ইসলাম। এবার তারই নির্দেশে ক্যাডার ভাগ্নে আশিক, আরাফাত সহ গুন্ডা বাহিনী রামদা, চাপাতি সহ রড দিয়ে জাহাঙ্গীর আলম আকাশ নামে এক সাবেক ছাত্রলীগের নেতা তাকে কুপিয়ে জখম করেছে।
ঘটনাটি ঘটেছে ১৮ ফেব্রুয়ারি (শনিবার) দিবাগত রাত সাড়ে ৯ টায় কয়রা হাইস্কুল মোড়ে সবুজের চা দোকানে। আকাশ সদর ইউনিয়নের ১নং কয়রা গ্রামের হাবিবুল্লাহ গাজীর ছেলে।
এবিষয়ে ১৯ ফেব্রুয়ারি (রোববার) কয়রা থানায় ১। আশিক (২৩), পিং- আশরাফুল ইসলাম, ২। আরাফাত হোসেন (২৫) ও ৩। সজিব হোসেন (২৩), উভয় পিং- মাজহারুল ইসলাম সহ অজ্ঞাত ৫-৬ জনকে আসামি করে মামলা রুজু হয়েছে।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, পুর্ব পরিকল্পনামতো খুন করার উদ্দেশ্য ১ ও ২ নং সন্ত্রাসী চাইনিজ কুড়াল দিয়ে আকাশের মাথার পিছনে কুপিয়ে রক্তাক্ত জখম করে। ৩নং আসামি হাতুড়ি দিয়ে আকাশের বাম চোখে আঘাত বাম হাতে, বুকে ও পিঠে এলোপাতাড়ি পিটিয়ে হত্যার চেষ্টা করে। এসময় তার কাছে থাকা বাবার গরু বিক্রির ১ লক্ষ টাকা ২৫ হাজার টাকা দামের ভিভো ফোন ১নং আসামী ছিনিয়ে ছিনিয়ে নেয়। আকাশের চিৎকার আর্তনাদে লোকজন উপস্থিত হলে তারা পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয়রা রক্তাক্ত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।
আহত আকাশ বলেন, আমি বাবার ব্যবসার গরু বিক্রির ১ লাখ টাকা নিয়ে কয়রা বাজারে পৌঁছালে চেয়ারম্যান বাহারুলের ভাগ্নে আশিক, আরাফাত সহ ৫-৬ জন আমাকে মাথায় রামদা, চাপাতি দিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে কোপাতে থাকে। মানুষ মানুষকে এভাবে মারে না। ওরা আমাকে ইচ্ছাখুশি মতো মারে। আমি পা ধরেও ক্ষমা পাইনি। ওরা আমার থেকে ব্যবসার ১ লাখ টাকা ও মোবাইল ফোন কেড়ে নিয়েছে। এর আগেও গত বছর আমাকে তুলে নিয়ে বাহারুলের টর্চার সেলে আটকিয়ে ৬ ঘন্টা অমানবিক মারপিট করে। আমার টাকা ও মোবাইল ফোন ফেরত চাই। উপকূলবাসীকে চেয়ারম্যান বাহারুল ও তার গুন্ডা বাহিনীর অত্যাচারের হাত থেকে রক্ষা করতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
অভিযোগ রয়েছে, চেয়ারম্যান বাহারুলের সন্ত্রাসী বাহিনীর হাতে হামলার শিকার হয়েছে মুক্তিযোদ্ধা, সাংবাদিক, আওয়ামীলীগ নেতা, অধ্যক্ষ শিক্ষক, সার্ভেয়ার সহ কয়রার সর্বস্তরের জনগণ। চাঁদাবাজি, ছিনতাই করে বাহারুল টিনসেড থেকে কোটি কোটি মালিক টাকার মালিক হয়েছে।
এ বিষয়ে কয়রা সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা এস এম বাহারুল ইসলাম তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমি চিকিৎসার জন্য খুলনায় অবস্থান করছি। কি হইছে আমার জানা নেই। খোঁজ নিয়ে বলতে পারবো।
কয়রা থানা অফিসার ইনচার্জ এবিএমএস দোহা (বিপিএম) বলেন, ঘটনাটি শুনার পরপরই ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে। থানায় মামলা হয়েছে। তদন্ত করে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
খুলনা পুলিশ সুপার মাহবুব হাসান বলেন, তার বিরুদ্ধে আগেও অনেক অভিযোগ শুনেছি। আমরা তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণ করবো৷ যেই হোক না কেন, কোন সন্ত্রাসী কর্মকন্ডা করার সুযোগ নেই। আমরা মাদক ও সন্ত্রাসীর বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্সে আছি।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন