গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জের চুইং জাতের আখ চাষে লাভবান হচ্ছেন চাষীরা
চলতি গ্রীষ্ম মৌসুমের প্রচন্ড গরম ও দাবদাহে সারাদেশে কদর বেড়েছে গোবিন্দগঞ্জের চুইং (চিবিয়ে খাওয়া) জাতের আখের। বৈশাখের শুরু থেকেই প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আসা পাইকাররা ট্রাকসহ বিভিন্ন যানবাহনে নিয়ে যাচ্ছে এই রসালো নরম আখ। উপজেলার কমারদহ ইউনিয়নের কৃষকরা এ বছর অধিক জমিতে চাষ করেছেন চিউইং ভ্যারাইটি লাল জাতের এই আখ । এ বছর অনুকুল আবহাওয়ার কারণে আখের রোগ বালাই ও পোকা আক্রমণ কম। এ কারণে ফলনও হয়েছে বেশ ভালো। এর ওপর চলতি বছর প্রচন্ড গরম থাকায় বিশেষ জাতের এই আখের চহিদা বাড়ায় বাজার দর ভালো পেয়ে লাভবান হচ্ছেন চাষীরা।
বিগত বছরগুলোতে করোনার কারণে চাহিদা কমে যাওয়ায় বেশ ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছিলেন কৃষকরা। কিন্ত এ বছর প্রচন্ড গরম ও দাবদাহর কারণে চাহিদা বাড়ায় ক্ষতি পুষিয়ে ওঠার সম্ভাবনা দেখা দেয়ায় খুশি তারা। ইতোমধ্যে রাজধানী ঢাকা ছাড়াও বগুড়া, নওগাঁ, রাজশাহী, খুলনা, সাতক্ষীরা, নারায়নগঞ্জ, সিলেটসহ নানা জায়গা থেকে পাইকাররা আসতে শুরু করেছেন।
গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার কমারদহ ইউনিয়নের আখচাষীরা এবারও বকচর, চেরাগাড়ী, চাঁদপারা, ঘোড়ামারা, মাস্তা, বার্ণাআকুবসহ আশপাশের এলাকা জুড়ে বিশেষ লাল জাতের কিউ সিক্সটিন, বিএসআরআই-৪১ ও ৪২ জাতের আখ চাষ করেছেন। বিশেষ লাল রঙের এ আখ দেখতে যেমন সুন্দর, খেতেও তেমনি মিষ্টি, রসালো নরম এবং সুস্বাদু। তাই এ আখের শরবত বিক্রি হয়ে থাকে এবং ছোবা নরম হওয়ায় মানুষ চিবিয়ে খেয়ে থাকেন। দেশব্যাপী এ আখের চাহিদা বাড়াই আখ কিনতে আসা ব্যবসায়ী এবং পাইকারদের উপস্থিতিতে এখন সরগরম এই এলাকা।
বকচর গ্রামের চুইং জাতের আখ চাষী সুজা মিয়া বলেন, চৈত্র-বৈশাখ আখ বিক্রির ভরা মৌসুম। তাই বিভিন্ন স্থান থেকে ব্যবসায়ী এবং পাইকাররা আখ কিনতে আসছেন। তবে বর্উতমানে প্রয়োজনীয় উপকরণের দাম বাড়ায় আখ চাষের ব্যয় বেড়েছে। তবে এ বছর আখের ফলন ভালো ও বাজারে আখের চাহিদা থাকায় দাম ভালো আছে এজন্য আর্থিক ভাবে লাভবান হওয়ার আশা আছে। তিনি বলেন, বিগত দু’তিন বছর করোনার কারনে আখ বিক্রি করতে না পারায় এই এলাকার আখচাষীদের ক্ষেতেই শত শত বিঘা জমির আখ নষ্ট হয়ে চরম লোকসান গুনতে হয়েছে। এবার কিছুটা হলেও সে ক্ষতি পোষাতে পারেবেন কৃষক।
ব্যবসায়ী ও স্থানীয় আখের রস বিক্রেতা সোলায়মান আলী জানান, এ বছর গরম বেশি পড়ায় বাজারে আখের রস বিক্রি বেড়েছে। আর এ কারনে আখের চাহিদাও বেড়েছে। জমি থেকেই প্রতি পিছ আখ কিনতে হচ্ছে ৯ থেকে ১০ টাকায়। যা শত করা ৯শ” থেকে হাজার টাকা। আর এক গ্লাস সরবত বিক্রি হয় ১০ টাকায়। গরম থাকলে বেশ ভাল বিক্রি হয়।
গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সৈয়দ রেজা-ই-মাহমুদ বলেন, চাষীদের বিশেষ লাল জাতের চুইং ভ্যারাইটির এ আখ আবাদে কারিগরি ধারনা বৃদ্ধিতে প্রযুক্তিগত প্রশিক্ষণ ও পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। এই আখ এই উপজেলার একটি অর্থকরী ফসল হিসেবে প্রতিষ্ঠা পেয়েছে। এ জন্য নিয়মিত বিশেষ তদারকি করা হচ্ছে ।
আগামীতে আখের রসের জুস তৈরীতে ও প্রক্রিয়াজাত করণের জন্য সরকারি ও বেসরকারি ভাবে উদ্যোগ গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন এই এলাকার আখ চাষীরা।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন