গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে বাড়ির আঙ্গিনায় ও অকৃষি জমিতে বস্তায় আদা চাষ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে
গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে অকৃষি জমিতে আদা চাষ করে কৃষকেরা গত বছর ভালো দাম পাওয়ায় চলতি মৌসুমে মাঠ পর্যায়ে বস্তায় আদা চাষ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। প্রচলিত পদ্ধতির চেয়ে বস্তায় আদা চাষে রোগ বালাই ও পরিচর্যা ব্যয় কম হওয়ায় এ বছর আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার আশা করছেন কৃষকেরা। বাড়ির উঠান সহ আশেপাশে ফাঁকা জায়গা ও বিভিন্ন ফল বাগানে সহজেই আদা চাষ করা যায় বলে অচাষযোগ্য জমির সর্বোত্তম ব্যবহার বেড়েছে বলে মনে করছে স্থানীয় কৃষি বিভাগ।
উপজেলার ১৭টি ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় অল্প টাকায় কম শ্রমে স্বল্প ব্যয়ে সহজেই বাড়ির উঠানে, পরিত্যক্ত জায়গায়, ফলের বাগানে কিংবা বিভিন্ন গাছের নীচে ছায়াযুক্ত স্থানে সহজে আদা চাষ করা যায় বলে দিন দিন কৃষকদের মাঝে বস্তায় আদা চাষ পদ্ধতি সম্প্রসারিত হচ্ছে।
গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার কাটাবাড়ি ইউনিয়নের বোগদহ কলোনি গ্রামের কৃষক আবুল বাসার খান ১২’শ বস্তা আদা চাষ করেছেন। তিনি বসতবাড়ির উঠান সহ আশপাশের এলাকায় এবং মৌসুমি ফল বাগানে বস্তায় করে আদা চাষ করেছেন। এছাড়াও পৌরসভার খলসী গ্রামের শহিদুল ইসলাম ও খলিলুর রহমানসহ অনেকেই প্রথমবারের মত বস্তায় আদা চাষ করছেন।
কোচাশহর ইউনিয়নের বৈরাগী বাজারের কৃষক চঞ্চল মিয়া ১৭ বস্তা আদা চাষ করেছেন। কৃষক চঞ্চল মিয়া বলেন, পরিমানমত মাটির সাথে অন্যান্য কৃষি উপকরণ মিশিয়ে বস্তায় আদা রোপন করি। প্রাকৃতিক দুর্যোগের ঝুঁকি, রোগবালাই ও পরিচর্যা ব্যয় অনেক কম। আর খুব সহজেই এ পদ্ধতিতে আদা চাষ করা যায়। এছাড়াও পরিচর্চার ক্ষেত্রে বেশ সহজ হয় বলে এই পদ্ধতির আদা চাষ করে বেশ লাভবান হবো বলে আশা করছি।
কৃষক আবুল বাসার খান বলেন, পরিত্যক্ত জমিতে বস্তা পদ্ধতিতে ১২শ বস্তা আদা চাষ করেছি। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় আদার গাছগুলো সুস্থ ও সবল আছে। রোগা বালাই নেই বললেই চলে। ভালো বাজার দর পাবো বলে আশা করছি।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সুত্রে জানা গেছে, এ বছর গোবিন্দগঞ্জ উপজেলায় ২৪৫ জন কৃষক ৩৪৫০ বস্তা আদা চাষ করেছে।
গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার কাটাবাড়ি ইউনিয়নের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা শ্যামল চন্দ্র বর্মন জানান, বস্তা পদ্ধতিতে আদা চাষে খরচ কম, লাভ বেশী। সে কারনে এ পদ্ধতিতে আদা চাষ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। এ বছর কাটাবাড়ি ইউনিয়নে ৩০ জন কৃষক বস্তা পদ্ধতিতে আদা চাষ করেছেন, যা গত বছরের চেয়ে দ্বিগুন।
গোবিন্দগঞ্জ পৌরসভা ব্লকের উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা বিলাস কুমার ভট্টাচার্য জানান, যেখানে সেখানে বস্তায় আদা চাষ আবাদে অচাষযোগ্য জমির সর্বোত্তম ব্যবহার বাড়ছে। আগামীতে এই পদ্ধতিতে আদা চাষ যাতে আরও বাড়ানো যায়, সেজন্য মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের বিভিন্ন পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।
গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মেহেদী হাসান বলেন, যারা বস্তায় আদা চাষ করছেন তাদের মাঝে প্রযুক্তিগত ও কারিগরি সহযোগিতার পাশাপাশি সব ধরণের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। ফলে আদার ফলন বৃদ্ধি ও দাম ভালো পাওয়ায় লাভবান হচ্ছেন কৃষকরা।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন