গাইবান্ধায় রেলের দূরত্ব রেয়াতি সুবিধা বাতিলের প্রতিবাদে মানববন্ধন

রেলপথের দূরত্বভিত্তিক রেয়াতি সুবিধা প্রত্যাহারের ফলে ভাড়া বাড়ছে রেল যাত্রায়। রেয়াত পদ্ধতি বাতিলকে অসাংবিধানিক অন্যায় এবং রংপুর বিভাগের সাথে বৈষম্য বাড়ানোর শামিল উল্লেখ করে এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করে রেলে যাতায়াতে রংপুর বিভাগ থেকে ঢাকা পর্যন্ত পূর্বের রেয়াত পদ্ধতি চালুর দাবি জানিয়ে গাইবান্ধায় মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়েছে।

শুক্রবার (৩১ মে) সকাল ১১টার দিকে গাইবান্ধা রেলওয়ে স্টেশন প্লাটফর্মে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

রেল-নৌ যোগাযোগ ও পরিবেশ উন্নয়ন গণকমিটির কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সাবেক সভাপতি এবং রেল আধুনিকায়ন ও ভাড়া কমানো আন্দোলনের সমন্বয়ক নাহিদ হাসানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশগ্রহণ করেন।

এতে সংহতি জানিয়ে বক্তব্য দেন, রাষ্ট্র-সংস্কার আন্দোলন গাইবান্ধা জেলা শাখার আহ্বায়ক মৃনাল কান্তি বর্মন, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট জেলা সভাপতি পরমানন্দ দাস, ছাত্র ফ্রন্ট গাইবান্ধা সরকারি কলেজ শাখার সভাপতি কলি রানী বর্মন, সাধারণ সম্পাদক কামরুল হাসান ও বাংলাদেশ ভুমিহীন আন্দোলনের সিনিয়র সাধারণ সম্পাদক লায়ন সামিউল আলম রাসু।

এসময় উন্নয়নকর্মী মনোয়ার হোসেন, মানবাধিকার নাট্য পরিষদের জেলা সভাপতি আলম মিয়া, শিক ও সমাজকর্মী সৌমেন সিংহ গোস্বামী, বিমল সরকার পাঠাগারের সাধারণ সম্পাদক শামীম সরকার, সামজিক সংগঠন গ্রীণ ভয়েস সদস্য কনক, আশিকুর, আলিফ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, ১৯৯২ সলে বাংলাদেশ রেলওয়েতে দূরুত্বভিত্তিক ও সেকশনভিত্তিক রেয়াতি দেওয়া হয়। গত ১৬ মার্চ রেলওয়ের মহাপরিচালক রেলের ভাড়া বাড়ছে বলে জানিয়েছেন। পরবর্তীতে রেলমন্ত্রী ভাড়া বৃদ্ধির কথা না বললেও রেলে যে রেয়াতি দেওয়া হয়েছিল তা গত ৪মে থেকে তুলে নেওয়ার কথা জানান। সর্বশেষ জরিপে, দেশের গরীব জেলা রংপুর বিভাগে।

বগুড়া ও সিরাজগঞ্জ দুই জেলার মধ্যে রেলওয়ের দূরত্ব মাত্র ৭২ কিলোমিটার। অথচ রেলপথে সান্তাহার, নাটোর ও ঈশ্বরদী ঘুরে আসতে হয় ১২০ কিলোমিটার। বাড়তি পথে বাড়তি সময়ের সঙ্গে এখন গরীব জেলার মানুষদের গুনতে হবে বাড়তি ভাড়া।

তারা আরও বলেন, বগুড়া-সিরাজগঞ্জ রেল লাইন চালু না করে রেলওয়ের সৃষ্টি ঘুরাপথের ১২০ কিলোমিটারের ভাড়ার দায় কেন মেটাবে রংপুরবাসী। রেলপথের দূরত্ব না কমিয়ে যখন ভাড়া বৃদ্ধি করা হয়।

যেখানে আগের ভাড়াটাই ছিল বৈষম্যমূলক, সেখানে রেয়াতি সুবিধা প্রত্যাহার করে নতুন ভাড়া রংপুর বিভাগের মানুষের সাথে অন্যায়। নতুন করে রেয়াত তুলে নেয়ায় ভাড়াবৃদ্ধি হয়েছে ৩০ থেকে ৪০ ভাগ। এটা অসাংবিধানিক, অন্যায়। এ সময় রংপুর বিভাগে রেলের দুরাবস্থা তুলে ধরে দাবি না আদায় হওয়া পর্যন্ত প্রতি শুক্রবার রংপুর বিভাগের স্টেশনগুলোতে মানববন্ধন কর্মসূচির ঘোষণা দেওয়া হয়।

রেল আধুনিকায়ন ও ভাড়া কমানো আন্দোলনের সমন্বয়ক নাহিদ হাসান বলেন, গত ৪ মে থেকে সরকার দূরুত্বভিত্তিক রেয়াত বাতিল করেছে। একে তো আমরা ১২০ কিলোমিটার ঘুরে ৩ ঘণ্টা সময় নষ্ট করি। এর উপর রেয়াত তুলে নিয়ে রংপুর বিভাগবাসীর উপর ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ ভাড়া বৃদ্ধি করা হলো।

রংপুর বিভাগের মানুষ ঘুরেও যাবে, ভাড়াও বেশি দিবে। দেশের দরিদ্রতম বিভাগের সঙ্গে সরকারের বৈষম্যমূলক নীতিমালা ও অন্যায়ের প্রতিবাদ জানাচ্ছি। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমাদের এ আন্দোলন চলবে।