গরু-মুরগির দাম কমলেও বেড়েছে রসুনের

রাজধানীর বাজারগুলোতে আমদানি করা চীনা রসুন বিক্রি হচ্ছে ৪০০ থেকে ৪২০ টাকা কেজি দরে। এক সপ্তাহ আগেও এ পণ্যটির দাম ছিল ২০০ থেকে ২২০ টাকা কেজি।

রোজার প্রথম দিনেই হুট করে বেড়ে যায় রসুনের দাম। প্রথম রোজায় অর্থাৎ রোববার এক লাফে আমদানি করা এই পণ্যটির দাম প্রায় দ্বিগুণ হয়ে ৩৮০ থেকে ৪০০ টাকায় উঠে যায়। যা সপ্তাহের শেষ দিন শুক্রবার আরও একটু বেড়েছে।

আমদানি করা চীনা রসুনের দাম বাড়লেও রাজধানীর বাজারগুলোতে নাগালের মধ্যেই রয়েছে দেশি রসুন। অঞ্চল ও বাজার ভেদে প্রতি কেজি দেশি রসুন বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকা থেকে ১১০ টাকা কেজি দরে।

এদিকে রোজার প্রভাবে গত সপ্তাহে বেড়ে যাওয়া গরুর মাংস ও ব্রয়লার মুরগির দাম শুক্রবার কিছুটা কমেছে। বাজার ভেদে গরুর মাংসের দাম কেজিতে কমেছে ২০ থেকে ৩০ টাকা। আর ব্রয়লার মুরগির দাম কমেছে কেজিতে ১০ থেকে ১৫ টাকা।

মুরগি ও গরুর মাংসের দাম কমলেও গত কয়েক মাসের মতো প্রায় স্থির রয়েছে সবজির দাম। পটল, করলা, ধেড়স, ধুনদল, ঝিঙ্গা কোন কিছুই ৪০ টাকা কেজি দরের নীচে মিলছে না।

শুক্রবার যাত্রাবাড়ি ও সায়েদাবাদ অঞ্চলের বিভিন্ন বাজার ঘুরে এবং ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।

ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, কয়েক মাস ধরেই পটল, ঝিঙা, ধুন্দল, করলা, বরবটি, ঢেড়স, টমেটোসহ প্রায় সব সবজির দাম ৩০ থেকে ৪০ টাকার ওপরে রয়েছে। তবে গত সপ্তাহের তুলনায় চলতি সপ্তাহে বেগুন, পটল ও ঢেড়সের দাম কিছুটা বেড়েছে।

শুক্রবার প্রতি কেজি গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৪৮০ টাকা কেজি দরে। যা গত সপ্তাহে ছিল ৫০০ টাকা থেকে ৫১০ টাকা।

সাদা বয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকা থেকে ১৬৫ টাকা কেজি দরে। যা গত সপ্তাহে ছিল ১৬০ থেকে ১৬৫ টাকা কেজি দরে। গত সপ্তাহে যা ছিল ১৪৫ থেকে ১৫০ টাকা। লাল কক মুরগি আগের সপ্তাহের মতোই ১৬০ থেকে ১৬৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

এদিকে কাঁচা সবজির মধ্যে পটলের দাম কেজিতে ১০ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৪৫ টাকা কেজি দরে। গত সপ্তাহে এ সবজিটি বিক্রি হয়েছিল ৩০ থেকে ৩২ টাকা কেজি দরে।

গত সপ্তাহে ৪০ থেকে ৪৫ টাকায় বিক্রি হওয়া বেগুনের দামে বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা কেজি দরে। আর ২০ থেকে ২৫ টাকায় বিক্রি হওয়া ঢেড়সের দাম এক লাফে বেড়ে ৩৫ থেকে ৪০ টাকায় চলে এসেছে।

তবে আগের সপ্তাহের মতো ৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে ধুন্দল, ঝিঙা ৪০ থেকে ৪৫ টাকা, করলা ৪০ থেকে ৪৫ টাকা, টমেটো ৪০ থেকে ৪৫ টাকা, শসা ২০ থেকে ২৫ টাকা, বরবটি ৪০ থেকে ৫০ টাকা, কচুরলতি ৪০ থেকে ৪৫ টাকা, ডাটা ২০ টাকা আটি।

যাত্রাবাড়ি বৌ-বাজারের পিঁয়াজ, রসুনের বিক্রেতা মো. কামাল হোসেন বলেন, গত সপ্তাহে প্রতি কেজি আমদানি করা চীনা রসুন বিক্রি করেছি ২০০ থেকে ২২০ টাকা। সেই রসুনই রোজার আগের দিন কিনতে হয়েছে সাড়ে তিন’শ টাকার বেশি দাম দিয়ে। যে কারণে আমরা প্রথম রোজায় চীনা রসুন ৩৮০ টাকা কজি দরে বিক্রি করেছি। তবে এ রসুনটির দাম এখন আরও বেড়ে ৪০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

এই ব্যবসায়ী বলেন, আমদানি করা রসুনের দাম বাড়লেও দেশে রসুনের দাম বেশ কম রয়েছে। ১০০ টাকা কেজি হিসেবে বিক্রি করা হচ্ছে দেশি রসুন। আমদানি করা রসুনের দাম বাড়ায় এর বিক্রিও কমে গেছে। আগে যেখানে সপ্তাহে ৪ থেকে ৫ বস্তা রসুন বিক্রি হতো, এখন বিক্রি হচ্ছে হাফ বস্তা থেকে এক বস্তা।

যাত্রাবাড়ি কাঁচাবাজারের সবজি বিক্রেতা মো. জামাল হোসেন বলেন, সবজির দাম আগে যা ছিল এখনো তাই রয়েছে। দুই মাসের বেশি সময় ধরে সবজির দাম অনেকটা স্থির। তবে গত সপ্তাহের তুলনায় পটল, বেগুন ও ঢেড়সের দাম কিছুটা বেড়েছে। নতুন সবজি না উঠা পর্যন্ত হয় তো এমন বাড়তি দামেই সবজি বিক্রি হবে।

ধলপুরের গরুর মাংসের বিক্রেতা মো. হেলাল বলেন, রোজার কারণে গত সপ্তাহে গরুর মাংস প্রতিকেজি ৫১০ টাকা বিক্রি করেছি। আজ দাম কমে গেছে। ৪৮০ টাকা কেজি দরে মাংস বিক্রি করা হচ্ছে।